বিশ্ব

বিরল খনিজে চীনের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ

খবর৭১ ডেস্ক, নভেম্বর ২৭, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত

প্রাকৃতিক খনিজ খনন থেকে শুরু করে প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্ভাবন পর্যন্ত বিরল খনিজ শিল্পে চীনের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধে দেশটিকে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা এনে দিয়েছে।

খনিজের ওপর চীনের এই একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ কয়েক দশক ধরে বেইজিংয়ের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার ফসল। 

বেইজিং থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

আগামী বছরগুলোতে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বিরল খনিজের ১৭টি উপাদান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। 

তবে বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন যে পশ্চিমা দেশগুলোর বিকল্প সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে আরও কয়েক বছর সময় লাগবে।

এই বিরল খনিজগুলো প্রতিরক্ষা খাতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো যুদ্ধ বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র নির্দেশনা ব্যবস্থা ও রাডার প্রযুক্তিতে ব্যবহার করা হয়। 

এছাড়াও স্মার্টফোন, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও অটোমোবাইলসহ দৈনন্দিন বিভিন্ন পণ্যে এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে।

এএফপি চলতি মাসেই চীনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় গনঝাও খনি অঞ্চল পরিদর্শন করেছে। এই অঞ্চলে ইট্রিয়াম ও টার্বিয়ামের মতো ‘ভারী’ বিরল খনিজ উত্তোলন করা হয়। ওই সময় সেখানে ব্যাপক খনন কার্যক্রম দেখা গেছে।

চীনে এ গোপন শিল্পে গণমাধ্যমের প্রবেশাধিকার খুব কমই দেওয়া হয়। 
এএফপি সাংবাদিকরা একটি বিরল খনিজ খনি থেকে ডজনখানেক ট্রাক আসা-যাওয়া করতে দেখেছেন। পাশাপাশি কয়েকটি ব্যস্ত প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রও চোখে পড়ে।

চীনের দু’টি বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিরল খনিজ কোম্পানির একটি হলো ‘চায়না রেয়ার আর্থ গ্রুপ’। গনঝাওতে তাদের জন্য বিশাল নতুন সদর দফতর নির্মাণ করা হচ্ছে।

বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও প্রযুক্তিগত পণ্যে এ সব খনিজের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

ইএসএসইসি বিজনেস স্কুলের অর্থনীতি প্রভাষক হেরন লিম এএফপিকে জানান, এ বছরের চ্যালেঞ্জগুলো ‘বেশ কয়েকটি দেশকে বিরল খনিজ উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণ বাড়ানোর দিকে নজর দিতে উৎসাহিত করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই বিনিয়োগ দীর্ঘমেয়াদী সুফল দিতে পারে।’

অক্টোবরের শুরুতে চীন এই খাতে ব্যাপক রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে, তা বিশ্বব্যাপী উৎপাদন খাতে বড় ধরনের ধাক্কা দেয়।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু করার পর থেকে বেইজিংয়ের সঙ্গে নতুন করে বাণিজ্য যুদ্ধে জড়িয়েছে, তার ওপর এই বিধিনিষেধ ওয়াশিংটনে চরম উদ্বেগ সৃষ্টি করে।

গত মাসের শেষের দিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত এক উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকে, ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং চলমান শুল্ক যুদ্ধ এক বছরের জন্য স্থগিত করতে সম্মত হয়েছেন।

“এই চুক্তি—যা অন্তত সাময়িকভাবে বিরল মৃত্তিকা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজের সরবরাহ নিশ্চিত করে, তবে এর পাশাপাশি কার্যত এটি যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞাগুলোকেও নিষ্ক্রিয় করেছে এবং একে ব্যাপকভাবে বেইজিংয়ের জন্য এক ধরনের সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে।

চুক্তি অনুযায়ী বিরল খনিজ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজের সরবরাহ অন্তত সাময়িকভাবে নিশ্চিয়তা থাকবে। 

এতে যুক্তরাষ্ট্র শুল্কযুদ্ধে কিছুটা পিছিয়ে পড়লেও, ব্যাপকভাবে এটিকে বেইজিংয়ের জয় হিসেবে দেখা হয়।

হেরন লিম এএফপিকে বলেন, ‘এই সাময়িক চুক্তি সত্ত্বেও, বিরল খনিজগুলো ভবিষ্যতে চীন-মার্কিন অর্থনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রকে আলোচনার টেবিলে ধরে রাখতে চীন আরও বাণিজ্যিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে।’

ওয়াশিংটন ও তার মিত্ররা এখন বিকল্প খনি এবং প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে দ্রুত কাজ করছে।

কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে বহু বছর সময় লাগবে।

স্নায়ুযুদ্ধের সময় বিরল খনিজ উত্তোলন ও প্রক্রিয়াকরণের যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে ছিল। ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্টেন পাস খনি তখন বৈশ্বিক সরবরাহের বড় অংশের উৎস ছিল।

মস্কোর সঙ্গে উত্তেজনা কমার পর এবং বিরল খনিজ শিল্পের পরিবেশগত ক্ষতি সামনে আসায়, যুক্তরাষ্ট্র ১৯৮০ ও ১৯৯০-এর দশকে পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি বিদেশের সস্তা শ্রম ও  অন্যান্য প্রণোদনার সুবিধার বিষয়টিকে বিবেচনায় নিয়ে ধীরে ধীরে বিদেশ থেকে খনিজ আমদানি করা শুরু করে।

বর্তমানে, চীন বিশ্বের মোট বিরল খনিজ খননের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ নিয়ন্ত্রণ করে।

ভূতাত্ত্বিক জরিপ অনুসারে, বিশ্বে এই মৌলগুলোর বৃহত্তম প্রাকৃতিক মজুত রয়েছে চীনে।

এ বছরের বিশ্লেষণ দেখায় যে বিশ্বব্যাপী মোট প্রক্রিয়াকরণের প্রায় ৯০ শতাংশই চীনের দখলে রয়েছে।

এছাড়াও, পেটেন্টে শক্ত অবস্থান আর প্রক্রিয়াকরণ প্রযুক্তির রপ্তানিতে কঠোর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে চীন নিশ্চিত করছে, এ জ্ঞান যেন দেশের বাইরে না যায়।

বিএমআই-এর পণ্য বিশ্লেষক অ্যামেলিয়া হেইন্স এই মাসে এক সেমিনারে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিরল খনিজ আমদানির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল, যা গুরুত্বপূর্ণ শিল্পগুলোর জন্য একটি বড় ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।’

চীনকে বাদ দিয়ে উত্তোলন ও প্রক্রিয়াকরণের বিকল্প ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ওয়াশিংটন তার মিত্রদের সঙ্গে কাজ করছে।

গত মাসে ট্রাম্প অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের সঙ্গে বিরল খনিজ খাতে ৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্পে চুক্তি করেছেন। কারণ অস্ট্রেলিয়াতেও বিশাল ভূখণ্ডজুড়ে ব্যাপক বিরল খনিজ সম্পদ রয়েছে।

এছাড়া, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জাপান, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের সঙ্গেও গত মাসে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ খাত সংক্রান্ত সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করেন।

এ বছর প্রচুর আলোচনা এবং শিরোনাম তৈরি হলেও, ওয়াশিংটন বহু বছর ধরেই বিরল খনিজ সমস্যার কথা জানে।

২০১০ সালে, টোকিওর সঙ্গে একটি সামুদ্রিক সীমান্ত বিরোধের জেরে বেইজিং জাপানে খনিজ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। এ ঘটনার মাধ্যমেই বিরল খনিজ খাতে চীনের নিয়ন্ত্রণের ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

ঘটনাটি তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসনকে কৌশলগত খাতে যুক্তরাষ্ট্রের সক্ষমতা বাড়ানোর প্রতি আগ্রহী করে তোলে।

তবে, ১৫ বছর পরও চীনই বিরল খনিজ খাতে প্রধান শক্তি হিসেবে রয়ে গেছে।

Popular post
হাইকোর্টের রুল জারি, কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতি কেন অবৈধ নয়

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে। 

কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতি বিতর্ক : উদ্বেগে দুই শতাধিক কর্মকর্তা

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।   

কৃষি ব্যাংকের ‘ভুয়া সিবিএ সভা’ ঘিরে চাঞ্চল্য

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে।  অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

হালিম হত্যার আসামিরা পলাতক, ধামাচাপা দিচ্ছে প্রশাসন

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।  কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

কৃষি ব্যাংকে ভুয়া সিবিএ নেতাদের কোটি টাকারও বেশি চাঁদাবাজি

অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।  

অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের নিচে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার নিষিদ্ধ

আইন অনুযায়ী টিকটক, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব, স্ন্যাপচ্যাট, রেডিট, থ্রেডস, এক্স, কিক, ও টুইচ—কোনো প্ল্যাটফর্মই নাবালক অস্ট্রেলিয়ান ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট বা সক্রিয় রাখতে পারবে না। বয়স যাচাইয়ে ব্যবহৃত হবে মুখ শনাক্তকরণ প্রযুক্তি ও সরকারি পরিচয়পত্র। অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্য সামাজিকমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে। স্থানীয় সময় বুধবার এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের মাধ্যমে বিশ্ব প্রথমবারের মতো এমন আইন দেখলো। নতুন আইনে টিকটক, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবসহ ১০টি বড় প্ল্যাটফর্মকে অস্ট্রেলিয়ান নাবালক ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলতে হবে। তা না মানলে ৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার পর্যন্ত জরিমানা গুনতে হবে। খবর রয়টার্স। কঠোর এ পদক্ষেপকে প্রযুক্তি কোম্পানি ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো সমালোচনা করলেও বহু অভিভাবক ও শিশু অধিকারকর্মী সমর্থন জানিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়া সরকার বলছে—বুলিং, অনলাইন প্রতারণা, যৌন ও সহিংস কনটেন্ট ঠেকাতে এ ‘অভূতপূর্ব’ ব্যবস্থা প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেন, সামাজিকমাধ্যম অনেক সময় সমাজবিরোধী হয়ে ওঠে—যেখানে হয়রানি, প্রতারণা ও মানসিক চাপ বাড়ে। আইন অনুযায়ী টিকটক, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব, স্ন্যাপচ্যাট, রেডিট, থ্রেডস, এক্স, কিক, ও টুইচ—কোনো প্ল্যাটফর্মই নাবালক অস্ট্রেলিয়ান ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট বা সক্রিয় রাখতে পারবে না। বয়স যাচাইয়ে ব্যবহৃত হবে মুখ শনাক্তকরণ প্রযুক্তি ও সরকারি পরিচয়পত্র। রোবলক্স, পিন্টারেস্ট ও হোয়াটসঅ্যাপ আপাতত নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকলেও সরকার জানিয়েছে, এসব অ্যাপও পর্যালোচনার মধ্যে রয়েছে। ইউটিউব আইনটিকে ‘তড়িঘড়ি করে নেয়া সিদ্ধান্ত’ বলে সমালোচনা করে দাবি করেছে, এতে শিশুদের আরো অনিরাপদ কোণে ঠেলে দেয়া হতে পারে। এদিকে, ডিজিটাল অধিকার সংগঠনগুলোও আদালতে আইনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সরকার স্বীকার করেছে, শুরুতে নিষেধাজ্ঞা সম্পূর্ণ ফলপ্রসূ নাও হতে পারে, কারণ চতুর কিশোররা নিয়ম এড়ানোর পথ খুঁজে পেতে পারে। তবে বিশ্বজুড়ে আইনপ্রণেতারা আগ্রহ নিয়ে দেখছেন, অস্ট্রেলিয়ার এই কঠোর মডেল আদৌ কার্যকর হয় কিনা। মালয়েশিয়া, ডেনমার্কসহ কয়েকটি দেশ এরইমধ্যে অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণের ইঙ্গিত দিয়েছে।

জান্নাতুল ফেরদৌস জেমি ডিসেম্বর ১০, ২০২৫ 0

ভারতে পর্যটক গমনে টানা পাঁচ বছর দ্বিতীয় বাংলাদেশ

হাইতির অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে কেনিয়া আরও পুলিশ মোতায়েন করলো

পাল্টা হামলায় নেমেছে কম্বোডিয়া : দাবি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর

তথ্য ফাঁসের অভিযোগে ই-কমার্স কুপাংয়ে দক্ষিণ কোরিয়া পুলিশের তল্লাশি

দক্ষিণ কোরিয়ার পুলিশ আজ মঙ্গলবার ই-কমার্স জায়ান্ট কুপাং-এর সদর দফতরে তল্লাশি চালিয়েছে বলে জানা গেছে। সাম্প্রতিক একটি তথ্য ফাঁসকে কেন্দ্র করে এ তল্লাশি চালানো হয়। এতে ৩ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র। পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ‘কুপাং-এর সদর দফতরে তল্লাশি ও জব্দ অভিযান চালাচ্ছে’ এবং ‘ঘটনাটি সঠিকভাবে বোঝার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৯, ২০২৫ 0

এক সপ্তাহের জন্য জাপানে ‘শক্তিশালী ভূমিকম্পের’ সতর্কতা

সৌদিতে অভিযান। পুরোনো ছবি

এক সপ্তাহে ১১ হাজারের বেশি প্রবাসীকে ফেরত পাঠাল সৌদি

হংকংয়ে ভোটগ্রহণ শুরু

গ্রিস উপকূলে অভিবাসী নৌকাডুবি, নিহত ১৮

গ্রিস উপকূলে একটি অভিবাসীবাহী নৌকা ডুবে গেছে। এ ঘটনায় অন্তত ১৮ অভিবাসী নিহত হয়েছেন। রোববার (০৭ ডিসেম্বর) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গ্রিসের দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ ক্রিসির কাছে একটি অভিবাসী নৌকা ডুবে গেছে। শনিবার দেশটির কোস্টগার্ড জানায়, সমুদ্রপথে যাত্রার সময় নৌকাটি দ্বীপ থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার (২৬ মাইল) দক্ষিণে উল্টে যায়। এ ঘটনায় দুজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। রয়টার্স জানিয়েছে, নৌকাটি প্রথম দেখতে পায় একটি তুর্কি কার্গো জাহাজ। এরপর তারা তাৎক্ষণিকভাবে গ্রিক কর্তৃপক্ষকে খবর দেয়। পরে উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে জীবিত দুজনকে উদ্ধার করেন। তাদের ক্রিট দ্বীপে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে কোস্টগার্ড জানিয়েছে। ২০১৫-১৬ সালে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা থেকে ইউরোপে যাওয়ার পথে গ্রিস ছিল অভিবাসী সংকটের সামনে থাকা প্রধান দেশ। তখন এক মিলিয়নেরও বেশি মানুষ গ্রিস হয়ে ইউরোপে পৌঁছেছিল। এরপর কিছুটা কমে এলেও গত এক বছরে আবারও লিবিয়া থেকে ছোট নৌকায় অভিবাসীদের আসার ঘটনা বেড়েছে। বিশেষত ক্রিট, গাভদোস ও ক্রিসি— আফ্রিকার উপকূলের কাছাকাছি থাকা এই দ্বীপগুলোর উদ্দেশে নৌকা যাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ছে।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৭, ২০২৫ 0

লেবাননে জাতিসংঘ টহলদলের ওপর হামলার ঘটনায় ছয়জন গ্রেপ্তার

৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল আলাস্কা

ভারতের গোয়ায় নাইটক্লাবে অগ্নিকাণ্ডে ২৩ জনের মৃত্যু

0 Comments