অন্যান্য

জীবনে বরকত লাভের ৮ উপায়

খবর৭১ ডেস্ক, নভেম্বর ০৫, ২০২৫ 0

বরকত শব্দটির আরবি ‘বারাকাহ’। এর অর্থ ‘আশীর্বাদ’, ‘প্রাচুর্য’ বা ‘কল্যাণ বৃদ্ধি’। এর দ্বারা বোঝানো হয় আল্লাহর পক্ষ থেকে কোনো কিছুতে বরকত বা কল্যাণ দেওয়া, যা অল্প সময়েই অধিক ফল দেয় বা দীর্ঘস্থায়ী হয়। এটি আধ্যাত্মিক শক্তি ও সমৃদ্ধির একটি ধারণা; যা জীবন, সম্পদ, স্বাস্থ্য বা সময়ের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে হতে পারে।

অল্প চেষ্টায় কোনো কিছু লাভ করা বা দীর্ঘ সময় ধরে কোনো কিছু অটুট থাকলে তাকেও বরকত বলা হয়।

জীবনে উন্নতি ও শান্তির জন্য অনেকেই কঠোর পরিশ্রম করেন, বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করেন। তবু মনে হয় ঘরে যেন কোনো বরকত নেই, বরকত পাওয়া যাচ্ছেই না। আয়ে, শান্তিতে, এমনকি ভালো কাজেও কোনো ফল আসছে না। তখন তাঁরা ভীষণ দুঃখিত ও হতাশ হয়ে পড়েন।

আসলে বরকত মানে তো শুধু কঠোর পরিশ্রম করার ফল বা কোনো কিছু পরিমাণে অধিক হওয়াই নয়; বরং আল্লাহর সন্তুষ্টির ফলে কল্যাণের মাধ্যমে সেগুলো বৃদ্ধি পাওয়া, দীর্ঘ সময় ধরে থাকাই বরকত।

যে বিষয়গুলো আল্লাহ পছন্দ করেন, সেগুলোর মাধ্যমেই জীবনে বরকত আসে। যেসব উপায়ে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে এবং রাসুল (সা.)-এর নির্দেশিত পথে বরকত অর্জনের চেষ্টা করা হয়, সেগুলোই হচ্ছে শরিয়াহসম্মত বরকত।

নিচে শরিয়াহসম্মতভাবে বরকত লাভের কিছু উপায় জানা যাক।

১. কথার মাধ্যমে বরকত: কোরআন তিলাওয়াত ও জিকিরের মাধ্যমে বরকত পাওয়া যায়। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা কোরআন পাঠ করো, কেননা কিয়ামতের দিন কোরআন তার পাঠকের জন্য সুপারিশকারী হয়ে আসবে’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১,৯১০)।

রাসুল (সা.) আরও বলেন, ‘যে ঘরে কোরআন তিলাওয়াত করা হয়, সেখানে প্রশান্তি ও বরকত নাজিল হয়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৭৯৬)

২. কাজের মাধ্যমে বরকত: ইলম অর্জন করা ও তার ওপর আমল করার মাধ্যমে বরকত পাওয়া যায়। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইলম অর্জনের পথে চলে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের পথ সহজ করে দেন’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৬৯৯)।

৩. অবস্থার মাধ্যমে বরকত: একসঙ্গে বসে খাওয়া ও ‘বিসমিল্লাহ’ বলে খাওয়া শুরু করার মাধ্যমে বরকত পাওয়া যায়। ওহশি ইবনে হারব (রা.) থেকে বর্ণিত, সাহাবাগণ বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমরা খাই, কিন্তু পেট ভরে না।’

তিনি বললেন, ‘তোমরা একত্রে বসে “বিসমিল্লাহ” বলে আহার করো, তাহলে তাতে তোমাদের জন্য বরকত দান করা হবে।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৩,৭৬৪)

৪. স্থানে বরকত: মসজিদে হারাম, মসজিদে নববি, মসজিদুল আকসা, মক্কা, মদিনা, মসজিদে জামাতে নামাজ পড়া, ইতিকাফ করা, ইলমি মজলিশে উপস্থিত হওয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে বরকত আশা করা।

যে ঘরে কোরআন তিলাওয়াত করা হয়, সেখানে প্রশান্তি ও বরকত নাজিল হয়।
সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৭৯৬
আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমার মসজিদে (মসজিদে নববি) এক নামাজ মসজিদে হারাম ছাড়া অন্যান্য মসজিদে এক হাজার নামাজ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। আর মসজিদে হারামে (কাবার মসজিদে) একটি নামাজ অন্যান্য মসজিদে এক লাখ নামাজ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১,৪০৬)

৫. সময়ে বরকত: সময় দ্বারা বরকতের আশা করা মানে যেগুলোকে শরিয়তে বিশেষ ফজিলত, বরকত ও গুনাহ মাফ ইত্যাদি বিশেষণ দ্বারা বিশেষিত করা হয়েছে।

যেমন লায়লাতুল কদর, রমাদানের শেষ দশক, জিলহজ মাসের প্রথম দশক, জুমার দিন, প্রতিটি রাতের শেষ তৃতীয়াংশ, ফজরের পর ইত্যাদি দিন আর সময়গুলো। এদিন আর সময়গুলোতে ইবাদতের মাধ্যমে প্রচুর বরকত পাওয়া যায়। তবে এসব ক্ষেত্রে বরকতের অনুসন্ধান করতে হবে শুধু রাসুল (সা.)–এর নির্দেশিত পদ্ধতি অনুসরণের মাধ্যমেই।

আল্লাহ কদরের রাত সম্পর্কে বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি এটি নাজিল করেছি বরকতময় রাতে...’ (সুরা দুখান, হাদিস: ৪৪:৩)।

এ ছাড়া রাসুল (সা.) তাঁর উম্মতদের জন্য সকালবেলার বরকতের দোয়া করতেন। সাখ্‌র ইবনে ওয়াদাআহ গামেদি (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘হে আল্লাহ, তুমি আমার উম্মতের জন্য সকালকে বরকতময় করুন।’

আল্লাহর রাসুল যখন কোথায় সৈন্যদলকে অভিযানে পাঠাতেন, তখন তাদের সকালে রওনা করতেন। সাখ্‌র ছিলেন ব্যবসায়ী। সুতরাং তিনি তাঁর ব্যবসার পণ্য সকালেই প্রেরণ করতেন। ফলে তিনি (এর বরকতে) ধনী হয়ে গিয়েছিলেন এবং তাঁর মাল প্রচুর হয়েছিল। (আবু দাউদ, হাদিস: ২,৬০৮; তিরমিজি, হাদিস: ১,২১২; সহিহ তারগিব, হাদিস: ১,৬৯৩)

তাই যে ব্যক্তি ভোরে উঠে কাজে লেগে যায়, তার কাজে আল্লাহ বরকত দান করেন।

৬. খাদ্যে বরকত: জয়তুন তেল, মধু, দুধ, কালিজিরা ও জমজমের পানি—এগুলো গ্রহণের মাধ্যমে বরকত পাওয়া যায়। জমজমের পানি রোগ নিরাময়ের উপকরণ ও বরকতময়। রাসুল (সা.) জমজমের পানি সম্পর্কে বলেন, ‘নিশ্চয় তা বরকতময়’ (মুসলিম, হাদিস: ২,৪৭৩)।

নবীজি (সা.) কালিজিরা সম্পর্কে বলেছেন, ‘তোমরা এই কালিজিরা নিজেদের জন্য ব্যবহারকে বাধ্যতামূলক করে নাও। কেননা মৃত্যু ব্যতীত সব রোগের নিরাময় এর মধ্যে রয়েছে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩,৪৪৭)

এভাবে মধু নিয়ে ও অন্যান্য খাবার নিয়েও পবিত্র কোরআন ও হাদিসে নির্দেশনা দেওয়া আছে।

আল্লাহর রাসুল যখন কোথায় সৈন্যদলকে অভিযানে পাঠাতেন, তখন তাদের সকালে রওনা করতেন।
৭. পশুর মাধ্যমে বরকত: আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘ঘোড়ার কপালের কেশগুচ্ছে কল্যাণ রয়েছে কিয়ামত পর্যন্ত।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২,৬৫২)

আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রা.) আরও বলেন, ‘...যে ঘোড়াকে আল্লাহর রাস্তায় ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখে এবং চারণভূমি বা বাগানে প্রশস্ত রশিতে বেঁধে বিচরণ করতে দেয়, এই রশি যত প্রশস্ত এবং যত দূরত্বে ঘোড়া বিচরণ করতে পারে, সে তত বেশি প্রতিদান পায়। যদি ঘোড়া এ রশি ছিঁড়ে এক চক্কর অথবা দুটি চক্কর দেয়, তবে ওই ঘোড়ার প্রতিটি পদক্ষেপের প্রতিদান দেওয়া হয়’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৮৫৪)।

৮. বৃক্ষের মাধ্যমে বরকত: বৃক্ষরোপণ বা গাছ লাগানো একটি পুণ্যের কাজ। গাছের ফল কোনো মানুষ, পশু বা পাখি খেলে তার জন্য রোপণকারী সওয়াব ও বরকত পাবে। কারণ, এটি শুধু খাদ্যের উৎস নয়; বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি ও কল্যাণের মাধ্যম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যখন কোনো মুসলিম গাছ লাগায় অথবা কোনো ফসল বুনে আর মানুষ, পাখি বা পশু তা থেকে খায়, এটা রোপণকারীর জন্য সাদকা হিসেবে গণ্য হয়’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২,৩২০; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১,৫৫৩)।

এ ছাড়া কোরআন ও হাদিসে বেশ কিছু ফলের উল্লেখ আছে, যেমন ডালিম, খেজুর, আঙুর, ডুমুর, জলপাই ইত্যাদি। পবিত্র গ্রন্থে এগুলোর পুষ্টিগুণ ও উপকারিতার কথা বলা হয়েছে।

খেজুর হলো বহুগুণে গুণান্বিত বরকতময় একটি ফল। ইফতারে খেজুর রাখা সুন্নাহ। এ ছাড়া সাহ্‌রিতে খেজুর খাওয়াকে ‘শ্রেষ্ঠ সাহ্‌রি’ বলা হয়েছে, যা ইবাদতের কাজে সহায়ক হয়। খেজুরগাছ আবাদ করার মাধ্যমেও আল্লাহর কাছে বরকতের আশা করা যায়।

উপরিউক্ত মাধ্যমগুলোতে আমরা দেখতে পাই, আমাদের জীবনে বরকত খুঁজে পাওয়ার মূল চাবিকাঠি হলো উত্তম নিয়ত ও শরিয়াহসম্মত পদ্ধতি।

সব কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এবং রাসুল (সা.)-এর নির্দেশিত পথে করলেই আমরা দুনিয়া ও আখিরাতে সফল হব। আমাদের ঘরে শান্তি, আর আয়ে, সম্পদে বরকত আসবে।

Popular post
হাইকোর্টের রুল জারি, কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতি কেন অবৈধ নয়

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে। 

কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতি বিতর্ক : উদ্বেগে দুই শতাধিক কর্মকর্তা

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।   

কৃষি ব্যাংকের ‘ভুয়া সিবিএ সভা’ ঘিরে চাঞ্চল্য

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে।  অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

হালিম হত্যার আসামিরা পলাতক, ধামাচাপা দিচ্ছে প্রশাসন

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।  কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

কৃষি ব্যাংকে ভুয়া সিবিএ নেতাদের কোটি টাকারও বেশি চাঁদাবাজি

অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।  

অন্যান্য

আরও দেখুন
ছবি : সংগৃহীত
দেশের তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রিতে নামল

মৌসুমের সবচেয়ে কম তাপমাত্রায় কাঁপছে উত্তরের জনপদ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া। হিমালয়ের নিকটবর্তী এই সীমান্ত জেলা গত কয়েক দিন ধরে যেন বরফচ্ছন্ন আবহের মুখোমুখি। তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে নেমে ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রিতে পৌঁছেছে। ঠান্ডা বাতাসে শীতের দাপটও বেড়ে চলেছে, ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৭৮ শতাংশ। এর আগে সকাল ৬টায় রেকর্ড হয় ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি। হিমালয়ঘেঁষা অঞ্চলে কয়েক দিন ধরে বইছে তীব্র হিমেল বাতাস। ভোরের রোদ ঝলমলে হলেও নেই তাপের উষ্ণতা। দিন-রাতের ঠান্ডায় গ্রামের মানুষের দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত হচ্ছে। শীতের হঠাৎ বাড়তি দাপটে সবচেয়ে বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ। দিনের বেলায় রোদ উঠলেও শীতের কামড় যেন কমছেই না। শীতজনিত রোগের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে রোগীর চাপও বৃদ্ধি পেয়েছে। বহির্বিভাগে প্রতিদিনই ভিড় করছেন নানা অসুস্থতায় ভোগা মানুষজন—যাদের বড় অংশই শিশু ও বৃদ্ধ। অবস্থা গুরুতর হলে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। সদরের এক ভ্যানচালক বলেন, এ কনকনে ঠান্ডায় সকালে ভ্যান নিয়ে বের হওয়া যায় না। খেটে খাওয়া মানুষের এভাবে খুব কষ্টে দিন কাটছে। পাথর শ্রমিক মিজানুর রহমান জানান, সকালে ঠান্ডা পানিতে পাথর তুলতে খুব কষ্ট হয়। পরিবারের কথা ভেবেই এই ঠান্ডায় মহানন্দা নদীতে নামতে হয়। কী আর করার আছে? তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৭৮ শতাংশ। সকাল ৬টায় নেমেছিল ৯ দশমিক ২ ডিগ্রিতে। জেলায় এখন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। সামনের দিনে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে বলেও তিনি জানান। উত্তরবঙ্গজুড়ে শীতের তীব্রতায় মানুষ এখন সত্যিকারের শীতের দাপট টের পাচ্ছে।

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ১১, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত

এই নির্বাচনের লড়াই সবচেয়ে কঠিন : মির্জা ফখরুল

ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা-৮: মির্জা আব্বাসের আসন খালি, এনসিপির তালিকায় নেই আলোচিত রিকশাচালক সুজন

শীতকালে খুশকি দূর করার সহজ সমাধান

নিরাপত্তা নিশ্চিতে গৃহকর্মী রাখার আগে জানতে হবে ৫ বিষয়

সম্প্রতি ঢাকার মোহাম্মদপুরে ছুরিকাঘাতে মা লায়লা আফরোজ ও মেয়ে নাফিজা হত্যার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ সন্দেহ করছেন আয়েশা তরুণী যে মাত্র চারদিন আগে অস্থায়ী গৃহকর্মী হিসেবে তাদের বাসায় কাজ নিয়েছিলেন। তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার আসল কারণ জানা যাবে বলে জানান পুলিশ। এর আগেও গৃহকর্মীর মাধ্যমে এমন হত্যার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সেসব ঘটনায় দেখা যায় গৃহকর্মী রাখার আগে নির্দিষ্ট নিয়মগুলো অনুসরণ করা হয়নি। তাই নির্মম ঘটনা এড়াতে কিছু বিষয় জেনে রাখা খুব দরকার- গৃহকর্মী রাখার আগে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিচে ৫টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দেয়া হলো যেগুলো আগে থেকেই যাচাই করা উচিত— ১. পরিচয় যাচাই ও নথি সংরক্ষণ: জাতীয় পরিচয়পত্র, গ্রামের ঠিকানা, অভিভাবকের নাম–সব তথ্য সংগ্রহ করুন। প্রয়োজন হলে মোবাইল নম্বর যাচাই করুন। এই তথ্যগুলোর কপি ঘরে সংরক্ষণ করে রাখুন।   ২. পূর্বের কাজের রেফারেন্স ও অভিজ্ঞতা: আগে কোথায় কাজ করেছে জানতে চান। পূর্বের নিয়োগকর্তার সঙ্গে ফোনে কথা বলে তার আচরণ, বিশ্বাসযোগ্যতা ও কাজের দক্ষতা সম্পর্কে জেনে নিন। ৩. স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও শারীরিক সক্ষমতা: সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা আছে কি না তা যাচাই করুন। রান্না, পরিষ্কার বা শিশুর যত্ন—যে কাজই করুক, সেগুলো করার মতো শারীরিক সক্ষমতা আছে কিনা দেখুন। দীর্ঘমেয়াদি কাজে হলে বেসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো ভালো। ৪. চাকরির শর্তাবলি লিখিতভাবে ঠিক করা: বেতন, কাজের সময়, সাপ্তাহিক ছুটি, দায়িত্ব–সব কিছু লিখিতভাবে ঠিক করে নিন। একটি কপি নিজের কাছে এবং একটি তার কাছে রাখুন। লিখিত শর্ত ভবিষ্যতে ভুলবোঝাবুঝি কমায় ও নিরাপত্তা বাড়ায়।   ৫. ঘরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও সীমাবদ্ধতা পরিষ্কার করা: কোন ঘরে প্রবেশ করা যাবে না, কোন জিনিস স্পর্শ করা যাবে না—এগুলো পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিন। ঘরের সিসিটিভি বা নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে তাকে আগেই জানান।  

জান্নাতুল ফেরদৌস জেমি ডিসেম্বর ১০, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত

প্রাথমিকের শিক্ষকদের জন্য ছুটি নিয়ে বড় দুঃসংবাদ

ছবি : সংগৃহীত

বিসিএস প্রিলিতে নম্বর বণ্টনে বড় পরিবর্তন

ছবি: সংগৃহীত

মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা শুক্রবার, মানতে হবে নির্ধারিত নির্দেশনা

ছবি: সংগৃহীত
অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা দ্রুত কমছে, ঝুঁকিতে চিকিৎসা

দেশে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা আশঙ্কাজনক হারে কমছে। এক বছরের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চিকিৎসা নিতে আসা প্রতি চার রোগীর একজনের দেহে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু শনাক্ত হয়েছে, যার বেশির ভাগই অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী। এর ফলে সাধারণ সংক্রমণও জটিল হয়ে উঠছে এবং মৃত্যুঝুঁকিও বাড়ছে।   বিশ্ব অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল সচেতনতা সপ্তাহ উপলক্ষে উপস্থাপিত ‘অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) প্রতিবেদন ২০২৪-২৫’-এ এই পরিস্থিতির বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানের প্রতিপাদ্য ছিল এখনই পদক্ষেপ নিন, বর্তমানকে রক্ষা করুন, ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত করুন। গত এক বছরে ৪৬ হাজার ২৭৯টি রোগীর নমুনা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বহুল ব্যবহারযোগ্য সিপ্রোফ্লোক্সাসিন, অ্যামোক্সিসিলিন, সেফট্রিয়াক্সোন ও জেন্টামাইসিন থেকে শুরু করে মেরোপেনেম ও টিগেসাইক্লিনের মতো শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিকও বহু ক্ষেত্রে কার্যকারিতা হারাচ্ছে। ২৪ শতাংশ নমুনায় (১১ হাজার ১০৮টি) জীবাণু শনাক্ত হয়; এর বড় অংশই উচ্চ প্রতিরোধী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করতে গিয়ে গবেষকরা জানান, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও ছত্রাকের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত ও নির্বিচার ব্যবহারের কারণে রেজিস্ট্যান্স দ্রুত বাড়ছে। ফলে সাধারণ ওষুধে সাড়া না দেওয়ায় চিকিৎসা দীর্ঘায়িত হচ্ছে, জটিলতা বাড়ছে এবং কিছু ক্ষেত্রে রোগীর জীবনের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সকে বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্যের অন্যতম বড় হুমকি উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞরা বলেন, অযথা অ্যান্টিবায়োটিক সেবন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে নিজে ওষুধ খাওয়া, অসম্পূর্ণ ডোজ গ্রহণ এবং প্রাণিসম্পদ খাতে অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত ব্যবহার এসব কারণেই জীবাণুগুলো দ্রুত শক্তিশালী হয়ে উঠছে। একসময় যে রোগ সহজেই সেরে যেত, এখন তা অনেক কঠিন হয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসার খরচ বাড়ছে, আইসিইউ ভর্তি ও মৃত্যুর হারও বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে মানবজাতি আবার সেই সময়ের মুখোমুখি হতে পারে যখন মানুষ ব্যাকটেরিয়ার কাছে পরাস্ত হতো। পার্থক্য শুধু একটাই এবার ওষুধ থাকবে, কিন্তু তা জীবাণুর বিরুদ্ধে কোনো কাজ করবে না।   এএমআরের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সচেতনতা, সঠিক চিকিৎসা-নীতি, দায়িত্বশীল ওষুধ ব্যবহার এবং গবেষণা সবকিছুকে সমন্বিতভাবে এগিয়ে নিতে হবে বলে মত দেন বক্তারা। তাদের মতে, দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখোমুখি হতে হবে।

মো: দেলোয়ার হোসাইন ডিসেম্বর ০৯, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত

ডেঙ্গুতে চার শতাধিক মানুষের প্রাণহানি

ছবি: সংগৃহীত

একটি দল ধর্মের নামে ট্যাবলেট বিক্রি করছে : সালাউদ্দিন

ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন এলে তসবিহ নিয়ে ঘোরা রাজনীতিকই ধর্মকে ব্যবহার করে : জামায়াত আমির

0 Comments