প্রবাসী

ভারতীয় পুলিশের অভিযান। পুরোনো ছবি
ভারতে বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ, ব্যাপক ধরপাকড়

ভারতের উত্তর প্রদেশে অবৈধ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নতুন অভিযান চালুর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এ নির্দেশের পর রাজ্যে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে একটি সমন্বিত কাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সরকার। পশ্চিমবঙ্গের এসআইআর অভিযান শুরুর পর অনেক অনুপ্রবেশকারী অন্যান্য রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ায় তাদের শনাক্তকরণে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শনিবার (০৬ ডিসেম্বর) দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সরকার জানায়, এটি কোনো আবেগপ্রবণ বা তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নয়; বরং নিরাপত্তা জোরদার ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে এটি একটি পরিকল্পিত উদ্যোগ। সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন, জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে কোনো আপস নয় এবং অবৈধ অনুপ্রবেশ কোনো অবস্থাতেই সহ্য করা হবে না। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান যাচাই অভিযানে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের একটি সুসংগঠিত নেটওয়ার্ক উদ্ঘাটিত হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা সন্দেহভাজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। উত্তর প্রদেশ এটিএসের অভিযানেও বহু রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীর গ্রেপ্তার হয়েছে, যা দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় এই নেটওয়ার্কের গভীরতা তুলে ধরছে। সরকার জানিয়েছে, প্রতিটি বিভাগে ডিটেনশন সেন্টার স্থাপন করা হবে এবং আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আটককৃতদের সেখানে রাখা হবে। নির্বাসন প্রক্রিয়া পরিচালনায় এফআরআরওর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ চলছে, আর জেলাশাসকদের প্রতিদিনের অগ্রগতি হোম ডিপার্টমেন্টে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগে এই ধরনের নজরদারি, গ্রেপ্তার ও নির্বাসন কার্যক্রম বিভিন্ন দপ্তরে বিচ্ছিন্নভাবে পরিচালিত হওয়ায় তা অকার্যকর ছিল বলে জানিয়েছে সরকার। নতুন ব্যবস্থা এসব পদক্ষেপকে একীভূত করে আরও কার্যকর করেছে।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৬, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
সৌদিতে ব্যাপক ধরপাকড়, গ্রেপ্তার ২১ হাজারের বেশি প্রবাসী

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ২২ হাজার ৭১ জনকে নিজ দেশের কূটনৈতিক মিশনে ভ্রমণ নথি সংগ্রহের জন্য পাঠানো হয়েছে। আর ৫ হাজার ৭৮ জনকে ভ্রমণ ব্যবস্থাপনার আওতায় রাখা হয়েছে। গত সপ্তাহে ১১ হাজার ৬৭৪ জন প্রবাসীকে সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।   গালফ নিউজ জানায়, সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করার সময় ১ হাজার ৬৬৭ জনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে ৫৭% ইথিওপিয়ান, ৪২% ইয়েমেনি এবং বাকিরা অন্যান্য দেশের নাগরিক। একই সঙ্গে সৌদি আরব থেকে অবৈধভাবে বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে ৩১ জন ধরা পড়ে। অভিযানে অনিয়মকারীদের আশ্রয়, পরিবহন বা কর্মসংস্থান দিয়ে সহযোগিতা করার অভিযোগে আরও ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে দেশটিতে মোট ৩১ হাজার ৯১ জন বিদেশির বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলছে—যাদের মধ্যে ২৯ হাজার ৫৩৮ জন পুরুষ এবং ১ হাজার ৫৫৩ জন নারী। সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আইন লঙ্ঘনকারীদের সহায়তা করলে সর্বোচ্চ ১৫ বছর কারাদণ্ড, ১০ লাখ রিয়াল পর্যন্ত জরিমানা, এবং ব্যবহৃত যানবাহন বা সম্পত্তি জব্দ করা হবে।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০১, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
সিঙ্গাপুরে মাদকবিরোধী অভিযানে আটক ১১ বাংলাদেশি শ্রমিক

সিঙ্গাপুরের উডল্যান্ডস এলাকায় পরিচালিত বিশেষ অভিযানে মাদক–সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ১২ জন বিদেশি শ্রমিককে আটক করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ১১ জন বাংলাদেশি এবং একজন মিয়ানমারের নাগরিক।   বৃহস্পতিবার রাতে সেন্ট্রাল নারকোটিকস ব্যুরো (সিএনবি) নেতৃত্বে চার ঘণ্টাব্যাপী অভিযান পরিচালিত হয়। গ্রেফতারদের বয়স ২৩ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। সিএনবির তথ্য অনুযায়ী, ৩৪ বছর বয়সী এক বাংলাদেশির বিরুদ্ধে মাদক পাচার ও সেবনের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযানে সিএনবির পাশাপাশি হেলথ সায়েন্সেস অথরিটি, ইমিগ্রেশন অ্যান্ড চেকপয়েন্টস অথরিটি, জনশক্তি মন্ত্রণালয় এবং পুলিশের সদস্যরা অংশ নেন। রাত ৯টায় ব্রিফিংয়ের পর বৃষ্টি উপেক্ষা করে কর্মকর্তারা চিহ্নবিহীন গাড়িতে করে উডল্যান্ডসের ডরমিটরির দিকে রওনা হন এবং রাত ১২টার আগেই অভিযান শুরু করেন। একটি কক্ষে চারজন শ্রমিককে হাত বাঁধা অবস্থায় বসে থাকতে দেখা যায়। কর্মকর্তারা তাদের ব্যাগ ও ব্যক্তিগত জিনিসপত্র তল্লাশি করেন। আরেক শ্রমিককে হাতকড়া পরিয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ও তার আলমারি খতিয়ে দেখা হয়। তাদের ব্যক্তিগত মূল্যবান সামগ্রী স্বচ্ছ ব্যাগে ভরে জব্দ করা হয়। অন্য একটি কক্ষ থেকে আরও একজনকে আটক করা হয়। সেখানে কাঁচের বোতল, কাটা স্ট্র ও রাবারের টিউবসহ মাদক সেবনের বিভিন্ন সরঞ্জাম পাওয়া যায়, যা প্রমাণ হিসেবে সিল করে রাখা হয়। সিএনবির ডেপুটি কমান্ডিং অফিসার সুপারিনটেনডেন্ট জ্যান্থাস টং হিয়েং জি বলেন, মাদক সেবন, পাচার ও সংশ্লিষ্ট অপরাধ দমনে এটি নিয়মিত তৎপরতার অংশ। তিনি জানান, সমাজ, কর্মস্থল কিংবা আবাস সিঙ্গাপুরের কোথাও মাদকের কোনো স্থান নেই।   সিএনবির হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দেশটিতে ৩ হাজার ১১৯ জন মাদকসেবী গ্রেফতার হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় সামান্য কম। তবে নতুন মাদকসেবীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৬৬ জনে। আটক ব্যক্তিদের জাতীয়তা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

খবর৭১ ডেস্ক, নভেম্বর ৩০, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
সৌদিসহ ৭ দেশে আজ থেকে পুনরায় চালু হচ্ছে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন

প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য প্রথমবারের মতো চালু হওয়া ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপে ঠিকানা সংক্রান্ত ভুল ও অসম্পূর্ণ তথ্যের কারণে যেসব দেশে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল সেসব দেশে আবারও নিবন্ধন কার্যক্রম চালু করা হচ্ছে। আজ শনিবার (২৯ নভেম্বর) ভোর ৬টা থেকে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমান, বাহরাইন, কুয়েত ও মালয়েশিয়ায় পুনরায় নিবন্ধন শুরু হবে।   জানানো হয়েছে, ডাকযোগে পোস্টাল ব্যালট পেতে হলে আবেদনকারীদের অবশ্যই সম্পূর্ণ ও সঠিক ইংরেজি ঠিকানা এবং পূর্ণ পোস্ট কোড প্রদান করতে হবে। প্রয়োজনে বন্ধু, আত্মীয় বা নিকটস্থ পরিচিত কোনো প্রতিষ্ঠানের ঠিকানাও ব্যবহার করা যেতে পারে। ভুল ঠিকানা ইনপুটের কারণে বহু নিবন্ধিত আবেদনকারীর ব্যালট পেপার পাঠানো সম্ভব হচ্ছিল না, তাই সাময়িকভাবে নিবন্ধন বন্ধ রাখা হয়েছিল। আগে যারা নিবন্ধন করেছেন, তাদের জন্যও ঠিকানা সংশোধনের সুযোগ অ্যাপের মধ্যেই যুক্ত করা হচ্ছে। প্রবাসীরা যাতে ছুটির দিনে নির্বিঘ্নে নিবন্ধন করতে পারেন, সে বিষয়টি বিবেচনায় রেখে আজ ভোর থেকেই অ্যাপ পুনরায় চালু করা হবে। আগামী ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধন সময়সীমা খোলা থাকবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যেন একজন প্রবাসী ভোটারও বাদ না পড়ে সেই লক্ষ্যেই কাজ চলছে। নিবন্ধন সম্পন্ন হলে ব্যালট পেপার প্রিন্টিং এবং ডাকযোগে প্রেরণের প্রস্তুতি নেওয়া হবে। এদিকে অ্যাপ চালুর পর থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত মোট ৭৭ হাজার ৯৭৪ জন প্রবাসী নিজেদের নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। ঠিকানা–জনিত সমস্যার কারণে সাময়িকভাবে বন্ধ থাকা বাহরাইন, কুয়েত, মালয়েশিয়া, ওমান, কাতার, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে এখন পুনরায় নিবন্ধন করা যাবে।   ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে এবারই প্রথম বিদেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন যা দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

খবর৭১ ডেস্ক, নভেম্বর ২৯, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
রাত ১২টা থেকে ১৬ দেশে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন শুরু

যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াসহ ১৬টি দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সোমবার (২৪ নভেম্বর) রাত ১২টা থেকে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। পোস্টাল ভোট বিডি (Postal Vote BD) অ্যাপের মাধ্যমে এ নিবন্ধন করা যাবে। আগামী ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধন কার্যক্রম চলবে।   নিবন্ধন শুরু হওয়া দেশগুলো হলো– যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, মেক্সিকো, কিউবা, জ্যামাইকা, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, পানামা, হন্ডুরাস, হাইতি, নিকারাগুয়া, গুয়াতেমালা, ডমিনিকান রিপাবলিক, কোস্টারিকা ও বাহামা দ্বীপপুঞ্জ। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকা অঞ্চলে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রমও আগামী ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত চলমান থাকবে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন প্রথমবারের মতো এবার প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের পোস্টাল ব্যালটে ভোটদানের ব্যবস্থা করেছে। পোস্টাল ভোট অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন চলাকালে ২৪ ঘণ্টা সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন হেল্প ডেস্ক চালু করেছে।   হেল্প ডেস্কের হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমু নম্বর : +8801335149920, +8801335149923-32, +8801777770562; বোটিম নম্বর : +8801335149927, +8801335149929-30, +8801777770562।

খবর৭১ ডেস্ক, নভেম্বর ২৪, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
নভেম্বরের ১৮ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১,৯০৪ মিলিয়ন ডলার

নভেম্বর মাসের প্রথম ১৮ দিনে বিদেশ থেকে প্রেরিত অর্থ বা রেমিট্যান্স এসেছে মোট ১,৯০৪ মিলিয়ন ডলার। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ও বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক হিসেবে দেখা হচ্ছে।   বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের এই সময় পর্যন্ত রেমিট্যান্স আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা এই বৃদ্ধি অর্জনে প্রধান ভূমিকা রেখেছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রবাসী কর্মীদের পাঠানো অর্থ দেশের ঋণ, ব্যবসা ও ভোগ্যপণ্য খাতে সরাসরি প্রভাব ফেলে। অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ও ঘাটতি কমাতে এই রেমিট্যান্স বড় অবদান রাখে। সরকারি কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেছেন, বছরের শেষ পর্যন্ত রেমিট্যান্স আগের বছরের তুলনায় আরও ভালো পারফরম্যান্স দেখাবে, যা দেশের মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও বৈদেশিক মুদ্রার সংরক্ষণে সহায়ক হবে।   এই প্রবণতা দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ইতিবাচক সংকেত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

খবর৭১ ডেস্ক, নভেম্বর ২০, ২০২৫ 0
দেশের বাইরে পড়ার জীবনটা যেমন

দেশের বাইরে মানুষকে পড়তে আসা উচিত কি না—এ নিয়ে ধর্মীয়, সামাজিক, ব্যক্তিগত নানা মত আছে। তবে আমার বিশ্বাস, সুযোগ থাকলে জীবনে একবার হলেও দেশের বাইরে পড়াশোনা করা উচিত। বিদেশে পড়লে একজন মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলায়, সে নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করে। চাইলে বিদেশে চাকরি করতে পারে, আবার চাইলে দেশে ফিরে অবদান রাখতে পারে—সেটলড হওয়াই একমাত্র লক্ষ্য নয়। কিন্তু যেটাই করুক, সে যে অভিজ্ঞতা বয়ে নিয়ে যায় সেটা অমূল্য হয়ে থাকে। তার দুনিয়াকে দেখার চোখ অন্যদের থেকে আলাদা হবে।    অনেকেই দেশে হোস্টেলে থেকেছেন, বাবা–মা থেকে দূরে থেকেছেন। কিন্তু বিদেশে এসে যে ধাক্কাটা লাগে, সেটা আলাদা। এখানে সবই একা সামলাতে হয়। অসুস্থ হলে মাথায় নিজেই পানি দিতে হয়। হাজারো চ্যালেঞ্জ, হাজারো স্ট্রাগল—সব একা নিজের কাঁধে বয়ে বেড়াতে হয়।   দেশে একা থাকা আর বিদেশে একা থাকার তফাৎ এখানেই। দেশে জুতা ছিঁড়লে মুচি আছে, বিদ্যুৎ গেলে মেকানিক আছে, গাড়ি নষ্ট হলে সাহায্য মিলবে, রান্নার জন্য বুয়া পাওয়া যাবে। কিন্তু বিদেশে জুতা সেলাই করতে যে টাকা লাগে, তা দিয়ে নতুন দুই জোড়া কিনে ফেলা যায়। শেফ রাখতে চাইলে তার বেতনই আপনার বেতনের চেয়ে বেশি হতে পারে। তাও দেশি স্বাদের রান্না নাও আসতে পারে।   এখানে এসে আমি নিজের সাইকেলের চাকা নিজেই ঠিক করেছি ইউটিউব দেখে, জুতা নিজে সেলাই করেছি, গাড়ি নষ্ট হলে নিজে শিখে ঠিক করেছি। রান্না শিখেছি—কারণ বছরের পর বছর নিজের হাতের রান্নাই খেতে হয়। এসব তো কেবল কয়েকটা উদাহরণ; সব বলতে গেলে বই হয়ে যাবে।   কঠিন পড়াশোনা আর গবেষণার পাশাপাশি বেঁচে থাকার প্রয়োজনে আরও শত স্কিল শিখতে হয়। চ্যালেঞ্জ যতই থাকুক, মানুষ প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকতে শিখে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব সহজ হয়ে আসে। আর এসব সংগ্রাম—এসবই মানুষকে শক্তিশালী, সক্ষম ও পরিণত করে তোলে। তাই প্রবাসজীবনে সমস্যা যেমন আছে, তেমনি আছে অসংখ্য সুযোগ ও ইতিবাচক দিক।   দেশে আমার পরিচিত অসংখ্য বন্ধু–পরিচিত ‘বেকার’। রূপক অর্থে বেকার। অর্থাৎ চাকরি থাকলেও তারা কাজকে অর্থবহ মনে করে না, নিজের কর্মজীবন নিয়ে গর্বিত হতে পারে না। বড় চাকরি, ছোট চাকরি, ব্যবসা—সব ক্ষেত্রেই বেশিরভাগ মানুষ সন্তুষ্ট না নিজের কাজ নিয়ে, না নিজের জীবনের মান নিয়ে।   কিন্তু বিদেশে এই বিষয়টা তুলনামূলক কম। এখানে নিজের পছন্দের কাজ খুঁজে পাওয়ার সুযোগ অসীম—যদি আপনি সেই কাজের স্কিল শিখে নিতে পারেন। ক্যারিয়ারের মাঝপথে হঠাৎ মনে হলে যে আপনি অন্য কিছু করতে চান—এখানে সেটা ভাবার সাহস মানুষ দেখাতে পারে। নিজের জীবন নতুনভাবে গড়া এখানে সম্ভব।   এখানে আপনাকে আপনার কাজ দিয়েই বিচার করা হবে। ব্যক্তিজীবন নিয়ে খুব কমই মানুষ মাথা ঘামায়। রেসিজম আছে ঠিকই—কিন্তু ক্ষমতার অপব্যবহার, কাউকে ‘কেনা গোলাম’ ভাবার প্রবণতা এখানে বিরল। আপনি নিজের কাজ ঠিকঠাক করলে কারো কাছে তোষামোদ করতে হবে না। নিজের আত্মসম্মান বিক্রি করতে হবে না। এই পরিবেশ জীবনকে কম টক্সিক করে তোলে।   বাংলাদেশে তো পাসপোর্ট অফিসের পিয়নকেও ‘স্যার’ বলতে হয় ফাইলটা একটু ভেতরে ঢোকানোর জন্য—যা আমরা শ্রদ্ধা থেকে বলি না, বাধ্য হয়ে বলি।   দেশে–বিদেশে কোথাও প্রতিদিন অসাধারণ লাগবে না। কিন্তু প্রতিদিন অন্তত মনে হওয়া উচিত—আপনি কোনো অর্থবহ কাজে যুক্ত আছেন। যদি সেটা না হয়, তাহলে নিজের কাজ, নিজের স্থান, নিজের পরিবেশ—সবই নতুন করে ভাবার সময় এসেছে।   আপনি যদি নিজের কাজ নিয়ে, নিজের জায়গা নিয়ে, নিজের অবদান নিয়ে গর্ব করতে পারেন—তাহলে দেশে পরিবার–পরিজন নিয়ে জীবন কাটানোই শ্রেয়। আর সময়–সুযোগ পেলে একবার বিদেশে অভিজ্ঞতা নেওয়া যেতে পারে—জব করে, মাস্টার্স বা পিএইচডি করে, কিংবা কিছুদিন ভ্রমণ করে। তবে দয়া করে—ব্যাচেলর/অনার্স লেভেলের পড়াশোনায় সন্তানকে বিদেশে পাঠাবেন না। আর ব্যাংক লোন নিয়ে বিদেশ ভ্রমণ করতে যাবেন না—এটা বাড়াবাড়ি।   লেখক : সাকলাইন মোস্তাক, পিএইচডি শিক্ষার্থী, যুক্তরাষ্ট্র

খবর৭১ ডেস্ক, নভেম্বর ১৯, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
১৮ বছর ‘‌নিখোঁজ’ থাকার পর মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরে দেখেন বাবা-মা নেই, স্ত্রী অন্যের সংসারে

মালয়েশিয়ায় অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে আটক হয়ে বছরের পর বছর জেলের দুর্বিষহ জীবনে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন জাহাঙ্গীর। হারিয়েছেন বাকশক্তিও। শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন, আবার কখনো অঝোরে কেঁদে ফেলেন। ভাগ্য বদলের আশায় দালালের মাধ্যমে মালয়েশিয়া গিয়েছিলেন নরসিংদীর চরদিঘলদী ইউনিয়নের জিতরামপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম। সেখানে গিয়ে প্রথমদিকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলেও একসময় তা বন্ধ হয়ে যায়। পরিবারের সদস্যরা ধরে নেন, হয়তো মারাই গেছেন জাহাঙ্গীর। এভাবে কেটে গেছে দীর্ঘ দেড় যুগ। অবশেষে গত ৭ নভেম্বর দেশে ফিরেছেন তিনি। তবে এতোদিনে বাবা-মা আর নেই, স্ত্রীও এখন অন্যের সংসারে।   জানা গেছে, ৬৬ বছর বয়সী জাহাঙ্গীর আলম চরদিঘলদী ইউনিয়নের মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে। পেশায় জেলে ছিলেন। বিশাল মেঘনার বুকে মাছ ধরে জীবিকা চলত তার। সংসারে ছিলেন বাবা-মা, স্ত্রী ও চার সন্তান। দালালের খপ্পরে পড়ে সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে রেখে অবৈধ পথে পাড়ি জমান মালয়েশিয়ায়। প্রবাস জীবনের প্রথমদিকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল জাহাঙ্গীরের। কিন্তু পরে সব বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন খোঁজ না পেয়ে পরিবার ধরে নেয়, তিনি হয়তো আর বেঁচে নেই। নরসিংদী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসমা জাহান সরকার জানান, গত ২১ অক্টোবর মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে নরসিংদী সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে কল করেন কাউন্সেলর (লেবার) সৈয়দ শরীফুল ইসলাম। তিনি জানান, এক বাংলাদেশী সেখানে ক্যাম্পে আটক রয়েছেন। তার কাছে পাসপোর্ট কিংবা আইডি কার্ড, কোনো ডকুমেন্টই নেই। অসুস্থতার কারণে কথা বলতে পারেন না। এতে তার নাম-পরিচয় কিছুই জানা যাচ্ছিল না। হাইকমিশন সম্প্রতি ওই ব্যক্তির ছবি দিয়ে পরিচয় জানতে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দেয়। এরপর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেকে নিজেদের স্বজন দাবি করে যোগাযোগ করলেও কেউই যথাযথ প্রমাণ দেখাতে পারেননি। একই সময় নরসিংদী সদরের এক ব্যক্তি পোস্টের নিচে মন্তব্য করে জানান, লোকটি চরদিঘলদী ইউনিয়নের বাসিন্দা হতে পারেন। হাইকমিশন বিষয়টি যাচাই করার অনুরোধ জানালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ব্যবস্থা নেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিশিষ্টজনদের সহায়তায় খুঁজে পাওয়া যায় একটি পরিবারকে। কথা বলে নিশ্চিত হওয়া যায়, ওই ব্যক্তিই ১৮ বছর আগে মালয়েশিয়া গিয়ে নিখোঁজ হওয়া জাহাঙ্গীর আলম। পরিবারের আর্থিক অবস্থাও অত্যন্ত ভালো নয়- বিষয়টি উপলব্ধি করে প্রয়োজনীয় সব নথি সংগ্রহ করে দ্রুততম সময়ে হাইকমিশনে পাঠান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। আর্থিক অসচ্ছলতার কথা উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলমকে সরকারি ব্যয়ে দেশে পাঠানোর অনুরোধও জানান তিনি। দীর্ঘ দেড় যুগ পর গত ৭ নভেম্বর দেশে ফেরেন জাহাঙ্গীর আলম। পরিবারের সদস্যরা বিমানবন্দর থেকে তাকে বাড়িতে নিয়ে যান। কিন্তু এরপরও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি। দেশে এসে দেখেন, বাবা-মাকে হারিয়েছেন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর নতুন পরিবারে ঠাঁই নিয়েছেন তার স্ত্রীও। মালয়েশিয়ায় অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে আটক হয়ে বছরের পর বছর জেলের দুর্বিষহ জীবনে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন জাহাঙ্গীর। হারিয়েছেন বাকশক্তিও। শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন, আবার কখনো অঝোরে কেঁদে ফেলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে ২০ হাজার টাকা নগদ সহায়তা ও প্রয়োজনীয় উপহারসামগ্রী দেয়া হয়। উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে তার জন্য প্রতিবন্ধী ভাতা অনুমোদনের প্রক্রিয়া চলছে। বর্তমানে তিনি নরসিংদী জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জাহাঙ্গীরের বড় ছেলে আমান উল্লাহ বলেন, আমরা বাবাকে পেয়ে আবেগে আপ্লূত। উনি আমাদের মাঝে ফিরে এসেছেন, এটাই বড় পাওয়া। আমাদের পরিবারের সবাই খুশি। চরদিঘলদী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোসা. সেলিনা আক্তার বলেন, আমাদের পরিষদ থেকে কিছু অর্থ দেয়া হয়েছে। তাকে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, কেউ দালালের খপ্পরে পড়ে জাহাঙ্গীর আলমের মতো যেন কেউ দেশের বাইরে না যায়, সে বিষয়ে আমরাও সবাইকে সচেতন করার চেষ্টা করব।   নরসিংদী সদর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, জেনে বা না জেনে কেউই যেন জাহাঙ্গীর আলম বা তার পরিবারের মতো ভুল না করেন। দালালের খপ্পরে পড়ে অবৈধ পথে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না। একটি ভুল যেন পরিবারের সারাজীবনের কান্না হয়ে না দাঁড়ায়।

খবর৭১ ডেস্ক, নভেম্বর ১৫, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
নভেম্বরের ৮ দিনে প্রবাসীরা ৭৫ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন

চলতি নভেম্বরের প্রথম ৮ দিনে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ৭৫ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। এতে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৯ কোটি ৪৩ লাখ ডলার।   রোববার (৯ নভেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান। তিনি জানান, গত বছরের একই সময়ে এসেছিল ৬২ কোটি ৮০ লাখ ডলার, অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। আরিফ হোসেন খান আরও বলেন, ৬ থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ১৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত দেশে এসেছে ১ হাজার ৯০ কোটি ৩০ লাখ ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ১৪ দশমিক ৭০ শতাংশ বেশি। এর আগে অক্টোবর মাসে দেশে এসেছে ২৫৬ কোটি ৩৪ লাখ ৮০ হাজার এবং সেপ্টেম্বরে ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। আগস্ট ও জুলাইয়ে এসেছে যথাক্রমে ২৪২ কোটি ১৮ লাখ ৯০ হাজার ও ২৪৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার।   উল্লেখ্য, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন মোট ৩০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ৩২ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স—যা দেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়ের রেকর্ড।

খবর৭১ ডেস্ক, নভেম্বর ০৯, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
জাপানে জনশক্তির ঘাটতি পূরণে সব পদক্ষেপ নেবে বাংলাদেশ

জাপানের টোকিওতে ‘বাংলাদেশ—জাপানের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ সমৃদ্ধ একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় উৎস’ শীর্ষক সেমিনার ও ম্যাচিং ইভেন্টের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস।শুক্রবার (৭ নভেম্বর) দেশটির নাগোয়া শহরের একটি মিলনায়তনে আয়োজিত এ সেমিনারে সহযোগিতা করে জাপান আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণার্থী ও দক্ষ কর্মী সহযোগিতা সংস্থা (JITCO)। এতে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে প্রায় ২৫০টি জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এবং জাপানি নিয়োগকারী সংস্থা অংশ নেয়। রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী স্বাগত বক্তব্যে জাপানে দক্ষ জনশক্তি প্রেরণে দূতাবাসের সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশি কর্মীরা এখন বিশ্ব শ্রমবাজারে নিজেদের দক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমাণ করেছে।   ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া তার বক্তব্যে জাপান ও বাংলাদেশের মানবসম্পদের তুলনামূলক পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে জাপানের প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ বিদেশি কর্মীর প্রয়োজন হবে, আর বাংলাদেশে অতিরিক্ত ২ কোটি ৫০ লাখ কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী থাকবে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দুই দেশ পরস্পরের উন্নয়নে কাজ করতে পারে।   তিনি জানান, জাপানের শ্রমবাজারের চাহিদা অনুযায়ী কর্মী তৈরির জন্য বাংলাদেশে ইতিমধ্যে ৩৩টি টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (TTC) নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রয়োজনে এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। পাশাপাশি প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে একটি বিশেষ ‘জাপান সেল’ গঠন করা হচ্ছে, যা জাপানি শ্রমবাজারের সঙ্গে সমন্বয় ও যোগাযোগের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।   ড. ভূঁইয়া আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ ও জাপানের নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বিত প্রচেষ্টায় উভয় দেশই উপকৃত হবে। সেমিনারে JITCO-র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শিগেও মাতসুতোমি আন্তর্জাতিক শ্রমবাজার ও জাপানের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।   অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশি জনশক্তি প্রেরণকারী এবং জাপানি নিয়োগকারী সংস্থার মধ্যে চারটি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়। সেমিনারে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

খবর৭১ ডেস্ক নভেম্বর ০৭, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে : হাইকমিশনার

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠানোর বিষয়টি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটিতে নবনিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরী।   বুধবার বিকেলে কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের হলরুমে প্রবাসী সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ তথ্য জানান।   হাইকমিশনার বলেন, মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর বিষয়ে মন্তব্য করার মতো পর্যাপ্ত সময় এখনো হয়নি। এ বিষয়ে ভুল তথ্য দেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে আমাদের মালয়েশিয়া সরকারের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। তাই শ্রমবাজারসংক্রান্ত সংবাদ যাচাই-বাছাই করে সঠিকভাবে প্রচার করা জরুরি।   তিনি আরও জানান, মালয়েশিয়ায় বর্তমানে বিভিন্ন পেশায় প্রায় ১৫ লাখের বেশি বাংলাদেশি প্রবাসী কাজ করছেন। সাংবাদিকেরা সহজেই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যাগুলো তুলে ধরতে পারেন। এতে প্রবাসী ও দূতাবাসের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি হয়। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের পথ খোঁজাও জরুরি।   প্রবাসী সাংবাদিকদের উদ্দেশে হাইকমিশনার বলেন, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে প্রবাসীদের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দিতে হবে। অনেক সময় প্রবাসীরা মধ্যস্বত্বভোগীদের ভুল তথ্যে বিভ্রান্ত হন, যা তাদের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করে। অনিয়মিত প্রবাসীদের বৈধতা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি জানান, এই বিষয়ে ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টার সফরের সময় মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বৈধতা দেওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি মালয়েশিয়া সরকারের এখতিয়ার।   সভায় উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি হাইকমিশনার মোসাম্মাত শাহানারা মনিকা, বাংলাদেশ কমিউনিটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম রতন, সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম হিরন, সিনিয়র সহসভাপতি রফিক আহমদ খান, সাবেক সভাপতি মোস্তফা ইমরান রাজু, সাংগঠনিক সম্পাদক বাপ্পি কুমার দাস, দপ্তর সম্পাদক সওকত হোসেন জনি, সাংবাদিক আহমেদুল কবির, আশরাফুল মামুন, শেখ আরিফুজ্জামান, আরিফুল ইসলাম, এস এ সৌরভসহ দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তারা। সভা শেষে সাংবাদিকরা নবনিযুক্ত হাইকমিশনার মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।  

খবর৭১ ডেস্ক, অক্টোবর ৩১, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
লিবিয়া থেকে ১৭৪ বাংলাদেশি দেশে ফেরত

লিবিয়া থেকে আরও ১৭৪ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। মানবপাচারকারীদের প্রলোভনে পড়ে ইউরোপ যাওয়ার পথে এই নাগরিকরা লিবিয়ায় আটকা পড়েছিলেন।মঙ্গলবার দুপুরে বুরাক এয়ারের একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে তারা ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। বিমানবন্দরে তাদের স্বাগত জানান বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা।   পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) প্রত্যাবাসিতদের পথ খরচ, খাদ্যসামগ্রী ও প্রাথমিক চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করেছে। লিবিয়ার বাংলাদেশি দূতাবাস, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, দেশটির সরকার এবং আইওএম একযোগে কাজ করে এই ১৭৪ জন অনিয়মিত বাংলাদেশিকে নিরাপদে দেশে ফেরত আনার ব্যবস্থা করেছে।   সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, অনেকেই লিবিয়ায় থাকা অবস্থায় অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এজন্য জনসচেতনতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আহ্বান জানিয়েছে যে, প্রত্যাবাসিত নাগরিকরা তাদের অভিজ্ঞতা সমাজের সঙ্গে শেয়ার করুন। লিবিয়ার বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে আটক আরও বাংলাদেশির নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য সরকার, দূতাবাস এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সমন্বিতভাবে কাজ করছে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

খবর৭১ ডেস্ক অক্টোবর ২৮, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
অক্টোবরে রেমিট্যান্সে নতুন গতি, ২৫ দিনেই ছাড়াল ২ বিলিয়ন ডলার

চলতি অক্টোবর মাসের প্রথম ২৫ দিনেই প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে পাঠিয়েছেন ২০৩ কোটি ২৯ লাখ (২.০৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার, যা দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ৫০ পয়সা হিসেবে)। রোববার (২৬ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।   কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে পাঠানো প্রবাসী আয় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে স্বস্তি ফিরিয়েছে। হুন্ডি প্রতিরোধে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ, প্রণোদনা এবং ব্যাংকিং ব্যবস্থার উন্নতির ফলেই রেমিট্যান্সে এই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরের প্রথম ২৫ দিনে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে এসেছে ৩৮ কোটি ৪৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকের মধ্যে কৃষি ব্যাংকে এসেছে ১৯ কোটি ৭০ লাখ ৭০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে এসেছে ১৪৪ কোটি ৬৩ লাখ ৪০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪৮ লাখ ৭০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স।   এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২২ অক্টোবর দিন শেষে দেশের গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম–৬ অনুযায়ী রিজার্ভ হয়েছে ২৭ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার।   সবশেষ সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন ২৬৮ কোটি ৫০ লাখ (২.৬৮ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩২ হাজার ৭৫৭ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই–সেপ্টেম্বর) প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৭৫৮ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার (৭.৫৮ বিলিয়ন), যা দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ৯২ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ৬৫৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার, অর্থাৎ চলতি বছরে রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ।   অর্থনীতিবিদদের মতে, সরকারি প্রণোদনা ও ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহারের সচেতনতা বৃদ্ধির কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।  

খবর৭১ ডেস্ক, অক্টোবর ২৬, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের পাসপোর্ট ফি কমাতে উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার

প্রবাসী শ্রমিক তথা রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের জন্য পাসপোর্টের ফি কমিয়ে আনার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।   শনিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত কার্গো ভিলেজ ও ই-গেট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।   তিনি জানান, বিমানবন্দরে ইলেকট্রনিক গেট (ই-গেট) দ্রুত চালুর বিষয়ে আলোচনা চলছে। একই সঙ্গে ইমিগ্রেশনে সময় কমিয়ে আনা এবং যাত্রীদের অযথা হয়রানি বন্ধে সংশ্লিষ্টদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।   জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরও বলেন, বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কোনো অব্যবস্থাপনা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, চীন ও তুরস্কের বিশেষজ্ঞ দল বাংলাদেশে আসবেন। তারা তদন্ত করে ঘটনার কারণ ও দায় নির্ধারণে সহায়তা করবেন।  

খবর৭১ ডেস্ক, অক্টোবর ২৬, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
লিবিয়া থেকে আরও ৩০৯ বাংলাদেশির প্রত্যাবাসন, সরকারের সহায়তায় নিরাপদে দেশে ফেরা

লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি ও আশপাশের এলাকা থেকে অবৈধভাবে অবস্থানরত আরও ৩০৯ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর যৌথ উদ্যোগে এ প্রত্যাবাসন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।   শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকালে ফ্লাই ওয়া ইন্টারন্যাশনালের একটি বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইটে করে তারা ঢাকায় পৌঁছান। সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে বিমানটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইওএম-এর কর্মকর্তারা ফিরে আসা বাংলাদেশিদের স্বাগত জানান। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, প্রত্যাবাসিতদের অধিকাংশই মানবপাচারকারীদের প্রতারণার শিকার ছিলেন। তাদের সমুদ্রপথে ইউরোপে পৌঁছে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লিবিয়ায় নেওয়া হয়েছিল। সেখানে অনেকেই অপহরণ, নির্যাতন ও অনিশ্চিত জীবনযাপনের শিকার হন।   ফেরত আসা প্রত্যেককেই আইওএম-এর পক্ষ থেকে খাদ্যসামগ্রী ও প্রাথমিক চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের অভিজ্ঞতা প্রকাশ্যে শেয়ার করতে উৎসাহিত করেছে, যাতে মানবপাচার রোধে সচেতনতা বাড়ে এবং অন্যরা এমন ঝুঁকিতে না পড়েন। লিবিয়ায় এখনো আটক কেন্দ্রে থাকা অবশিষ্ট বাংলাদেশিদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া চলমান বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ লক্ষ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও আইওএম ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।   কর্মকর্তারা জানান, প্রবাসী বাংলাদেশিদের সুরক্ষা ও কল্যাণে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মানবপাচার রোধ এবং বিপদগ্রস্ত অভিবাসীদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও স্বেচ্ছায় দেশে ফেরাতে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ অব্যাহত থাকবে।

খবর৭১ ডেস্ক, অক্টোবর ২৪, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
স্যান্ড্রা ম্যাকারসি : ৮১ বছর বয়সেও বাংলাদেশের তরুণদের পাশে

বনশ্রীর একটি বেকারি দোকানে ঢুকলেই চোখে পড়ে এক বয়স্ক বিদেশি নারীর ছবি। কেক, পাউরুটি, শিঙাড়া আর জুসের দোকানে এমন ছবি কিছুটা অচেনা লাগে। কে তিনি? কেন তাঁর ছবি এখানে? এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় দোকানের নামেই স্যান্ড্রা ফুডস ইন্টারন্যাশনাল। দোকানটির নাম যেমন স্যান্ড্রা, তার পেছনের গল্পটিও তেমনই অসাধারণ।   নিউজিল্যান্ডের নাগরিক স্যান্ড্রা ম্যাকারসি, বয়স এখন ৮১। জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে শিক্ষকতা আর সমাজসেবায়। আজও সেই কাজেই ব্যস্ত। তবে তাঁর সবচেয়ে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ হলো বাংলাদেশের একটি বেকারি ব্যবসা যার সব মুনাফা ফিরে যায় মানুষের কল্যাণে। ২০১৮ সালে, যখন তাঁর বয়স ৭৪, তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেন এবং প্রতিষ্ঠা করেন স্যান্ড্রা ফুডস ইন্টারন্যাশনাল। এখন সেখানে কাজ করছে প্রায় ৩০০ জন মানুষ। কিন্তু তিনি কোনো লভ্যাংশ নেন না। বরং সেই টাকা দিয়ে সাহায্য করেন নারায়ণগঞ্জের একটি অনাথাশ্রমকে। তিনি বলেন, আমার আনন্দ মুনাফায় নয়, মানুষের মুখে হাসি দেখায়।   দূরদেশের এক নারী, কিন্তু হৃদয়ে বাংলাদেশ স্যান্ড্রা থাকেন নিউজিল্যান্ডের ওয়াঙ্গারেই শহরে। শিক্ষকতা ছাড়াও সেখানে পরিচালনা করেন People Potential নামের একটি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান। শিক্ষা ও সমাজসেবায় অবদানের জন্য ২০২০ সালে তিনি পেয়েছেন ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছ থেকে Queen’s Service Medal। রোটারি ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে যুক্ত আছেন ২৫ বছর বয়স থেকে। এই সংগঠনই তাঁকে প্রথম বাংলাদেশে নিয়ে আসে ২০১৫ সালে।                যেভাবে শুরু হলো এই যাত্রা২০১৫ সালে স্যান্ড্রা এসেছিলেন রোটারির একটি প্রকল্প দেখতে। নারায়ণগঞ্জে এক সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখলেন, পাশে টিনশেড ঘরে অনাথ শিশুরা বাস করছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। তিনি থেমে গেলেন। কিছুক্ষণ চুপচাপ সেই শিশুদের দেখলেন। তারপর বলেছিলেন, এটা ঠিক নয়। আমি কিছু করব।   ফিরে গিয়ে নিউজিল্যান্ডে শুরু করেন Buy a Bed নামের একটি ক্যাম্পেইন। সেই অনুদানের টাকায় গড়ে ওঠে নতুন আশ্রয়কেন্দ্র আমিজ উদ্দিন এতিমখানা, যেখানে একসঙ্গে ১০০ শিশু থাকতে পারে নিজস্ব খাট, টেবিল, পড়ার জায়গা সবই আছে। অনাথ আশ্রমের কাজ করতে গিয়ে তাঁর পরিচয় হয় স্থানীয় উদ্যোক্তা তাসবিহ হুসেইনের সঙ্গে। তিনি আনন্দ বেকারির মালিক ছিলেন। দুইজন মিলে ভাবলেন, একটা টেকসই উদ্যোগ দরকার, যা থেকে আয় হবে এবং সেই আয় সমাজে ফিরে যাবে।   সেই ভাবনা থেকেই ২০১৮ সালে শুরু হয় স্যান্ড্রা ফুডস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড। মোট বিনিয়োগ ছিল ৪ কোটি টাকার বেশি, যার অর্ধেকেরও বেশি দিয়েছেন স্যান্ড্রা। আজ প্রতিষ্ঠানটির ১৫টি বিক্রয়কেন্দ্র ও সিদ্ধিরগঞ্জে তিন হাজার বর্গফুটের কারখানা আছে। তাসবিহ বলেন, স্যান্ড্রা বলেছিলেন যত দিন তিনি বেঁচে আছেন, তত দিন এক টাকাও নেবেন না। তাঁর মৃত্যুর পরও যেন এই কাজ চালু থাকে, এই অনুরোধ করেছেন তিনি।   গত মাসে (সেপ্টেম্বর) ঢাকায় এসে স্যান্ড্রা বললেন, আমি বাংলাদেশে এলে খুশি থাকি। এখানকার মানুষ, তাদের প্রাণশক্তি, তাদের হাসি সবকিছু আমাকে ছুঁয়ে যায়। আমি এখানে নিরাপদ বোধ করি। তিনি শুধু ব্যবসা করতে চান না। তাঁর স্বপ্ন যে তরুণরা দক্ষ নয়, তারা যেন এই বেকারিতে এসে শেখে, বেড়ে ওঠে, নিজের পায়ে দাঁড়ায়। এখন আমাদের সঙ্গে ৩০০ জন কাজ করছে। মানে ৩০০টি পরিবার চলছে। এর চেয়ে বড় আনন্দ আর কী হতে পারে? বললেন স্যান্ড্রা।   বাংলা ভাষা জানেন না ঠিকই, কিন্তু মানুষকে বোঝাতে কখনো কষ্ট হয় না। একটা হাসিই অনেক সময় ভাষার চেয়ে শক্তিশালী,  বলেন তিনি। তবে একটা বিষয় তাঁকে কষ্ট দেয় এখনও পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশের কাজের ভিসা পাননি। প্রতিবারই পর্যটক ভিসায় আসতে হয়। বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও তাঁকে পার করতে হয়েছে নানা জটিলতা। তবুও তিনি হাল ছাড়েননি। নিউইয়র্ক, লন্ডন আর অকল্যান্ড ম্যারাথন দৌড়েছি। ৭৩ বছর বয়সে বিমান থেকে ঝাঁপ দিয়েছি। আমি বিশ্বাস করি, জীবন মানে হ্যাঁ বলা।   ৮১ বছর বয়সেও তিনি প্রতিদিন প্রমাণ করছেন, পরিবর্তন আনতে বয়স কোনো বাধা নয়। স্যান্ড্রা ম্যাকারসি—একজন শিক্ষক, সমাজসেবক, আর এমন এক বিদেশি, যিনি হৃদয়ে বয়ে বেড়াচ্ছেন বাংলাদেশের প্রতি ভালোবাসা।  

খবর৭১ ডেস্ক, অক্টোবর ২২, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
অবৈধ পথে প্রায় ৯৮ হাজার বাংলাদেশী পাড়ি জমিয়েছে ইউরোপে

সাম্প্রতিক একটি সরকারি প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে প্রায় ৯৮ হাজার বাংলাদেশী অবৈধভাবে ইউরোপে পাড়ি জমিয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সংখ্যাটি প্রতি বছর ধারাবাহিকভাবে বেড়ে চলেছে, যা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সামাজিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।   সরকারি সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, মূলত শ্রম বাজারে সুযোগের খোঁজ এবং উন্নত জীবনযাপনের আকাঙ্ক্ষা এই অনৈচ্ছিকভাবে দেশত্যাগের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তবে যাত্রাপথটি অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিপজ্জনক এবং অনেকেই মানবপাচারচক্রের ফাঁদে পড়ে অর্থনৈতিক ও শারীরিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।   উল্লেখযোগ্য অংশের যাত্রাপথ ইউরোপের মধ্য ও পশ্চিমা দেশগুলির দিকে। সূত্র জানায়, এই প্রক্রিয়ায় অবৈধ এজেন্ট ও দালালদের ভূমিকা বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করছে। অনেক ক্ষেত্রে, যাত্রীরা নোংরা এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবহন ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন।   বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, অবৈধভাবে বিদেশে পাড়ি দেওয়া কেবল ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ নয়, বরং দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোকেও দুর্বল করতে পারে। তাই তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় প্রশাসনকে একযোগে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন।   সরকারও এই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। স্থানীয় জনগণকে সচেতন করতে এবং বিদেশযাত্রার ঝুঁকি এড়াতে বিভিন্ন তথ্য প্রচার কার্যক্রম ও কর্মশালার আয়োজন শুরু করা হয়েছে। পাশাপাশি, বৈধ শ্রম ও শিক্ষা যাত্রার পথ প্রসারিত করতে নতুন নীতি গ্রহণের পরিকল্পনা চলছে।   অবৈধ পথে ইউরোপগামী এই সংখ্যার ক্রমবর্ধমান প্রবণতা প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা, বৈধ কর্মসংস্থান সুযোগ ও কঠোর আইন প্রয়োগ একত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

খবর৭১ ডেস্ক অক্টোবর ১৮, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ইংরেজি দক্ষতা বাধ্যতামূলক করছে যুক্তরাজ্য

যুক্তরাজ্যে অভিবাসন প্রক্রিয়ায় বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে দেশটির সরকার। আগামী ৮ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হতে যাওয়া নতুন নিয়ম অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে যেতে ইচ্ছুক অভিবাসনপ্রত্যাশীদের এ লেভেলের সমমানের ইংরেজি ভাষা দক্ষতা থাকতে হবে।   সরকারি ঘোষণায় জানানো হয়েছে, এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হলো অভিবাসীদের দেশের শিক্ষা, কর্মক্ষেত্র ও সামাজিক পরিবেশে দ্রুত খাপ খাওয়ানোর সুযোগ সৃষ্টি করা। পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে যোগাযোগজনিত সমস্যা ও নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনাও এর অন্যতম লক্ষ্য।   বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অভিবাসনের ক্ষেত্রে আইইএলটিএসসহ বিভিন্ন মানদণ্ডে নির্ধারিত ভাষা পরীক্ষার মাধ্যমে দক্ষতা যাচাই করা হয়। তবে নতুন নিয়মে এই মান আরও কঠোর করা হচ্ছে, যাতে আগত অভিবাসীরা স্থানীয় পর্যায়ে সহজে মানিয়ে নিতে পারেন।   বিশ্লেষকদের মতে, এ সিদ্ধান্তটি বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোর অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে। অনেকে মনে করছেন, এতে দক্ষ অভিবাসী বাছাইয়ের প্রক্রিয়া আরও জটিল হয়ে উঠবে এবং কম শিক্ষিত বা ইংরেজিতে অনভিজ্ঞ ব্যক্তিদের যুক্তরাজ্যে যাওয়ার সুযোগ সীমিত হবে।   তবে যুক্তরাজ্য সরকার বলছে, এই পদক্ষেপ দেশের শ্রমবাজারে মানসম্পন্ন কর্মী নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে এবং দীর্ঘমেয়াদে অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।   এদিকে নতুন নিয়ম কার্যকর হওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে প্রস্তুতির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে ২০২৫ সালের ৮ জানুয়ারি থেকে নীতিমালা পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করা যায়।

খবর৭১ ডেস্ক অক্টোবর ১৭, ২০২৫ 0
সংগৃহীত ছবি
আজ থেকে শ্রীলঙ্কার ভিসা পেতে অনুমতি লাগবে বাংলাদেশিদের

শ্রীলঙ্কায় ভ্রমণে যেতে এখন থেকে পর্যটকদের আগাম ‘ইলেকট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশন’ (ইটিএ) নেওয়া বাধ্যতামূলক করেছে দেশটির সরকার। বুধবার (১৫ অক্টোবর) থেকে নতুন এই নিয়ম কার্যকর হয়েছে।   এত দিন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা শ্রীলঙ্কার বিমানবন্দরে পৌঁছে (অন-অ্যারাইভাল) নির্দিষ্ট ফি জমা দিয়ে ভিসা নিতে পারতেন। তবে নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, ভ্রমণের আগে ইটিএ নিশ্চিত করতে হবে।   দেশটির ইমিগ্রেশন অ্যান্ড এমিগ্রেশন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশসহ অনেক দেশের নাগরিকদের জন্য এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।   নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, ভ্রমণকারীরা ইটিএ সংগ্রহ করতে পারবেন দুই উপায়ে— শ্রীলঙ্কা সরকারের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট eta.gov.lk/slvisa থেকে অনলাইনে আবেদন করে, অথবাসংশ্লিষ্ট দেশে অবস্থিত শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনের মাধ্যমে আবেদন জমা দিয়ে।   অভিবাসন ও ভিসা বিভাগ জানিয়েছে, পর্যটক, ব্যবসায়ী ও ট্রানজিট যাত্রীদের যাত্রার আগে ইটিএ নেওয়া বাধ্যতামূলক। এটি সাধারণত ৩০ দিনের জন্য বৈধ থাকে এবং কেবল পর্যটন বা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যায়।   সরকারি নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, আগাম ইটিএ না নিলে ভ্রমণকারীদের দেশে প্রবেশে জটিলতা দেখা দিতে পারে বা কিছু ক্ষেত্রে তাদের ফেরত পাঠানোও হতে পারে। তাই যেকোনো বিড়ম্বনা এড়াতে যাত্রার আগে নির্ধারিত ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ইটিএ সংগ্রহের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।  

খবর৭১ ডেস্ক, অক্টোবর ১৬, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
মালয়েশিয়ায় ৩২ বাংলাদেশিসহ অভিবাসী আটক

মালয়েশিয়ার অভিবাসন কর্তৃপক্ষ ৩২ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করেছে, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই বাংলাদেশি নাগরিক। তারা মূলত কুয়ালালামপুর ও সেলাঙ্গর এলাকায় অভিযান চলাকালীন আটক হন।   প্রাথমিকে জানা গেছে, আটককৃতরা বৈধ কাগজপত্র ছাড়া দেশটিতে অবস্থান করছিল। অভিবাসন বিভাগের সূত্রে জানা গেছে, তাদের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।   অভিযান চলাকালীন উদ্ধারকৃত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে এবং তাদেরকে নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে। অভিবাসন কর্তৃপক্ষ বলেছে, এই ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে চালানো হচ্ছে যাতে দেশটিতে অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।   এদিকে, আটককৃতদের মধ্যে বাংলাদেশিসহ অন্যান্য দেশের নাগরিকরা ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়ায় রয়েছে। কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, যে কোনো ব্যক্তি বৈধ অনুমোদন ছাড়া মালয়েশিয়ায় অবস্থান করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খবর৭১ ডেস্ক অক্টোবর ১৫, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
জেন-জি বিক্ষোভে দেশ ছাড়লেন মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট

১৩ অক্টোবর ২০২৫ মাদাগাস্কারে চলমান জেন-জি প্রজন্মের নেতৃত্বে তীব্র বিক্ষোভের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে দেশজুড়ে তরুণ প্রজন্মের বিক্ষোভ সহিংস রূপ নেওয়ায় রাজধানী আন্টানানারিভো কার্যত অচল হয়ে পড়ে।   সরকারবিরোধী এই আন্দোলনের সূত্রপাত হয় বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে তরুণদের অনলাইন প্রচারণা থেকে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও শহুরে বেকার তরুণরা এতে যুক্ত হয়। আন্দোলনকারীরা প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্তি এবং একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দাবি জানায়।   রোববার রাতে প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনা সামরিক হেলিকপ্টারে রাজধানী ছাড়েন বলে জানায় দেশটির নিরাপত্তা সূত্র। পরে তাঁর একটি প্রাইভেট জেটে করে প্রতিবেশী দেশ মরিশাসে আশ্রয় নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।   এদিকে, বিক্ষোভ দমন করতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে অভিযান চালায়। সংঘর্ষে অন্তত ১৭ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছে। রাজধানীর বেশ কয়েকটি সরকারি ভবনে আগুন দেওয়া হয়েছে এবং প্রেসিডেন্ট ভবন ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।   মাদাগাস্কারের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষায় একটি “অন্তর্বর্তী প্রশাসন পরিষদ” গঠন করা হচ্ছে। তবে বিক্ষোভকারীরা সেনা হস্তক্ষেপকে “ক্ষমতা দখলের নতুন রূপ” বলে নিন্দা জানিয়েছে।   বিশ্লেষকদের মতে, আফ্রিকার এই দ্বীপরাষ্ট্রে তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে যে রাজনৈতিক জাগরণ শুরু হয়েছে, তা কেবল রাজনীতির ধারা নয়, সমাজের কাঠামোকেও নাড়িয়ে দিচ্ছে।

খবর৭১ ডেস্ক অক্টোবর ১৩, ২০২৫ 0
Popular post
হাইকোর্টের রুল জারি, কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতি কেন অবৈধ নয়

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে। 

কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতি বিতর্ক : উদ্বেগে দুই শতাধিক কর্মকর্তা

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।   

কৃষি ব্যাংকের ‘ভুয়া সিবিএ সভা’ ঘিরে চাঞ্চল্য

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে।  অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

হালিম হত্যার আসামিরা পলাতক, ধামাচাপা দিচ্ছে প্রশাসন

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।  কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

কৃষি ব্যাংকে ভুয়া সিবিএ নেতাদের কোটি টাকারও বেশি চাঁদাবাজি

অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।  

Top week

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ছবি : সংগৃহীত
জাতীয়

লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৪, ২০২৫ 0