জাতীয়

উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি সভায় আলোচনা

একই দিনে গণভোট জাতীয় নির্বাচন

খবর৭১ ডেস্ক, নভেম্বর ০৪, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোট এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন একই দিনে হবে। এই গণভোটে জুলাই সনদের প্রস্তাবগুলোর ওপর বিভিন্ন দলের দেওয়া নোট অব ডিসেন্ট (ভিন্নমত) উল্লেখ থাকবে না। তবে ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে সনদ বাস্তবায়নে ২৭০ দিনের বাধ্যবাধকতার যে সুপারিশ করা হয়েছে, সেটিও তুলে দেওয়া হবে। এছাড়া পিআর (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে গঠিত হবে সংসদের উচ্চকক্ষ। অর্থাৎ জুলাই জাতীয় সনদ নিয়ে বিএনপি-জামায়াত উভয় পক্ষের যে দাবি রয়েছে, সেসব দাবি মানার ক্ষেত্রে সরকার ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করছে। গত কয়েকদিনের আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক আলোচনার ভিত্তিতে সরকার এ ধরনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

 

সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি সভায় উল্লিখিত সব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। তবে এখনই এসব সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়ে দলগুলোর সঙ্গে সরাসরি বিরোধে যেতে চায় না সরকার। এজন্যই দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাতে কমপক্ষে এক সপ্তাহের সময় দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব বিষয় নিশ্চিত করেছে।

 

এদিকে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন। তিনি জানান, উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠকে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) আদেশ চূড়ান্তকরণ এবং এ ব্যাপারে গণভোট নিয়ে আলোচনা হয়। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ রয়েছে। এ ধরনের মতবিরোধ উদ্বেগজনক। এ অবস্থায় গণভোটের সময়, বিষয়বস্তু এবং সনদে উল্লিখিত ভিন্নমতের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে দ্রুততম সময়ে সরকারকে প্রস্তাব দিতে হবে। সম্ভব হলে এক সপ্তাহের মধ্যে জানাতে হবে সিদ্ধান্ত। তা না হলে সরকার পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।

 

বৈঠকের একাধিক সূত্র জানায়, জাতীয় নির্বাচনের দিনেই গণভোট হবে। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ কম। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সরকারের পক্ষ থেকে সোমবার যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, সেখানেই গণভোটের ব্যাপারে বার্তা রয়েছে। এর ব্যাখ্যা করে বলা হয়, সরকার ৩ নভেম্বর রাজনৈতিক দলগুলোকে সময়সীমা দিয়েছে। এক্ষেত্রে অনুরোধ করা হয়েছে এক সপ্তাহ সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাতে। কিন্তু সরকার ধারণা করছে, এ সময়ের মধ্যে হয়তো পারবে না। এতে আরও দুই-তিন দিন অপেক্ষা করতে হবে। দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় তারা এ ধরনের বার্তা পেয়েছে। অর্থাৎ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় নভেম্বরের প্রথমার্ধ পর্যন্ত সময় লাগবে। এরপরও তারা একমতে আসতে না পারলে সরকার আদেশ জারি করবে। এছাড়াও গণভোটসহ সনদ সংক্রান্ত অন্য সিদ্ধান্তগুলো জানাবে সরকার। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর দাবি-নভেম্বরের মধ্যে গণভোট করতে হবে। ফলে এ সময়ের মধ্যে গণভোট করা অসম্ভব। আবার ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। আর ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় নির্বাচন। ফলে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট সম্ভব নয়। এ কারণে জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে একই দিনে করতে হবে গণভোট। এছাড়াও রাজনৈতিক দলগুলোর দাবিগুলোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করার চেষ্টা করা হয়েছে। কারণ, বিএনপির অন্যতম দাবি ছিল জাতীয় নির্বাচনের দিনে গণভোট। আবার জামায়াতে ইসলামীর দাবি পিআর পদ্ধতিতে সংসদের উচ্চকক্ষ গঠন। এটিও মানা হচ্ছে। এছাড়া সনদ বাস্তবায়ন সুপারিশে কিছু বিষয়ের সঙ্গে অনেকেই দ্বিমত পোষণ করেছেন। যেমন নির্বাচিত সংসদ (সংবিধান সংস্কার পরিষদ) ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংশোধন করে জুলাই আদেশের প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন না করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে তা প্রতিস্থাপিত হবে। সরকার এই বাধ্যবাধকতা রাখতে চাচ্ছে না। এটি বিএনপিরও দাবি। অন্যদিকে সনদের যেসব বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট আছে, গণভোটে সেগুলো বাদ দেওয়া হবে। এটি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দাবি। নির্বাচনের পর যে দল ক্ষমতায় যাবে, তারা গণভোটে পাশ হওয়া বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করবে, না করলে জনগণ তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। সূত্র আরও জানায়, সনদ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকার সরাসরি বিরোধে জড়াতে চাচ্ছে না। কারণ, কোনো দল গণভোটের বিপক্ষে ক্যাম্পেইন করুক, সেটি কাম্য নয়। দ্বিতীয়ত, গণভোট যেহেতু সাধারণ মানুষ দেবে, তাই মানুষকে বোঝানো জরুরি-সরকার ঐকমত্যের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। 

 

সংবাদ সম্মেলনে আসিফ নজরুল বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে সোমবার উপদেষ্টা পরিষদের একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) আদেশ চূড়ান্তকরণ এবং এতে উল্লিখিত গণভোট আয়োজন ও গণভোটের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা হয়। ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘদিন আলোচনার পরও কয়েকটি সংস্কারের সুপারিশ বিষয়ে ভিন্নমত রয়েছে। এছাড়া গণভোটের সময় ও বিষয়বস্তু কী হবে-এসব প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ রয়েছে। এটি উদ্বেগজনক। এ অবস্থায় গণভোটের সময়, বিষয়বস্তু এবং সনদে উল্লিখিত ভিন্নমতের বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে-তা নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলো স্বীয় উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে দ্রুততম সময়ে সরকারকে প্রস্তাব দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। সম্ভব হলে এক সপ্তাহের মধ্যে এই পরামর্শ দিতে হবে। এতে সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া অনেক সহজ হবে। তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কালক্ষেপণের কোনো সুযোগ নেই। এছাড়াও সভায় ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করা হয়। এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, এ সময়ের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্তে আসতে না পারলে সরকার সিদ্ধান্ত দেবে। আরেক প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, ইতোমধ্যে একটি দল আলোচনার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। ফলে আমরা চাই আলোচনার মাধ্যমে তারা সমস্যার সমাধান করুক। 

 

প্রসঙ্গত, রাষ্ট্র সংস্কারে জুলাই সনদে ৮৪টি প্রস্তাব করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর মধ্যে বেশকিছু প্রস্তাবে বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের নোট অব ডিসেন্ট রয়েছে। সংবিধান সংশোধনে রয়েছে ৪৮টি প্রস্তাব। এ পর্যন্ত বিএনপি, জামায়াতসহ ২৫টি রাজনৈতিক দল জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছে। এরপর ২৮ অক্টোবর সনদ বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুপারিশ করেছে ঐকমত্য কমিশন। সুপারিশ অনুসারে প্রস্তাবগুলো তিন ভাগে বাস্তবায়ন হবে। ৯টি নির্বাহী আদেশে, ২৭টি অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে এবং সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত ৪৮টি প্রস্তাব গণভোটের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হবে। এছাড়াও পরবর্তী সংসদ দুটি দায়িত্ব পালন করবে। প্রথমত, সংবিধান সংস্কার পরিষদ। দ্বিতীয়ত, নিয়মিত আইনসভা। সুপারিশে আরও বলা হয়, আগামী সংসদে নির্বাচিত সদস্যরা প্রথম অধিবেশন শুরুর ২৭০ দিনের মধ্যে জুলাই সনদ অনুসারে সংবিধান সংশোধন করবেন। এই সময়ের মধ্যে তারা সংবিধান সংশোধনে ব্যর্থ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জুলাই সনদের প্রস্তাবগুলো সংবিধানে প্রতিস্থাপিত হবে। এরপর ৪৫ দিনের মধ্যে পিআর পদ্ধতিতে সংসদের উচ্চকক্ষ গঠিত হবে। এক্ষেত্রে কোনো দলের নোট অব ডিসেন্ট আমলে নেওয়া হয়নি। সুপারিশে আরও বলা হয়, সনদ বাস্তবায়নে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে ভিত্তি ধরে সরকার একটি আদেশ জারি করবে। আদেশের নাম হবে ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫’। এই আদেশের ওপর হবে গণভোট। এই সুপারিশ জমা দেওয়ার পরপরই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভক্তি শুরু হয়। জামায়াত ও এনসিপি অধিকাংশ সুপারিশের পক্ষে। কিন্তু বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় বিএনপি।

 

Popular post
হাইকোর্টের রুল জারি, কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতি কেন অবৈধ নয়

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে। 

কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতি বিতর্ক : উদ্বেগে দুই শতাধিক কর্মকর্তা

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।   

কৃষি ব্যাংকের ‘ভুয়া সিবিএ সভা’ ঘিরে চাঞ্চল্য

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে।  অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

হালিম হত্যার আসামিরা পলাতক, ধামাচাপা দিচ্ছে প্রশাসন

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।  কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

কৃষি ব্যাংকে ভুয়া সিবিএ নেতাদের কোটি টাকারও বেশি চাঁদাবাজি

অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।  

ছবি: সংগৃহীত
শিশুকে স্মার্টফোন দিলে যে ক্ষতি হতে পারে

এখনকার অধিকাংশ শিশুর হাতেই থাকে স্মার্টফোন। যদিও স্মার্টফোন তাদের নিরাপদ রাখা ও যোগাযোগের সুবিধা বাড়ায়, তবুও অল্প বয়সে স্মার্টফোন ব্যবহারে নানা ঝুঁকি তৈরি হতে পারে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। বিশেষ করে ১২ বছর বয়সের আগে ফোন ব্যবহার শুরু করলে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব দেখা দিতে পারে।   এক গবেষণায় দেখা গেছে, খুব অল্প বয়সে স্মার্টফোন হাতে পাওয়া শিশুদের মধ্যে স্থূলতা, বিষণ্ণতা এবং ঘুমের সমস্যা হওয়ার প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। যদিও এসব সমস্যার সরাসরি কারণ হিসেবে স্মার্টফোন ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবে দুইয়ের মধ্যে একটি শক্ত সম্পর্ক রয়েছে। শিশু-কিশোরদের দীর্ঘমেয়াদী পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ১২ বছর বয়সে প্রথম স্মার্টফোন ব্যবহার শুরু করা শিশুদের বিষণ্ণতায় ভোগার সম্ভাবনা ৩০% বেশি, স্থূলতার ঝুঁকি ৪০% বেশি এবং ঘুমের সমস্যায় ভোগার হার প্রায় ৬০% বেশি। বিশেষজ্ঞরা জানান, ১২ বছর বয়সের আগেই স্মার্টফোন ব্যবহারে শিশুদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। ভিডিও দেখা, গেম খেলা ও সোশ্যাল মিডিয়ায় অতিরিক্ত সময় কাটানোর ফলে তাদের শারীরিক সক্রিয়তা কমে যায়, যা স্থূলতা বাড়ায়। একই সঙ্গে স্ক্রিনের সামনে দীর্ঘ সময় কাটানোয় অস্বাস্থ্যকর খাবারের অভ্যাস তৈরি হয়, যা অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি আরও বাড়ায়। বিষণ্ণতার ক্ষেত্রেও একই ধরনের প্রভাব দেখা গেছে। অল্প বয়সী ব্যবহারকারীরা অনলাইনে অন্যদের সঙ্গে নিজেদের তুলনা করে মানসিক চাপের মধ্যে পড়ে, কেউ কেউ সাইবার বুলিংয়েরও শিকার হয়, যা বিষণ্ণতার ঝুঁকি বাড়ায়। তাছাড়া, স্মার্টফোনের নীল আলো রাতে মেলাটোনিন উৎপাদনে বাধা দেয়, ফলে ঘুমের মান কমে যায়। এই ঘুমের অভাব বিষণ্ণতা ও স্থূলতার সমস্যাকে আরও জটিল করে তোলে।   গবেষণার সার্বিক ফল বলছে, ১২ থেকে ১৩ বছর বয়সের মধ্যে স্মার্টফোন ব্যবহার শুরু করা শিশুরা মানসিক স্বাস্থ্য, শারীরিক অবস্থা ও ঘুমের ক্ষেত্রে বেশি ঝুঁকির মুখে পড়ে। যে শিশুরা এই বয়সের আগে ফোন ব্যবহার করে না, তাদের তুলনায় এসব সমস্যা তাদের মধ্যে অনেক বেশি প্রকট হতে পারে।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৭, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত

ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ঘিরে সংশয়, তফসিল চূড়ান্তে আজ ইসির বৈঠক

ছবি: সংগৃহীত

তফসিল ঘোষণা নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি : ইসি সচিব

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই অভ্যুত্থানের ১১৪ শহীদের পরিচয় শনাক্তে আজ মরদেহ উত্তোলন

ছবি: সংগৃহীত
মঙ্গলবার ঢাকায় অবতরণের শিডিউল চেয়েছে জার্মান এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

গুরুতর অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেওয়ার উদ্দেশ্যে জার্মানি থেকে ভাড়া করা একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আগামী মঙ্গলবার ঢাকায় পৌঁছানোর অনুমতি চেয়েছে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জার্মান এয়ারলাইন্স এফএআই এভিয়েশন গ্রুপের আবেদনে ৯ ডিসেম্বর ঢাকায় অবতরণ এবং ১০ ডিসেম্বর লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগের সময়সূচি চাওয়া হয়েছে।   প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হলেও তিনি চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন। উন্নত চিকিৎসার উদ্দেশে শুক্রবার কাতার আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে লন্ডনে নেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু কারিগরি ত্রুটির কারণে উড়োজাহাজটি ঢাকায় আসতে পারেনি। পরে কাতার সরকারের সহযোগিতায় জার্মানি থেকে একটি বিকল্প এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনো দীর্ঘ বিমানযাত্রার উপযোগী হয়নি বলে শনিবার চিকিৎসকরা জানান। তাঁদের মতে, শারীরিক অবস্থা উন্নতি হলেই তাঁকে লন্ডনে নেওয়া হবে। জার্মানির নুরেমবার্গভিত্তিক এফএআই এভিয়েশন গ্রুপের বোম্বার্ডিয়ার চ্যালেঞ্জার (CL-60) সিরিজের এই দুই ইঞ্জিনের জেট উড়োজাহাজটি সম্পূর্ণ আধুনিক চিকিৎসাসুবিধাসম্পন্ন একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। এতে রয়েছে ভেন্টিলেটর, মনিটরিং ইউনিট, ইনফিউশন পাম্প, অক্সিজেন সিস্টেমসহ জরুরি চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব সরঞ্জাম। পাশাপাশি থাকবেন অভিজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স এবং প্যারামেডিকস, যারা আকাশপথে রোগী পরিবহনে বিশেষজ্ঞ।   এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি কোন তারিখে ঢাকায় আসবে এবং ঠিক কবে খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়া হবে তা এখনো চূড়ান্তভাবে জানানো সম্ভব হয়নি। তবে প্রস্তুতি অব্যাহত আছে এবং বিষয়টি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে সংশ্লিষ্ট সবাই।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৭, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কে চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ

ছবি: সংগৃহীত

খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রা শারীরিক অবস্থার ওপরই নির্ভর করছে

ছবি : সংগৃহীত

বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই বিতরণ করা হবে : গণশিক্ষা উপদেষ্টা

ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশের সঙ্গে সমতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার সম্পর্ক চায় ভারত : প্রণয় ভার্মা

বাংলাদেশের সঙ্গে সমতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে একটি স্থিতিশীল, ইতিবাচক, গঠনমূলক, ভবিষ্যতমুখী ও পারস্পরিক উপকারী সম্পর্ক গড়তে চায় ভারত। দুই দেশের জনগণই এই সম্পর্কের প্রধান অংশীদার— এমন মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) ঢাকার ভারতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে বর্ণাঢ্য আয়োজনে মৈত্রী দিবসের ৫৪তম বার্ষিকী উদযাপন করে ভারতীয় হাইকমিশন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা দিনটিকে ভারত–বাংলাদেশ সম্পর্কের ইতিহাসে এক ‘অমোচনীয় মাইলফলক’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ভারত চায় এমন একটি সম্পর্ক, যা হবে স্থিতিশীল, ইতিবাচক ও গঠনমূলক— ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাবে এবং উভয় দেশের মানুষের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। জনগণের প্রত্যাশা পূরণে দুই দেশ ভবিষ্যতে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। ভার্মা বলেন, অতীতের যৌথ ত্যাগ আমাদের নতুন লক্ষ্য বাস্তবায়নের অনুপ্রেরণা। দুই দেশ একসঙ্গে এগোলে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি আরও সুদৃঢ় হবে। উল্লেখ্য, মৈত্রী দিবস স্মরণ করে ১৯৭১ সালের সেই ঐতিহাসিক দিনটিকে— যখন ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার মাত্র ১০ দিন আগে দেওয়া সেই সমর্থন দুই দেশের বন্ধুত্বের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত। ​

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৬, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত

সামনের নির্বাচন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য বড় পরীক্ষা : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

সীমিত আকারে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে

চিনি আমদানি বন্ধ, আগে দেশি কলের চিনি বিক্রি হবে: শিল্প উপদেষ্টা

0 Comments