বিশ্ব

আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে কমপক্ষে ৯ জনের মৃত্যু

খবর৭১ ডেস্ক, নভেম্বর ০৩, ২০২৫ 0

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে কমপক্ষে নয় জন প্রাণ হারিয়েছে। ইতোপূর্বে আরেকটি ভয়াবহ ভূমিকম্পের কয়েক মাস পর এই প্রাকৃতিক দুর্যোগটিতে দেশটি পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার তথ্য অনুসারে, মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে কেন্দ্রস্থলে ২৮ কিলোমিটার (১৭ মাইল) গভীরতায় রাতে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে।

স্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র কামাল খান জাদরান জানিয়েছেন, বলখ প্রদেশে চার জন প্রাণ হারিয়েছে। 

তিনি আরো বলেন, প্রাদেশিক হাসপাতালও ১২০ জন আহত রোগীকে চিকিৎসা দিচ্ছে।

খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।

জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এনডিএমএ) মুখপাত্র মোহাম্মদুল্লাহ হামাদ বলেছেন, পার্শ্ববর্তী সামানগান প্রদেশে পাঁচ জন নিহত ও ১৪৩ জন আহত হয়েছেন।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আহতদের বেশিরভাগই চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে গেছেন।’

এর আগে ভূমিকম্পে পাহাড়ি আফগানিস্তানে দুর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অবকাঠামো, দুর্যোগ মোকাবেলায় বাধা সৃষ্টি করেছে— যার ফলে কর্তৃপক্ষ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা, এমনকি দিনের পর দিন দূরবর্তী গ্রামগুলোতে পৌঁছাতে পারেনি।

এএফপি’র সংবাদদাতা জানান, ভূমিকম্পের ফলে আফগানিস্তানের অন্যতম বৃহত্তম উত্তরাঞ্চলীয় শহর মাজার-ই-শরীফের বাসিন্দারা তাদের বাড়িঘর ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় রাস্তায় নেমে এসেছেন। 

ভূমিকম্পটির প্রচণ্ডতার বর্ণনা দিতে গিয়ে মাজারই-ই-শরীফের দক্ষিণে প্রায় ৪২০ কিলোমিটার দূরে রাজধানী কাবুলের সংবাদদাতারাও বলেছেন, ভূমিকম্পের সময় তারা কাবুল থেকেই কম্পন অনুভব করেছেন।

এটি তালেবান সরকারের জন্য সর্বশেষ প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এই সরকার ২০২১ সালে আফগানিস্তানের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে তিনটি বড় মারাত্মক ভূমিকম্পের সম্মুখীন হয়েছে। 

পাশাপাশি, দেশটির অর্থনীতির মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করা বিদেশী সাহায্যও নাটকীয়ভাবে হ্রাস পেয়েছে।
আগস্টে, দেশটির পূর্বে ৬.০ মাত্রার একটি অগভীর ভূমিকম্পে পাহাড়ি গ্রামগুলো নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় এবং ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি লোক মারা যায়।

২০২৩ সালে ইরান সীমান্তের কাছে পশ্চিম হেরাতে ও ২০২২ সালে পূর্ব নাঙ্গারহার প্রদেশে বড় ধরনের ভূমিকম্পে শত শত মানুষ মারা যায় এবং হাজার হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়।

জাতিসংঘ ও সাহায্য সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে যে আফগান জনগণের মধ্যে ক্ষুধা বাড়ছে।

খরা, ব্যাংকিং খাতের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এবং প্রতিবেশী ইরান ও পাকিস্তান থেকে লাখ লাখ আফগান নাগরিকের প্রত্যাবাসনের ফলে বিচ্ছিন্ন এই দেশটি মানবিক সংকটে ভুগছে।

আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প ঘটে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর প্রাকৃতিক দুর্যোগটি বেশি হয়, যেখানে ইউরেশিয়ান ও ভারতীয় টেকটোনিক প্লেট মিলিত হয়।

দশকের পর দশক ধরে যুদ্ধে বিধ্বস্ত এই প্রধানত গ্রামীণ দেশটির অনেক বাড়িঘর নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে তৈরি এবং এগুলোর কাঠামোও দুর্বল। 

দুর্গম গ্রামগুলোতে বন্ধুর পথঘাট দিয়ে যেতে প্রায়শই ঘণ্টার পর ঘণ্টা এমন কি দিনের পর দিন সময় লেগে যায়। 
এই কারণে দুর্যোগ বা খারাপ আবহাওয়ার সময় প্রায়শই গ্রামগুলো সাহায্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

Popular post
হাইকোর্টের রুল জারি, কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতি কেন অবৈধ নয়

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে। 

কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতি বিতর্ক : উদ্বেগে দুই শতাধিক কর্মকর্তা

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।   

কৃষি ব্যাংকের ‘ভুয়া সিবিএ সভা’ ঘিরে চাঞ্চল্য

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে।  অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

হালিম হত্যার আসামিরা পলাতক, ধামাচাপা দিচ্ছে প্রশাসন

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।  কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

কৃষি ব্যাংকে ভুয়া সিবিএ নেতাদের কোটি টাকারও বেশি চাঁদাবাজি

অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।  

ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কঠিন আইনি লড়াইয়ের মুখে বিবিসি, কী হবে এরপর?

বিবিসি ক্ষমা চাওয়ার পর যারা ভেবেছিলেন যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প মামলার হুমকি দেয়া বন্ধ করবেন তারা আসলে ভুল ধারণায় ছিলেন। মহাপরিচালক ও বার্তা প্রধানের পদত্যাগের পর বিবিসির চেয়ারম্যান সামির শাহ সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে 'আইনের আশ্রয় নিতে ভালোবাসেন' এমন ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের বিরুদ্ধে মি. ট্রাম্প যে পরিমাণ মামলা করেছেন তা থেকে সহজেই এর প্রমাণ পাওয়া যায়। জিবি নিউজে দেওয়া ট্রাম্পের সাক্ষাৎকার থেকে বোঝা যায় যে বিবিসির 'বিভ্রান্তিকর সম্পাদনা' নিয়ে তিনি খুবই আহত হয়েছেন। তখন তিনি বিবিসির বিরুদ্ধে যে পরিমাণ অর্থের জন্য মামলা করবেন বলে জানিয়েছিলেন, সেটিও বাড়িয়েছেন। শুক্রবার এয়ারফোর্স ওয়ানে থাকা সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, এই অঙ্কটা হবে 'এক থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের' মধ্যে। এখানে উল্লেখ্য যে, গত বছর যুক্তরাজ্যে লাইসেন্স ফি থেকে বিবিসির বার্ষিক আয় ছিলো তিন দশমিক আট বিলিয়ন ডলার। শুক্রবার ট্রাম্প বলেছেন, "আমার বলা শব্দ তারা (বিবিসি) পরিবর্তন করে দিয়েছে"। তিনি জানতে চান, "প্যানোরামা কেন 'সম্পূর্ণ ভিন্ন অর্থ' বোঝানোর জন্য তার বক্তৃতার দুটি ক্লিপ এক করেছে?" বিবিসি এ সম্পাদনাকে অনিচ্ছাকৃত বললেও তিনি সে বক্তব্য গ্রহণ করেননি। নভেম্বরের নয় তারিখে বিবিসি প্যানারোমার এক তথ্যচিত্রে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট মি. ট্রাম্পের একটি বক্তব্য ভুলভাবে সম্পাদনা নিয়ে সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করেন প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক টিম ডেভি এবং বার্তা প্রধান ডেবোরাহ টারনেস। বিবিসির ইতিহাসে একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি মুহূর্ত। এই প্রতিষ্ঠানটির টিকে থাকা কিংবা পতন নির্ভর করে এই সংবাদমাধ্যমটিকে কতটা নিরপেক্ষ হিসেবে দেখা হয় তার ওপর- বিশ্বজুড়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আস্থা যখন ক্রমে কমছে, সেই সময়ে বিবিসিকে একটি নির্ভরযোগ্য আস্থার প্রতীক হিসেবে দেখেন বহু মানুষ। তার পরিবর্তে, প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে এখন ঠিক উল্টো অভিযোগ উঠছে। ফলে একে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যয়বহুল ও প্রকাশ্য লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

খবর৭১ ডেস্ক, নভেম্বর ১৬, ২০২৫ 0

পবিত্র ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য তারিখ জানাল আরব আমিরাত

দুই বছরে লিবিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন ৭১৭১ বাংলাদেশী

লিবিয়া উপকূলে ২৬ বাংলাদেশি নিয়ে নৌকাডুবি, মৃত্যু ৪

উত্তোলন বাড়লে জ্বালানি তেলের দাম কমবে কি?

চলতি বছর বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের উৎপাদন আরও বাড়তে পারে। মার্কিন এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ইআইএ) জানিয়েছে, ২০২৫ সালে পরিশোধিতসহ মোট উৎপাদন গড়ে দৈনিক ১০ কোটি ৬০ লাখ ব্যারেল হতে পারে, যা আগের পূর্বাভাসের তুলনায় এক লাখ ব্যারেল বেশি। একই সময়ে বিশ্বব্যাপী ব্যবহার দাঁড়াতে পারে দৈনিক ১০ কোটি ৪১ লাখ ব্যারেলে। খবর রয়টার্সের। ইআইএ জানিয়েছে, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি থাকার কারণে জ্বালানি তেলের মজুত ২০২৬ সাল পর্যন্ত বাড়তে থাকবে। চলতি বছরের শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) মজুত হতে পারে ২৯৩ কোটি ব্যারেল এবং ২০২৬ সালের শেষ প্রান্তিকে ৩১৮ কোটি ব্যারেল পর্যন্ত পৌঁছাবে। সরবরাহ বৃদ্ধির কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে ব্রেন্ট ক্রুডের গড়মূল্য চলতি বছর ব্যারেলপ্রতি ৬৮ ডলার ৭৬ সেন্ট হতে পারে, যা গত বছরের ৮০ ডলারের তুলনায় কম। মার্কিন বাজারে ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) গড়মূল্য নেমে আসতে পারে ৬৫ ডলার ১৫ সেন্টে। যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি তেল উত্তোলন রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে। এ বছর দেশটিতে গড়ে দৈনিক উৎপাদন হতে পারে ১ কোটি ৩৫ লাখ ৯০ হাজার ব্যারেল, আর ২০২৬ সালে তা সামান্য কমে ১ কোটি ৩৫ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল হতে পারে।

খবর৭১ ডেস্ক, নভেম্বর ১৫, ২০২৫ 0

টানা পাঁচ সপ্তাহ ধরে কমছে পাম তেলের দাম

থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৮ বছরের সর্বনিম্নে

বিহারে অনেকটা এগিয়ে এনডিএ জোট

দিল্লিতে গাড়ি বিস্ফোরণে কাশ্মীরে গ্রেপ্তারকৃতদের যোগসাজশ খতিয়ে দেখছে পুলিশ

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির লালকেল্লার কাছে গাড়ি বিস্ফোরণের তিন দিন পর তদন্তকারীরা বলছেন, এ ঘটনার সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের সাম্প্রতিক অভিযানে গ্রেপ্তার সাত ব্যক্তির কোনো যোগসাজশ রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। তদন্তকারীরা বিবিসিকে বলেছেন, সম্প্রতি দিল্লির উপকণ্ঠে ফরিদাবাদ থেকে উদ্ধার হওয়া ২ হাজার ৯০০ কেজি বিস্ফোরকের সঙ্গেও এ বিস্ফোরণের কোনো সংযোগ রয়েছে কি না, গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। গত বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এক প্রস্তাবে দিল্লির ঘটনাটিকে ‘রাষ্ট্রবিরোধী শক্তির হাতে সংঘটিত একটি নৃশংস সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথম থেকেই এ ঘটনাকে ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, চক্রান্তকারীদের কেউ রেহাই পাবেন না, সবাইকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। একই সুর শোনা গেছে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কণ্ঠে। অমিত শাহ বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেক অপরাধীকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে’ তিনি সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ বলেছে, বিস্ফোরণের ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইন, বেআইনি কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ আইন, বিস্ফোরক আইন ও ফৌজদারি আইনের বিভিন্ন ধারায় মামলা হয়েছে। তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়েছে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এনআইএ) হাতে। এনআইএ বা দিল্লি পুলিশ—কেউই এখনো বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলন করেনি কিংবা বিবৃতি দেয়নি। এরই মধ্যে গণমাধ্যমে সূত্রের বরাতে বিভিন্ন তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে, যেগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করা যায়নি। ঘটনাটি নানা প্রশ্নও উঠছে। তবে তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, এ বিস্ফোরণের সঙ্গে কাশ্মীর পুলিশের সাম্প্রতিক গ্রেপ্তার অভিযান এবং ফরিদাবাদে অস্ত্র-বিস্ফোরক উদ্ধারের কোনো যোগসূত্র আছে কি না, সেটাই এখন মূল প্রশ্ন। গত সোমবার সন্ধ্যায় গাড়ি বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগে কাশ্মীর পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, কাশ্মীর, উত্তর প্রদেশ ও হরিয়ানা থেকে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন চিকিৎসকও রয়েছেন। পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়, ফরিদাবাদ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দুটি স্বয়ংক্রিয় রাইফেলসহ বিপুল অস্ত্র ও ২ হাজার ৯০০ কেজি বিস্ফোরক তৈরির উপাদান। পুলিশ এ ঘটনাকে ‘হোয়াইট কলার টেরর নেটওয়ার্ক’-এর অংশ হিসেবে উল্লেখ করে তদন্তের ধারাবাহিকতায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে। এনআইএ বিবিসিকে বলেছে, তারা সবে দিল্লিতে গাড়ি বিস্ফোরণের নথি গ্রহণ করেছে। ‘বিপুল পরিমাণ নথিপত্র’ পরীক্ষা করা হচ্ছে। এখনই খুব বেশি কিছু জানানো সম্ভব নয়। গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সাদা রঙের গাড়িটি বিস্ফোরিত হওয়ার আগে কয়েক ঘণ্টা শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরা করে এবং ঘটনাস্থলের কাছে তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিল। তবে পুলিশ বা এনআইএ এখনো এটি নিশ্চিত করেনি। সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে সংঘটিত এ বিস্ফোরণে একাধিক গাড়িতে আগুন ধরে যায়। পরে সাতটি অগ্নিনির্বাপণ গাড়ি ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ করে। তবে গাড়িটি কার নামে নিবন্ধিত ছিল, কীভাবে বিস্ফোরক ভরা হলো—এ সম্পর্কে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা হয়নি। বিস্ফোরণের পর থেকে লালকেল্লা বন্ধ রাখা হয়েছে। তদন্তের কারণে আরও কিছুদিন এ ঐতিহাসিক স্থাপনাটি বন্ধ থাকতে পারে।

খবর৭১ ডেস্ক, নভেম্বর ১৪, ২০২৫ 0

জোহরান কোয়ামে মামদানি নামের অর্থ কী, কেন এত তাৎপর্য

গত বছর যক্ষ্মায় ১২ লাখ ৩০ হাজার মানুষ মারা গেছে: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

অর্থনৈতিক বার্তা ছড়িয়ে দিতে দেশজুড়ে সফরের পরিকল্পনা ট্রাম্পের

0 Comments