অবৈধ মোবাইল হ্যান্ডসেটের ব্যবহার রোধ ও টেলিযোগাযোগ খাতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আগামী ১৬ ডিসেম্বর চালু হচ্ছে ন্যাশনাল ইক্যুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) সিস্টেম। এতে দেশের নেটওয়ার্কে নিবন্ধনবিহীন বা আনঅফিসিয়াল ফোনের ব্যবহার বন্ধ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) বোর্ডরুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
তিনি বলেন, এনইআইআর চালুর মাধ্যমে দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে। এটি এমন একটি কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা, যেখানে প্রতিটি মোবাইল হ্যান্ডসেটের আন্তর্জাতিকভাবে অনুমোদিত আইএমইআই নম্বর ব্যবহারকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও সিমের সঙ্গে যুক্ত করে নিবন্ধিত করা হবে। ফলে বৈধ ও অবৈধ হ্যান্ডসেট সহজে শনাক্ত করা যাবে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, এই ব্যবস্থা চালু হলে অবৈধভাবে আমদানিকৃত বা নকল ফোনের ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ হবে। এতে সরকার প্রতিবছর বিপুল রাজস্ব ক্ষতি থেকে রক্ষা পাবে এবং দেশীয় মোবাইল উৎপাদন শিল্প আরও সুরক্ষিত হবে। পাশাপাশি, চুরি বা অপরাধমূলক কাজে ব্যবহৃত ডিভাইস শনাক্ত ও ব্লক করা সম্ভব হবে, যা অপরাধ দমনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
তিনি আরও বলেন, এনইআইআর শুধু প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা নয়, এটি নাগরিকের নিরাপত্তা, রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা ও টেলিযোগাযোগ খাতের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জাতীয় অঙ্গীকার।
এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে বিটিআরসির পাশাপাশি দেশের চার মোবাইল অপারেটর— গ্রামীণফোন, রবি আজিয়াটা, বাংলালিংক ও টেলিটক- নিজ নিজ ইক্যুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (ইআইআর) সিস্টেম উন্নয়নে কাজ করছে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, এনইআইআর চালুর ফলে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) জালিয়াতি, সিম প্রতারণা ও স্ক্যাম প্রতিরোধ সম্ভব হবে। একই সঙ্গে ইকেওয়াইসি যাচাই আরও শক্তিশালী হবে, নিরাপত্তা জোরদার হবে এবং রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পাবে।
তিনি উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের আহ্বান জানান ১৬ ডিসেম্বর থেকে টেলিকম খাতের নতুন, নিরাপদ ও স্বচ্ছ যুগে প্রবেশ সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করতে এবং বৈধ হ্যান্ডসেট ব্যবহারে উৎসাহিত করতে।
এ সময় বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারীসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।
মালয়েশিয়ার সেলানগর রাজ্যের সেলায়াং বারু এলাকায় বড় ধরনের অভিযানে আটক হয়েছে বাংলাদেশিসহ ৮৪৩ জন অবৈধ অভিবাসী। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাত ৮টা থেকে সেলায়াং বাজার ও তানি মার্কেটে এ অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মোট ১ হাজার ১১৬ জনের কাগজপত্র যাচাই করা হয়। বৈধ নথি না থাকায় ৮৪৩ জনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তানের নাগরিকও আছেন। তবে কতজন বাংলাদেশি— তা এখনো জানায়নি কর্তৃপক্ষ। অভিযানে নেতৃত্ব দেন সেলানগরের মুখ্যমন্ত্রী আমিরুদিন শারি। তিনি বলেন, রাজধানীর কাছে হওয়ায় এলাকায় অনেক বিদেশি শ্রমিক অবৈধভাবে থাকছিলেন এবং অনেকে রাস্তার পাশে অনুমতি ছাড়া ব্যবসা করছিলেন। জননিরাপত্তার জন্য ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করেই অভিযান চালানো হয়েছে। আটকদের মধ্যে ৩৫ জন নারী রয়েছেন। সবার বয়স ২১ থেকে ৫৩ বছরের মধ্যে। তাদের বিরুদ্ধে ওভারস্টে, বৈধ পরিচয়পত্র না থাকা ও জাল কাগজ ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে। ৩৫৮ সদস্যের সমন্বয়ে পরিচালিত এ অভিযানে ইমিগ্রেশন, পুলিশ, সেনাবাহিনী ও জাতীয় নিবন্ধন বিভাগের সদস্যরা অংশ নেন। এছাড়া মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে দু’জন মালয়েশীয়ও আটক হয়েছেন। সব আটক অভিবাসীকে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য সেমেনিহ ইমিগ্রেশন ডিপোতে পাঠানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, অবৈধ কর্মী নিয়োগকারীদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ভবিষ্যতেও এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে মাধ্যমিকের শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে স্থগিত হওয়া বার্ষিক পরীক্ষার একটি আজ শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে নেয়া হচ্ছে। একাডেমিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বিশেষ ব্যবস্থায় আজকের এ পরীক্ষার আয়োজন করেছে কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে ছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পরিদর্শক ও দায়িত্বপ্রাপ্তদের উপস্থিতিও ছিল সন্তোষজনক। সব মিলিয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই অনুষ্ঠিত হয় পরীক্ষাগুলো। তবে অভিভাবকদের একটি অংশ বলছেন, শিক্ষকদের আন্দোলনের জেরে পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদেরকে জিম্মি করে দাবি আদায়ের চেষ্টা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এতে মানসিক চাপের মুখে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলমান সেশনজট কাটাতে পরীক্ষার্থীদের সুবিধা ও সময়সূচি স্বাভাবিক রাখতেই ছুটির দিনে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে পাবনা, সিলেটসহ কয়েক জেলায় কাল নেয়া হবে স্থগিত হওয়া বার্ষিক পরীক্ষার একটি।
দেশে গ্যাস উৎপাদন বাড়াতে বড় ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কুমিল্লার শ্রীকাইল, পাবনার মোবারকপুর ও সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে তিনটি নতুন অনুসন্ধান কূপ খননে ১ হাজার ১৩৬ কোটি ২৫ লাখ টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ প্রস্তাবিত এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)। এর লক্ষ্য শিল্প ও গৃহস্থালি খাতে ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা মোকাবিলায় দেশীয় গ্যাসের সরবরাহ শক্তিশালী করা। সরকারি নথি অনুযায়ী, ‘তিনটি অনুসন্ধান কূপ খনন (শ্রীকাইল ডিপ-১, মোবারকপুর ডিপ-১ ও ফেঞ্চুগঞ্জ সাউথ-১)’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০২৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন হবে। প্রকল্পের অর্থায়নের মধ্যে সরকার দেবে ৯০৯ কোটি টাকা এবং বাপেক্সের নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে ২২৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা। বাপেক্সের ২০টি নতুন কূপ খনন পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এই তিন কূপের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি একনেকের সর্বশেষ সভায় প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় সরকার। একনেক সভা শেষে প্রকল্প সম্পর্কে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, নতুন গ্যাস অনুসন্ধান ও কূপ খননের ঘাটতি দীর্ঘদিনের সমস্যা। দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রতিটি সভাতেই অন্তত একটি বা দুটি গ্যাস প্রকল্প থাকছে। তিনি জানান, আমরা এখন শুরু করলেও এক বছরের মধ্যে গ্যাস পাওয়া যাবে না। কিন্তু শুরু না করলে কখনোই সেই লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, প্রথমবারের মতো বাপেক্সকে খনন ও পরবর্তী ধাপের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনার অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা একটি দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগের অংশ। প্রকল্প নকশা অনুযায়ী, শ্রীকাইল ডিপ-১ ও মোবারকপুর ডিপ-১ কূপ খনন করা হবে ৬ হাজার মিটার গভীরে এবং ফেঞ্চুগঞ্জ সাউথ-১ কূপ খনন হবে ৪ হাজার মিটার গভীরতায়। কাজের মধ্যে থাকবে রিগ মোবিলাইজেশন–ডিমোবিলাইজেশন, রিগ ফাউন্ডেশন নির্মাণ, খনন, পরীক্ষামূলক উত্তোলন এবং কূপ সম্পন্ন করার সব সেবা। বিশেষ করে শ্রীকাইল ও মোবারকপুরের গভীর দুটি কূপের জন্য পরামর্শক নিয়োগের পরিকল্পনাও রয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বাসসকে বলেন, বাপেক্সের সংগৃহীত বিস্তৃত ভূতাত্ত্বিক তথ্য ও থ্রি-ডি সিসমিক জরিপ বিশ্লেষণের পর কূপ খননের স্থান চূড়ান্ত করা হয়েছে। তিনটি কাঠামোতেই উল্লেখযোগ্য গ্যাস মজুদের সম্ভাবনা অত্যন্ত শক্তিশালী বলে মূল্যায়ন করা হচ্ছে। বাণিজ্যিক মজুত পাওয়া গেলে তিন কূপে মোট সম্ভাব্য স্থাপিত গ্যাসের (জিআইআইপি) পরিমাণ হবে প্রায় ১,৬৯৬.৩৬ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ)। এর মধ্যে প্রায় ১,০১৮.১৪ বিসিএফ উত্তোলনযোগ্য হতে পারে। নীতিনির্ধারকদের মতে, এটি দেশের দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) ২০২৫ সালের ৮ জুলাই প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে অনুমোদনের সুপারিশ করে। তারা সময়মতো বাস্তবায়ন, পেট্রোবাংলার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় এবং সাফল্যের হার বাড়াতে আধুনিক খনন প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করে। জ্বালানি বিশ্লেষকদের মতে, জাতীয় গ্যাস সরবরাহব্যবস্থার ওপর ক্রমবর্ধমান চাপের প্রেক্ষাপটে এই উদ্যোগ অত্যন্ত সময়োপযোগী। শিল্প বিস্তার ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের চাহিদা বাড়তে থাকায় দেশের আমদানিনির্ভরতা বেড়েই চলেছে। নতুন দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার হলে তা আমদানি ব্যয় কমাতে এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাপেক্স সম্ভাব্য গ্যাসসমৃদ্ধ এলাকায় বেশ কয়েকটি টু-ডি ও থ্রি-ডি সিসমিক জরিপ সম্পন্ন করেছে এবং আরও কয়েকটি সম্ভাব্য কাঠামো শনাক্ত করেছে। একনেক অনুমোদিত নতুন খনন উদ্যোগ সরকারের জ্বালানি খাতের রোডম্যাপ বাস্তবায়নে নতুন গতি আনবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্টরা। পাশাপাশি এটি বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতেও ভূমিকা রাখবে বলে তাঁদের প্রত্যাশা। সূত্র: বাসস