এখনকার অধিকাংশ শিশুর হাতেই থাকে স্মার্টফোন। যদিও স্মার্টফোন তাদের নিরাপদ রাখা ও যোগাযোগের সুবিধা বাড়ায়, তবুও অল্প বয়সে স্মার্টফোন ব্যবহারে নানা ঝুঁকি তৈরি হতে পারে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। বিশেষ করে ১২ বছর বয়সের আগে ফোন ব্যবহার শুরু করলে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব দেখা দিতে পারে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, খুব অল্প বয়সে স্মার্টফোন হাতে পাওয়া শিশুদের মধ্যে স্থূলতা, বিষণ্ণতা এবং ঘুমের সমস্যা হওয়ার প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। যদিও এসব সমস্যার সরাসরি কারণ হিসেবে স্মার্টফোন ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবে দুইয়ের মধ্যে একটি শক্ত সম্পর্ক রয়েছে। শিশু-কিশোরদের দীর্ঘমেয়াদী পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ১২ বছর বয়সে প্রথম স্মার্টফোন ব্যবহার শুরু করা শিশুদের বিষণ্ণতায় ভোগার সম্ভাবনা ৩০% বেশি, স্থূলতার ঝুঁকি ৪০% বেশি এবং ঘুমের সমস্যায় ভোগার হার প্রায় ৬০% বেশি। বিশেষজ্ঞরা জানান, ১২ বছর বয়সের আগেই স্মার্টফোন ব্যবহারে শিশুদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। ভিডিও দেখা, গেম খেলা ও সোশ্যাল মিডিয়ায় অতিরিক্ত সময় কাটানোর ফলে তাদের শারীরিক সক্রিয়তা কমে যায়, যা স্থূলতা বাড়ায়। একই সঙ্গে স্ক্রিনের সামনে দীর্ঘ সময় কাটানোয় অস্বাস্থ্যকর খাবারের অভ্যাস তৈরি হয়, যা অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি আরও বাড়ায়। বিষণ্ণতার ক্ষেত্রেও একই ধরনের প্রভাব দেখা গেছে। অল্প বয়সী ব্যবহারকারীরা অনলাইনে অন্যদের সঙ্গে নিজেদের তুলনা করে মানসিক চাপের মধ্যে পড়ে, কেউ কেউ সাইবার বুলিংয়েরও শিকার হয়, যা বিষণ্ণতার ঝুঁকি বাড়ায়। তাছাড়া, স্মার্টফোনের নীল আলো রাতে মেলাটোনিন উৎপাদনে বাধা দেয়, ফলে ঘুমের মান কমে যায়। এই ঘুমের অভাব বিষণ্ণতা ও স্থূলতার সমস্যাকে আরও জটিল করে তোলে। গবেষণার সার্বিক ফল বলছে, ১২ থেকে ১৩ বছর বয়সের মধ্যে স্মার্টফোন ব্যবহার শুরু করা শিশুরা মানসিক স্বাস্থ্য, শারীরিক অবস্থা ও ঘুমের ক্ষেত্রে বেশি ঝুঁকির মুখে পড়ে। যে শিশুরা এই বয়সের আগে ফোন ব্যবহার করে না, তাদের তুলনায় এসব সমস্যা তাদের মধ্যে অনেক বেশি প্রকট হতে পারে।
লিওনেল মেসি যখন মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) যোগ দেন, তখন ইন্টার মিয়ামি ছিল প্রায় তলানির দলে। কিন্তু তাকে পাওয়ার পর বদলে যায় তাদের পুরো চিত্র। প্রথম মৌসুমেই দলটি জিতে নেয় লিগস কাপ, পরে সাপোর্টার্স শিল্ড এবং ইস্টার্ন কনফারেন্সের শিরোপাও ঘরে তোলে। আর এবার এমএলএস কাপ জিতে তাদের সাফল্যের যাত্রা পূর্ণতা পেল। শনিবার চেজ স্টেডিয়ামে ফাইনালে ভ্যানকুভার হোয়াইটক্যাপসকে ৩–১ ব্যবধানে হারিয়ে ইন্টার মিয়ামি প্রথমবারের মতো এমএলএস কাপ জয় করে। গোল না পেলেও মেসিই ছিলেন ম্যাচের প্রধান নায়ক—তিনটি গোলেই ছিল তার সরাসরি অবদান। ম্যাচের শুরুতে মাত্র ৮ মিনিটে মেসি মধ্যমাঠ থেকে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে চমৎকার পাস বাড়ান তাদেও আলেন্দের দিকে। আলেন্দের ক্রস ভুল করে নিজেদের জালেই জড়িয়ে দেন এডিয়ার ওকাম্পো। এই আত্মঘাতী গোলেই এগিয়ে যায় মিয়ামি। তবে লিড নেওয়ার পরও আধিপত্য ধরে রাখতে পারেনি দলটি। ভ্যানকুভার চাপ বাড়িয়ে দ্বিতীয়ার্ধে সমতায় ফেরে। ব্রায়ান হোয়াইটের পাস থেকে আলি আহমেদের গোল তাদের ম্যাচে ফেরায়। এরপর ৬২ মিনিটে সুযোগ পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন এম্যানুয়েল সাব্বি। এর পরেই আসে ম্যাচের মোড় ঘোরানো মুহূর্ত। আন্দ্রেস কুবাস বল ধরে রাখতে দেরি করলে মেসি বল ছিনিয়ে নিয়ে রদ্রিগো ডি পলকে নিখুঁত পাস দেন। ডি পল গোলরক্ষককে পরাস্ত করে জয়ের পথে এগিয়ে দেন দলকে। অতিরিক্ত সময়ে মেসির আরেকটি দুর্দান্ত পাস থেকে গোল করেন আলেন্দে। পুরো প্লে-অফে মেসির অবদান ছিল ১৫ গোলে ৬ গোল এবং ৯ অ্যাসিস্ট। এই ম্যাচটি ছিল জর্দি আলবা ও সের্জিও বুসকেটসের ক্যারিয়ারেরও শেষ ম্যাচ। বার্সেলোনায় দীর্ঘ সময় সফলতার পর আলবা বিদায় নিলেন ফুটবলের অন্যতম সেরা লেফট-ব্যাক হিসেবে। বুসকেটসও তার বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের সমাপ্তি ঘটালেন অসংখ্য শিরোপা এবং জমকালো সাফল্যের সাক্ষী রেখে।
আগামী শিক্ষাবর্ষের বই ছাপা নিয়ে আবারও উঠেছে নিম্নমানের কাগজ ব্যবহারের অভিযোগ। বিভিন্ন প্রেসে রিসাইকলড ও মানহীন কাগজ ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। নির্ধারিত জিএসএম ও ব্রাইটনেস না মানলে কঠোরভাবে ব্যবস্থা নিতে গেলে বাধার মুখে পড়ছেন এনসিটিবি ও ইন্সপেকশন এজেন্টের কর্মকর্তারা। অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের ভয়ভীতিও দেখানো হচ্ছে। ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রায় ৩০ কোটি বই মুদ্রণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রাথমিকের ৯ কোটি এবং মাধ্যমিক ও ইবতেদায়ির ২১ কোটি বই ছাপার বড় অংশ পেয়েছে চারটি প্রেস—অগ্রণী, কর্ণফুলী, কচুয়া ও আনোয়ারা। এসব প্রেস মিলে তিন কোটিরও বেশি বই ছাপার কাজ করছে, যার আর্থিক মাপ ২০০ কোটি টাকার বেশি। তবে এর মধ্যে দুটি প্রেস ইচ্ছাকৃতভাবে সময়ক্ষেপণ করে শেষ মুহূর্তে চুক্তি করে, যার কারণে সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বই ফেব্রুয়ারি-মার্চ পর্যন্ত দেরিতে পৌঁছাতে পারে। মান নির্ধারণ অনুযায়ী প্রাথমিক বইয়ে ৮০ জিএসএম ও ৮৫ ব্রাইটনেস, আর মাধ্যমিক বইয়ে ৭০ জিএসএম ও ৮৫ ব্রাইটনেস মানতে হবে। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, কিছু প্রেস ৮০ জিএসএমের জায়গায় ৬৫–৭০ এবং ৭০ জিএসএমের জায়গায় ৬০–৬৩ জিএসএম কাগজ ব্যবহার করছে। বাজারে মানসম্মত কাগজের দাম যেখানে টনপ্রতি প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা, সেখানে কিছু প্রেস ৯০ হাজার টাকার রিসাইকলড কাগজ ব্যবহার করছে। এমনকি ইন্সপেকশন এড়াতে ভালো কাগজ আলাদা করে রাখা হয় এবং স্যাম্পল নেওয়ার সময় কর্মকর্তাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলে। এক পর্যায়ে এনসিটিবির এক কর্মকর্তার ব্যাগও কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে তাঁদের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় পাঠানো বইয়ের কয়েকটি লটে নিম্নমানের কাগজ পাওয়া গেছে এবং কিছু এলাকা তা ফেরতও পাঠিয়েছে। একই সঙ্গে অভিযোগ উঠেছে, এনসিটিবির ভেতরও কিছু ব্যক্তি নিম্নমানের বই ছাপা সিন্ডিকেটের সঙ্গে যোগসাজশ করে ভালো রিপোর্ট দিতে চাপ সৃষ্টি করছেন। জিএসএম কম হলে বই দ্রুত ছিঁড়ে যায়, আর ব্রাইটনেস কম হলে পাঠে চোখে চাপ পড়ে এই দুই কারণে বই বছরের শুরুতেই নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। গত বছরও কিছু প্রেস নিম্নমানের বই সরবরাহ করেছিল, তবে তদন্ত মাঝপথে থেমে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এবারও কঠোর ব্যবস্থা না নিলে ২০২৬ সালের বই বিতরণে বড় ধরনের সংকট দেখা দিতে পারে।
মিয়ানমারে বিমান হামলায় অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছে। সাগাইং অঞ্চলের তাবায়িন টাউনশিপে শুক্রবার সন্ধ্যায় দুটি বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এর মধ্যে একটি বোমা আঘাত হানে একটি ব্যস্ত চায়ের দোকানে। এতে ঘটনাস্থলেই সাতজনসহ মোট ১৮ জন নিহত এবং ২০ জন আহত হয়। স্থানীয় কর্মকর্তাদের মতে, চায়ের দোকানে ভিড় বেশি থাকায় হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে। হামলায় দোকানটি এবং আশপাশের অন্তত এক ডজন বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে প্রত্যক্ষদর্শী ও সূত্রগুলো পরিচয় গোপন রাখার অনুরোধ করেছেন। ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে তীব্র গৃহযুদ্ধ চলছে। সামরিক বাহিনী ও বিভিন্ন সশস্ত্র বিরোধী গোষ্ঠীর সংঘর্ষের মাঝে প্রায়ই বিমান হামলার ঘটনা ঘটে, যার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বেসামরিক মানুষেরাই হতাহত হন। এদিকে, বিদেশে অবস্থানরত মিয়ানমারের নাগরিকদের জন্য আগাম ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। ব্যাংককসহ বিভিন্ন স্থানে ভোটারদের ভোট দিতে দেখা গেছে। গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতির মধ্যেই জান্তা সরকার চলতি মাসের শেষে কয়েক ধাপে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে, যার মাধ্যমে তারা ক্ষমতা আরও সুসংহত করতে চাইছে।
আগামী শিক্ষাবর্ষের বই ছাপা নিয়ে আবারও উঠেছে নিম্নমানের কাগজ ব্যবহারের অভিযোগ। বিভিন্ন প্রেসে রিসাইকলড ও মানহীন কাগজ ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। নির্ধারিত জিএসএম ও ব্রাইটনেস না মানলে কঠোরভাবে ব্যবস্থা নিতে গেলে বাধার মুখে পড়ছেন এনসিটিবি ও ইন্সপেকশন এজেন্টের কর্মকর্তারা। অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের ভয়ভীতিও দেখানো হচ্ছে। ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রায় ৩০ কোটি বই মুদ্রণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রাথমিকের ৯ কোটি এবং মাধ্যমিক ও ইবতেদায়ির ২১ কোটি বই ছাপার বড় অংশ পেয়েছে চারটি প্রেস—অগ্রণী, কর্ণফুলী, কচুয়া ও আনোয়ারা। এসব প্রেস মিলে তিন কোটিরও বেশি বই ছাপার কাজ করছে, যার আর্থিক মাপ ২০০ কোটি টাকার বেশি। তবে এর মধ্যে দুটি প্রেস ইচ্ছাকৃতভাবে সময়ক্ষেপণ করে শেষ মুহূর্তে চুক্তি করে, যার কারণে সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বই ফেব্রুয়ারি-মার্চ পর্যন্ত দেরিতে পৌঁছাতে পারে। মান নির্ধারণ অনুযায়ী প্রাথমিক বইয়ে ৮০ জিএসএম ও ৮৫ ব্রাইটনেস, আর মাধ্যমিক বইয়ে ৭০ জিএসএম ও ৮৫ ব্রাইটনেস মানতে হবে। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, কিছু প্রেস ৮০ জিএসএমের জায়গায় ৬৫–৭০ এবং ৭০ জিএসএমের জায়গায় ৬০–৬৩ জিএসএম কাগজ ব্যবহার করছে। বাজারে মানসম্মত কাগজের দাম যেখানে টনপ্রতি প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা, সেখানে কিছু প্রেস ৯০ হাজার টাকার রিসাইকলড কাগজ ব্যবহার করছে। এমনকি ইন্সপেকশন এড়াতে ভালো কাগজ আলাদা করে রাখা হয় এবং স্যাম্পল নেওয়ার সময় কর্মকর্তাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলে। এক পর্যায়ে এনসিটিবির এক কর্মকর্তার ব্যাগও কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে তাঁদের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় পাঠানো বইয়ের কয়েকটি লটে নিম্নমানের কাগজ পাওয়া গেছে এবং কিছু এলাকা তা ফেরতও পাঠিয়েছে। একই সঙ্গে অভিযোগ উঠেছে, এনসিটিবির ভেতরও কিছু ব্যক্তি নিম্নমানের বই ছাপা সিন্ডিকেটের সঙ্গে যোগসাজশ করে ভালো রিপোর্ট দিতে চাপ সৃষ্টি করছেন। জিএসএম কম হলে বই দ্রুত ছিঁড়ে যায়, আর ব্রাইটনেস কম হলে পাঠে চোখে চাপ পড়ে এই দুই কারণে বই বছরের শুরুতেই নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। গত বছরও কিছু প্রেস নিম্নমানের বই সরবরাহ করেছিল, তবে তদন্ত মাঝপথে থেমে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এবারও কঠোর ব্যবস্থা না নিলে ২০২৬ সালের বই বিতরণে বড় ধরনের সংকট দেখা দিতে পারে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবু জাফরের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ানো চিকিৎসক ধনদেব চন্দ্র বর্মণকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে হাসপাতাল প্রশাসন এ সিদ্ধান্ত নেয়। বিকেল চারটায় হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম ফেরদৌস এ নোটিশ প্রদান করেন। হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মাইনউদ্দিন খান বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ সরকারি চাকরির বিধিমালার পরিপন্থী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ক্যাজুয়ালটি অপারেশন থিয়েটার পরিদর্শনে গিয়ে মহাপরিচালক কক্ষে টেবিল থাকার কারণ জানতে চাইলে জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ধনদেব চন্দ্র বর্মণ তার সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। ধনদেব চন্দ্র বর্মণ ২০২৩ সালের ৮ আগস্ট থেকে ওয়ান-স্টপ সার্ভিসের ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। চলতি বছরের জুলাই মাসে তিনি আবাসিক সার্জন থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান। ঘটনা সম্পর্কে ধনদেব চন্দ্র বর্মণ জানান, তিনি মহাপরিচালকের কাছ থেকে স্নেহপূর্ণ আচরণ প্রত্যাশা করেছিলেন। কিন্তু সমস্যা ও প্রয়োজনীয় বিষয় জানতে না চেয়ে কেন কক্ষে টেবিল রাখা হয়েছে সেটি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। তিনি আরও বলেন, বন্ধুরা সবাই অধ্যাপক হয়ে গেছে, আমার চাকরিজীবন প্রায় শেষ হলেও নানা কারণে আমি হয়নি। যদি এ ঘটনায় সাসপেনশন হয়, তাতেও আমি খুশি হব।
এক বছরে ৩৬৫ দিনের মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ কোটির বেশি শিক্ষার্থী মাত্র ৯২ দিন ক্লাস পেয়েছে। সরকারি ছুটি, সাপ্তাহিক বন্ধ, শিক্ষক আন্দোলন, কর্মবিরতি, শাটডাউন, বিক্ষোভ–সমাবেশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং পাঠ্যবই বিলম্বে বিতরণ—সব মিলিয়ে শিক্ষাক্রম চরমভাবে ব্যাহত হয়েছে। এ অবস্থায় শিখন ঘাটতি নিয়েই আজ রবিবার থেকে প্রাথমিকের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। সহকারী শিক্ষকরা শর্তসাপেক্ষে পরীক্ষার বাইরে আন্দোলন সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন। সরকারি শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী, এ বছরে ৭৬ দিন সরকারি ছুটি এবং ১০৪ দিন সাপ্তাহিক ছুটিতে মোট ১৮০ দিন বিদ্যালয় বন্ধ ছিল। বাকি ১৮৫ দিনের মধ্যে বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষকরা ৪০ দিন কর্মবিরতি পালন করেন এর মধ্যে পূর্ণদিবস ১৬ দিন এবং অর্ধদিবস ২৪ দিন। কর্মবিরতির দিন বাদ দিলে অবশিষ্ট থাকে ১৪৫ দিন। এ সময়ের মধ্যে পরীক্ষা নিতে হয়েছে ২৭ দিন, ফলে ক্লাসের জন্য থাকে ১১৬ দিন। শৈত্যপ্রবাহ, বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও দুর্ঘটনাজনিত কারণে আরো ১১ দিন বন্ধ থাকে বিদ্যালয়। অন্যদিকে জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত পাঠ্যবই হাতে না পাওয়ায় কার্যত ক্লাস হয়েছে মাত্র ৯২ দিন। দেশের ৬৫ হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩ লাখ ৮৪ হাজারের বেশি শিক্ষক কর্মরত, যার বড় অংশই সহকারী শিক্ষক। প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় দুই কোটি; এর মধ্যে সরকারি বিদ্যালয়ে পড়ে এক কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী। টানা আন্দোলন, কর্মবিরতি এবং শাটডাউন কর্মসূচির কারণে এসব বিদ্যালয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়ে শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়ে। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে পাঁচ শতাধিক সহকারী শিক্ষককে ভিন্ন জেলায় বদলির আদেশ দেয়। শুধু নোয়াখালী থেকেই বদলি করা হয় ৪০ জন শিক্ষককে। আন্দোলনকারী শিক্ষকদের দাবি, এগুলো স্পষ্টতই শাস্তিমূলক বদলি এবং তাদের দাবির আন্দোলনকে চাপের মুখে ফেলতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নোয়াখালীর ২৪৩টি বিদ্যালয়ে পরীক্ষা বন্ধ থাকায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সেসব বিদ্যালয়ের সব শিক্ষককে শোকজ নোটিশ পাঠিয়েছে। সরকারি নির্দেশ অমান্য করা, বিদ্যালয় তালাবদ্ধ রাখা এবং সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে তিন কর্মদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। বদলির তালিকায় থাকা শিক্ষক নেতা আবুল কাশেম ময়মনসিংহ থেকে প্রায় ৩৫০ মাইল দূরে বরিশালে বদলি হয়েছেন। সহকর্মীদের সঙ্গে দূরবর্তী জেলায় বদলির ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভে আসেন। অন্য আরেক নেতা রোকনুজ্জামান রাসেলকেও জামালপুরে বদলি করা হয়েছে। শিক্ষক নেতাদের অভিযোগ, আন্দোলন ভাঙতেই তাদের দূরবর্তী এলাকায় বদলি করা হয়েছে।
দেশের পণ্য রপ্তানি টানা চার মাস ধরে কমছে। সদ্যসমাপ্ত নভেম্বর মাসে রপ্তানি হয়েছে ৩৮৯ কোটি ডলারের পণ্য, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ কম। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, শীর্ষ পাঁচ রপ্তানি খাতের মধ্যে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য ছাড়া সব খাতেই রপ্তানি কমেছে। এগুলো হলো তৈরি পোশাক, পাট ও পাটজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, এবং হোম টেক্সটাইল। একই সঙ্গে কমেছে চামড়াবিহীন জুতা, হিমায়িত খাদ্য এবং প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানিও। নভেম্বর মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৩১৪ কোটি ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ কম। যদিও জুলাই-নভেম্বর সময়ের মোট হিসেবে তৈরি পোশাক রপ্তানি এখনো ইতিবাচক রপ্তানি হয়েছে ১ হাজার ৬১৩ কোটি ডলার, যা গত বছরের তুলনায় শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ বেশি। দ্বিতীয় শীর্ষ খাত চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে নভেম্বরে রপ্তানি হয়েছে ৯ কোটি ৮৯ লাখ ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ১৪ শতাংশ বেশি। জুলাই-নভেম্বর সময়ে রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ৫১ কোটি ডলারে; প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ। তৃতীয় শীর্ষ খাত কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্য রপ্তানিতে বড় ধরনের ধস নেমেছে। গত নভেম্বরে রপ্তানি হয়েছে ৮ কোটি ২৮ লাখ ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশ কম। চলতি অর্থবছরের পাঁচ মাসে মোট রপ্তানি ৪৬ কোটি ডলার প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক ৬ দশমিক ৮১ শতাংশ। পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি নভেম্বরে কমেছে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ। রপ্তানি হয়েছে ৬ কোটি ৮৯ লাখ ডলার। যদিও জুলাই-নভেম্বর সময়ে মোট রপ্তানি ৩৫ কোটি ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ বেশি। হোম টেক্সটাইল রপ্তানিও গত নভেম্বরে কমেছে ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এ সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৬ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। তবে পাঁচ মাসের হিসাবে রপ্তানি এখনো ইতিবাচক—৩৪ কোটি ৫৪ লাখ ডলারের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
গুরুতর অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেওয়ার উদ্দেশ্যে জার্মানি থেকে ভাড়া করা একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আগামী মঙ্গলবার ঢাকায় পৌঁছানোর অনুমতি চেয়েছে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জার্মান এয়ারলাইন্স এফএআই এভিয়েশন গ্রুপের আবেদনে ৯ ডিসেম্বর ঢাকায় অবতরণ এবং ১০ ডিসেম্বর লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগের সময়সূচি চাওয়া হয়েছে। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হলেও তিনি চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন। উন্নত চিকিৎসার উদ্দেশে শুক্রবার কাতার আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে লন্ডনে নেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু কারিগরি ত্রুটির কারণে উড়োজাহাজটি ঢাকায় আসতে পারেনি। পরে কাতার সরকারের সহযোগিতায় জার্মানি থেকে একটি বিকল্প এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনো দীর্ঘ বিমানযাত্রার উপযোগী হয়নি বলে শনিবার চিকিৎসকরা জানান। তাঁদের মতে, শারীরিক অবস্থা উন্নতি হলেই তাঁকে লন্ডনে নেওয়া হবে। জার্মানির নুরেমবার্গভিত্তিক এফএআই এভিয়েশন গ্রুপের বোম্বার্ডিয়ার চ্যালেঞ্জার (CL-60) সিরিজের এই দুই ইঞ্জিনের জেট উড়োজাহাজটি সম্পূর্ণ আধুনিক চিকিৎসাসুবিধাসম্পন্ন একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। এতে রয়েছে ভেন্টিলেটর, মনিটরিং ইউনিট, ইনফিউশন পাম্প, অক্সিজেন সিস্টেমসহ জরুরি চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব সরঞ্জাম। পাশাপাশি থাকবেন অভিজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স এবং প্যারামেডিকস, যারা আকাশপথে রোগী পরিবহনে বিশেষজ্ঞ। এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি কোন তারিখে ঢাকায় আসবে এবং ঠিক কবে খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়া হবে তা এখনো চূড়ান্তভাবে জানানো সম্ভব হয়নি। তবে প্রস্তুতি অব্যাহত আছে এবং বিষয়টি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে সংশ্লিষ্ট সবাই।
জুলাই অভ্যুত্থানে শহিদ অজ্ঞাতনামা ১১৪ জনের পরিচয় শনাক্তের উদ্দেশ্যে আজ (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর রায়েরবাজার শহিদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থান থেকে মরদেহ উত্তোলন করা হবে। মরদেহ উত্তোলনের পর সংগ্রহ করা হবে ডিএনএ নমুনা। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, রোববার সকাল থেকে সিআইডির দল কাজ শুরু করবে। মরদেহ উত্তোলনের পর ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে যথাযথ প্রক্রিয়ায় পুনরায় দাফন করা হবে। উত্তোলন কার্যক্রম শুরুর আগে কবরস্থান প্রাঙ্গণে ব্রিফিং করবেন সিআইডির প্রধান মো. ছিবগাত উল্লাহ। সেখানে উপস্থিত থাকবেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ লুয়িস ফনডিব্রাইডারসহ ফরেনসিক অ্যানথ্রোপোলজিস্ট ও ফরেনসিক কনসালট্যান্টরা। রায়েরবাজার কবরস্থানে মরদেহ উত্তোলন কার্যক্রমের জন্য ইতোমধ্যে তাবু স্থাপন করা হয়েছে। এর আগে, গত ৪ আগস্ট ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পুলিশের আবেদনের ভিত্তিতে মরদেহ উত্তোলনের অনুমতি দেন। আবেদনের বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করেন মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহিদুল ইসলাম।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব আখতার আহমেদ। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের এক কর্মশালায় তিনি এ তথ্য জানান। ইসি সচিব বলেন, সকাল সাড়ে ১১টা থেকে আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি বিষয়ক মিটিংয়ে ছিলাম। নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত তফসিল ঘোষণার দিন নির্ধারণ করতে পারেনি। তিনি আরও বলেন, যথাসময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সবাইকে অনুরোধ করছি সঠিক তথ্য প্রচার করতে… নির্বাচনের জন্য জোর প্রস্তুতি চলছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ (সংশোধনীসহ) সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধিমালা, ২০০৮ (সংশোধনীসহ) এবং নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ এর পরিচিতি শীর্ষক এ প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। কর্মশালার প্রথম পর্বে নির্বাচন কমিশনার আবদুল রহমানেল মাছউদ আলোচনা করেন। উল্লেখ্য, আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে। প্রাথমিক পরিকল্পনা ছিল ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করা। তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন আগে জানিয়েছিলেন, তফসিল ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঘোষিত হতে পারে।
এ এইচ এম বজলুর রহমান
মিয়ানমারে বিমান হামলায় অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছে। সাগাইং অঞ্চলের তাবায়িন টাউনশিপে শুক্রবার সন্ধ্যায় দুটি বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এর মধ্যে একটি বোমা আঘাত হানে একটি ব্যস্ত চায়ের দোকানে। এতে ঘটনাস্থলেই সাতজনসহ মোট ১৮ জন নিহত এবং ২০ জন আহত হয়। স্থানীয় কর্মকর্তাদের মতে, চায়ের দোকানে ভিড় বেশি থাকায় হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে। হামলায় দোকানটি এবং আশপাশের অন্তত এক ডজন বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে প্রত্যক্ষদর্শী ও সূত্রগুলো পরিচয় গোপন রাখার অনুরোধ করেছেন। ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে তীব্র গৃহযুদ্ধ চলছে। সামরিক বাহিনী ও বিভিন্ন সশস্ত্র বিরোধী গোষ্ঠীর সংঘর্ষের মাঝে প্রায়ই বিমান হামলার ঘটনা ঘটে, যার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বেসামরিক মানুষেরাই হতাহত হন। এদিকে, বিদেশে অবস্থানরত মিয়ানমারের নাগরিকদের জন্য আগাম ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। ব্যাংককসহ বিভিন্ন স্থানে ভোটারদের ভোট দিতে দেখা গেছে। গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতির মধ্যেই জান্তা সরকার চলতি মাসের শেষে কয়েক ধাপে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে, যার মাধ্যমে তারা ক্ষমতা আরও সুসংহত করতে চাইছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার রাজধানী প্রিটোরিয়ার কাছে একটি বারে বন্দুকধারীদের গুলিতে তিন বছরের এক শিশুসহ কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয়েছেন। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় ভোরে এ ঘটনা ঘটে। দেশটির পুলিশ তথ্যটি নিশ্চিত করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকান পুলিশ সার্ভিসের মুখপাত্র আথলেন্ডা ম্যাথে জানান, প্রিটোরিয়া থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার পশ্চিমে সলসভিল টাউনশিপের একটি বারে চালানো এ হামলায় মোট ২৫ জনকে গুলি করা হয়। আহত ১৪ জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছে তিন বছর বয়সী শিশু, ১২ বছর বয়সী এক ছেলে ও ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরী। তিনি জানান, ভোর সাড়ে ৪টার দিকে একটি হোস্টেলের ভেতরে অবস্থিত অনিবন্ধিত বারে তিনজন বন্দুকধারী ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালায়। এ সময় সেখানে কয়েকজন পুরুষ পানাহার করছিলেন। ঘটনার পর বন্দুকধারীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে। তবে এখনো হামলার কারণ বা উদ্দেশ্য জানা যায়নি। দক্ষিণ আফ্রিকা বহুদিন ধরেই সংগঠিত অপরাধ, দুর্নীতি এবং গ্যাং সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াই করছে। সরকারি হিসেবে, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশটিতে প্রতিদিন গড়ে ৬৩ জন খুন হয়েছে।
এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে টানা ভারী বর্ষণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডসহ দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে মৃত্যুর সংখ্যা ১ হাজার ৭৫০ ছাড়িয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত লাখো মানুষের কাছে সহায়তা পৌঁছাতে হিমশিম খাচ্ছেন স্থানীয় উদ্ধারকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীরা। গত ২৭ নভেম্বর শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টিপাতে এসব দেশে ব্যাপক দুর্যোগ দেখা দেয়। মাঝখানে দু–এক দিন বৃষ্টি কিছুটা কমলেও আবারও ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস রয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে অন্তত ৯০৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং এখনও ৪১০ জন নিখোঁজ। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৮ লাখের বেশি মানুষ। আচেহের গভর্নর জানান, দূরবর্তী অনেক এলাকায় এখনো খাদ্যসহ জরুরি সহায়তা পৌঁছায়নি, ফলে অনাহার বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। উদ্ধারকারী দল কোমরসমান কাদায় মরদেহ উদ্ধারে সংগ্রাম করছে। শ্রীলঙ্কায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬০৭ জনে দাঁড়িয়েছে। নিখোঁজ ২১৪ জনের অধিকাংশেরই প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশটির ২০ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৭১ হাজারের বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত এবং প্রায় ৫ হাজার বাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে নতুন ভূমিধসের ঝুঁকি তৈরি হওয়ায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। থাইল্যান্ডে এখন পর্যন্ত ২৭৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনামে ভূমিধসে দু’জন করে চারজন প্রাণ হারিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত এসব দেশে এখনো ভয়াবহ দুর্যোগ পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং নতুন বৃষ্টি পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সামরিক বাহিনীর মধ্যে সীমান্ত এলাকায় আবারও ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) গভীর রাতে ব্যাপক গোলাগুলি হয় দুইপক্ষে। আফগানিস্তান তালেবানের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ অভিযোগ করে বলেন, পাকিস্তানি সেনারা কান্দাহারের স্পিন বোলদাক জেলায় হামলা চালায়। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়, চামান সীমান্তে আফগান বাহিনী বিনা উসকানিতে হামলা চালিয়েছে। এদিকে, দুদিন আগেই সৌদি আরবে বৈঠকে বসে কাবুল-ইসলামাবাদের প্রতিনিধিরা। তবে কোনো ধরণের অগ্রগতি ছাড়াই শেষ হয় ওই শান্তি-আলোচনা।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।