শীত মৌসুমে সাধারণত ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে যায় কিন্তু টানা দুই বছর ধরে শীতেও ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়ছে। সরকারি তথ্য বলছে গত বছরের মতো এবারও নভেম্বরেই ডেঙ্গুর সর্বোচ্চ সংক্রমণ হতে পারে। এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ মারা গেছেন ৩০৭ জন। তাদের মধ্যে ১৫৩ জন কর্মক্ষম বয়সের মানুষ (২১-৪৫ বছর) এবং ৭৭ জন ২০ বছরের কম বয়সী।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে চলতি বছরের অক্টোবরে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা আগস্টের দ্বিগুণ। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই মারা গেছেন ২৯ জন হাসপাতালে ভর্তি ৬ হাজার ৬৫২ জন। এই ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে রোগীর সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। ২০২৪ সালে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ২১১ জন যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ হয়েছিল নভেম্বরে। এবারও একই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে যা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে।
জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. মুশতাক হোসেন বলেন নভেম্বরে ডেঙ্গুর বিস্তার কমার সম্ভাবনা খুবই কম। গ্রামাঞ্চলে এডিস মশা ছড়িয়ে পড়েছে কিন্তু কার্যকর নিয়ন্ত্রণ নেই। স্বাস্থ্য ও স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ভয়াবহ পরিস্থিতি ডেকে আনছে। তিনি আরও বলেন ডেঙ্গু এখন জরুরি পরিস্থিতি। সামান্য জ্বর বা সর্দি-কাশিকেও গুরুত্ব দিতে হবে পরীক্ষা করাতে হবে সঙ্গে সঙ্গে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী ২১–৪৫ বছর বয়সী মৃত্যু ১৫৩ জন ২০ বছরের কম ৭৭ জন ৪৬–৬০ বছর বয়সী ৫২ জন ৬০ বছরের ওপরে ২৪ জন এবং ১০ বছরের নিচে শিশু ২২ জন। অক্টোবরে ছিল সর্বোচ্চ সংক্রমণ ভর্তি ২২,৫২০ জন মৃত্যু ৮০ জন। সেপ্টেম্বরে ভর্তি ১৫,৮৬৬ মৃত্যু ৭৬। জুলাইয়ে ভর্তি ১০,৬৮৪ মৃত্যু ৪১।
সবশেষ তথ্যমতে এক দিনে নতুন করে ৪৮৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ১৮৯ জন ঢাকা উত্তর ৪৫ জন ঢাকা দক্ষিণ বরিশালে ৫৮ চট্টগ্রামে ৬৬ ময়মনসিংহে ৪৬ এবং ঢাকা বিভাগের অন্যান্য এলাকায় ৮৪ জন। চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৭৬ হাজার ৫১৪ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি যার মধ্যে ৬২ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ ও ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ নারী। ইতিমধ্যে ৭২ হাজার ৯৬৬ জন সুস্থ হয়ে ফিরেছেন তবে মারা গেছেন ৩০৭ জন।
সব মিলিয়ে শীতের আগমনের পরও ডেঙ্গুর বিস্তার কমছে না বরং আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যু। বিশেষজ্ঞরা বলছেন কার্যকর সমন্বয় ও দ্রুত পদক্ষেপ ছাড়া পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।
বেসরকারি স্কুল ও কলেজের জনবল কাঠামো এবং এমপিও নীতিমালা–২০২৫ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, এমপিওভুক্ত কোনো শিক্ষক বা কর্মচারী একই সময়ে একাধিক চাকরি বা কোনো লাভজনক পদে থাকতে পারবেন না। এই তালিকায় সাংবাদিকতা ও আইন পেশাও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নিয়ম ভঙ্গ করলে এমপিও বাতিলসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, পদ শূন্য থাকলে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের সুযোগ পাবেন। প্রয়োজনে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি কোন স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কতজন জনবল থাকবে, নিয়োগের যোগ্যতা, দায়িত্ব, শর্তসহ সব বিষয়ই ৬১ পৃষ্ঠার নীতিমালায় বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। নতুন নীতিমালা নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ এটিকে সময়োপযোগী বলে মনে করলেও কিছু ধারায় বৈষম্যের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন। এতে আর্থিক লাভজনক পদ বলতে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন, ভাতা, সম্মানীসহ যেকোনো ধরনের আর্থিক সুবিধা এমনকি সাংবাদিকতা বা আইন পেশা থেকে প্রাপ্ত আয়ও বোঝানো হয়েছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন দলের একাধিক প্রার্থী নিজ নিজ এলাকায় প্রচারণা চালাতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ছেন। গত বছরের ৫ আগস্ট বিভিন্ন থানা ও ফাঁড়ি থেকে লুট হওয়া অস্ত্রের বড় একটি অংশ এখনও উদ্ধার না হওয়া এবং রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর কারাগার থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জামিনে মুক্তি পাওয়ায় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। ইতোমধ্যে এসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর প্রভাবে কয়েকটি এলাকায় প্রকাশ্যে খুনসহ গুরুতর অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। চট্টগ্রামে একজন প্রার্থীর প্রচারণায় গুলিবর্ষণ ও প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। পাশাপাশি আগামী নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করতে পারে নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল, যারা সহিংসতা বা নাশকতার পথ নিতে পারে এ আশঙ্কাও রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশন কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দেবে, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। কারণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচালনার ক্ষমতা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে। ভোটের আগে-পরে মাত্র ৯ দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বাচন কমিশনের অধীন থাকবে। ফলে তফসিল ঘোষণার পর কোনো এলাকায় সংঘর্ষ হলে কমিশনকে নির্ভর করতে হবে অন্যান্য সংস্থার ওপর। এ অবস্থায় আজ অথবা আগামীকাল যেকোনো সময় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। বিশ্লেষকদের মতে, তফসিল ঘোষণার পর দলগুলো আসনভিত্তিক প্রচারণায় নেমে পড়বে এবং তখন প্রার্থী ও কর্মীরা নিরাপত্তা রক্ষায় সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারেন। তবে সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনাগুলো যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেজন্য সরকারকে আরও সতর্ক ও কঠোর হতে হবে। তারা মনে করছেন, ভোটের সময় পর্যন্ত যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের সহিংসতা পরিস্থিতি বদলে দিতে পারে। ঝুঁকিপূর্ণ আসনগুলোতে সেনা টহল বাড়ানোর পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না, ফলে ভোটকে ব্যাহত করার চেষ্টা করার আশঙ্কা রয়েছে। দলটির শীর্ষ ব্যক্তির সাম্প্রতিক বক্তব্যও এ ইঙ্গিত দেয় যে তফসিল ঘোষণার পর তারা বড় ধরনের আন্দোলন বা নাশকতার চেষ্টা করতে পারে। নির্বাচন কমিশন অবশ্য জানিয়েছে, কেউ নির্বাচন প্রতিহত করতে চাইলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের ভিন্ন অবস্থান পরিস্থিতিকে আরও অনিশ্চিত করে তুলেছে। গত বছরের অভ্যুত্থানের পর যে ঐক্য দেখা গিয়েছিল, প্রার্থী ঘোষণার সময় তা দুর্বল হয়ে পড়েছে। ছাত্রদের দল এনসিপি শেষ মুহূর্তে বড় জোট থেকে সরে গেছে। জাতীয় পার্টিও আলাদা জোট গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যদিও বেশ কিছু রাজনৈতিক দল তাদের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে। এসব কারণে নির্বাচনী পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে, তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের মতে, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি দরকার। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। একই সঙ্গে মাঠ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারেও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রত্যাশা, তফসিল ঘোষণার পর পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে। তবে বিভিন্ন এলাকায় প্রার্থীর প্রচারণায় বাধার মতো ঘটনাগুলো পুনরাবৃত্তি হলে জটিলতা বাড়তে পারে। টহল জোরদার হলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে পারে বলেও আশা করা হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, তফসিল আজ বা কাল ঘোষিত হলে দেশ দ্রুতই ভোটমুখী পরিবেশে ফিরবে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও উন্নতি পেতে পারে। তবে তফসিল পেছালে নির্বাচন পিছিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে, যা সামগ্রিক পরিস্থিতিকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে।
ইতালি থেকে ইউরোফাইটার টাইফুন যুদ্ধবিমান কিনতে যাচ্ছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী। এ বিষয়ে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও ইতালির প্রতিরক্ষা ও মহাকাশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান লিওনার্দো এসপিএ'র মধ্যে লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই) বা প্রাক-চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে। বিমান বাহিনীকে আধুনিক ও শক্তিশালী করার পথে এটি একটি বড় পদক্ষেপ। আজ মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বিমান বাহিনী সদর দফতরে বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রোর উপস্থিতিতে এই এলওআই স্বাক্ষরিত হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)। এতে বলা হয়, এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার এবং ইতালির সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সম্মুখসারিতে যু্দ্ধে অংশগ্রহণকারী অত্যাধুনিক মাল্টি-রোল কমব্যাট এয়ারক্রাফটের অংশ হিসেবে এই এলওআইয়ের আওতায় লিওনার্দো এসপিএ বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে 'ইউরোফাইটার টাইফুন' যুদ্ধবিমান সরবরাহ করবে।