সর্বশেষ

বিএনপিও গণভোটে রাজি, জামায়াত আগে চায় সংবিধান আদেশ

Admin অক্টোবর ০৬, ২০২৫ 0

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের ব্যাপারে একমত হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। তবে গণভোট কখন হবে– তা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত দিয়েছেন নেতারা। গতকাল রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপের চূড়ান্ত পর্বের প্রথম দিন দলগুলো এমন অবস্থান জানায়। এর আগে যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে ঐকমত্য কমিশন।

সংলাপে বিএনপি আগের অবস্থান থেকে সরে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী, সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট আয়োজনে রাজি। দলটি ১০৬ অনুচ্ছেদের ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের মতামত গ্রহণের প্রস্তাব থেকেও সরে এসেছে। বিএনপি বিরোধিতা করলেও গণভোটের আগে সংবিধান আদেশ জারির মাধ্যমে সনদ কার্যকরের ব্যাপারে অনড় রয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলটি ডিসেম্বরে গণভোট আয়োজনে জোর দিলেও জাতীয় নির্বাচনের দিন এটি আয়োজনের ব্যাপারে আলোচনা হতে পারে বলে মত দিয়েছে।

বিএনপি সংস্কারের সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক দলগুলোর নোট অব ডিসেন্টসহ (আপত্তি) সনদকে গণভোটে দেওয়ার প্রস্তাব করলেও এনসিপি ৮৪ সংস্কারের সবগুলো নিয়ে ‘হ্যাঁ’-‘না’ প্রশ্ন চেয়েছে। একই অবস্থান জামায়াতের। তবে এনসিপিরও নির্বাচনের দিন গণভোটে আপত্তি নেই।

বিএনপি বলছে, যেসব সংস্কারে আপত্তি রয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়ন না করার এখতিয়ার নির্বাচনে জয়ী দলের থাকবে। তবে জামায়াত বলছে, রাজনৈতিক দলের নোট অব ডিসেন্টের চেয়ে জনগণের অভিপ্রায় শক্তিশালী। নোট অব ডিসেন্টসহ গণভোট হতে পারে না।

আগামীকাল মঙ্গলবার দলগুলোর সঙ্গে আবার সংলাপ হবে। দুদিনের বিরতিতে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় দলগুলোকে মতপার্থক্য কমানোর আহ্বান জানিয়েছে কমিশন।
পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠনের সিদ্ধান্তসহ ৯ সংস্কারে বিএনপির আপত্তি। বিএনপি ও এনডিএম ছাড়া বাকি দলগুলো উচ্চকক্ষে পিআর চায়। সংলাপ সূত্র জানিয়েছে, বিএনপি উচ্চ কক্ষে পিআরের আপত্তি তুলে নিলে, বাকি বিষয়ে গণভোটের ব্যাপারে আপত্তি থাকবে না।

সংলাপে যুক্তি পাল্টা যুক্তি, সওয়াল-জবাব

গতকালের সংলাপে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ মতামত দেন– সংবিধানে হাত না দিয়ে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন অধ্যাদেশ’ জারি করে নির্বাচন কমিশনকে গণভোট আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া সম্ভব। কারণ, সংবিধানে বলা নেই, জাতীয় ইস্যুতে গণভোট করা যাবে না। গণভোটে আগামী সংসদ সংবিধানের মৌলিক সংস্কারের তথা কন্সটিটুয়েন্ট ক্ষমতা (সংবিধান প্রণয়ন বা রহিত) পাবে। গণভোটে জুলাই সনদ জনগণ অনুমোদন করলে, তা বাস্তবায়নে বাধ্য থাকবে আগামী নির্বাচনে গঠিত সংসদ। সেখানে সাংবিধানিক সংস্কারের পর আরেকটি গণভোট হবে ১৪২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী।

প্রস্তাবটি নিয়ে প্রশ্ন তুলে জামায়াতের প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট শিশির মনির বলেন, জুলাই সনদে সংবিধানের মৌলিক সংস্কার রয়েছে। ১৪২ অনুচ্ছেদ স্পর্শ না করে কীভাবে গণভোটে সংস্কার করা হবে? জবাবে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, গণভোটে সংবিধান সংস্কার হবে না। বরং সংস্কারের প্রস্তাবগুলো আগামী সংসদে বাস্তবায়নের জন্য বাধ্যবাধকতা তৈরি করবে।

শিশির মনির সাংবিধানিক আদেশে নির্বাচনের আগে সনদ কার্যকরের কথা বললে তাতে আপত্তি জানায় বিএনপি। এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাভেদ রাসিন তখন বলেন, সাংবিধানিক আদেশ নাম দিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ বা অন্য কোনো নাম দেওয়া যেতে পারে সমঝোতার জন্য।

সালাহউদ্দিন আহমেদ এর আগে বলেন, গণভোট হলে সংবিধান আদেশ জারি বা ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আদালতের মতামত গ্রহণ জরুরি নয়। সংবিধান আদেশ জারির বিষয়ে শিশির মনিরের যুক্তি খণ্ডন করে বিএনপির এ নেতা বলেন, বর্তমান সরকারের সংবিধান প্রণয়ন বা রহিতের ক্ষমতা (কন্সটিটুয়েন্ট পাওয়ার) এবং সংবিধান সংশোধন (অ্যামেন্ডমেন্ট পাওয়ার) ক্ষমতা নেই। থাকলে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐকমত্যের জন্য ডাকত না।

এর আগে শিশির মনির বলেন, শুধু জনগণের কনস্টিটুয়েন্ট এবং অ্যামেন্ডমেন্ট ক্ষমতা রয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গঠিত সরকারকে জনগণ এ দুই ক্ষমতা দিয়েছে। এ ক্ষমতা বলে সংবিধান সংস্কার হলে ভবিষ্যতে আদালতে তা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না।

সালাহউদ্দিন আহমেদ এ বক্তব্য খণ্ডন করে পরে বলেন, গণভোট তথা জনগণের সার্বভৌম মতামতে জুলাই সনদ গৃহীত হলে তা ভবিষ্যতে চ্যালেঞ্জ হবে না। নির্বাচনের দিনে গণভোট হলে আগামী সংসদ সাধারণ সংসদের মতো হবে না। সংসদ নিজের মতো নয়, সনদ অনুযায়ী সংবিধান সংশোধন করবে। আগামী সংসদ অন্তর্বর্তী সরকারের সব কাজের বৈধতা দেবে সংবিধানের চতুর্থ তপশিলে।

নোট অব ডিসেন্ট প্রশ্নে শিশির মনির আদালতের রায়ের নজির দিয়ে বলেন, ভিন্নমত পোষণকারী বিচারকের রায় কার্যকর হয় না। রায় হয় সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে। সংস্কারের সিদ্ধান্তে থাকা, কিছু দলের নোট অব ডিসেন্টও তেমন। সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে গৃহীত সিদ্ধান্তে নোট ডিসেন্ট দালিলিকভাবে থাকলেও তা কার্যকর নয়।
নিজের মতামতে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জুলাই সনদ আদালতের রায় নয়; রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল। পরে বক্তব্যের এক পর্যায়ে শিশির মনির বলেন, গণভোট সংসদ নির্বাচনের সঙ্গেও হতে পারে। তবে আগে সাংবিধানিক আদেশে সংস্কার কার্যকর হতে হবে, যা পরের সংসদ অনুমোদন করবে।

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, সংস্কারের জন্য আগামী সংসদকে গণভোটের মাধ্যমে কনস্টিটুয়েন্ট পাওয়ার দিতে হবে।

গণভোটে রাজনৈতিক ঐকমত্য : কমিশন

সংলাপের পর কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সনদ বাস্তবায়নে জনগণের অংশগ্রহণ জরুরি। তাদের সম্মতির জন্য গণভোট অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে, যা সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় বড় পদক্ষেপ।

তিনি বলেন, ১১, ১৪ ও ১৭ সেপ্টেম্বর সংলাপের পর দলগুলোকে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার জন্য সময় দেওয়া হয়েছিল। তারা গণভোট ও সাংবিধানিক সংস্কার নিয়ে একমত হয়েছে।

আগামী সংসদের কাঠামো সম্পর্কেও প্রস্তাব এসেছে জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে গঠিত সংসদকে এমন বৈশিষ্ট্য দিতে হবে, যাতে জুলাই সনদের সাংবিধানিক সংস্কার করা যায়। এতেও দলগুলো সম্মত হয়েছে। তারা দলীয় অবস্থান থেকে সরে এসে জাতীয় ঐক্য তৈরিতে ভূমিকা রাখছে।

চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকে মনে হয় এগোতে পেরেছি: সালাহউদ্দিন

সংলাপ শেষে সালাহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় একটি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছি। মোটা দাগে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকে মনে হয় আমরা এগোতে পেরেছি।

গণভোটের প্রস্তাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল সমগ্র জনগোষ্ঠীকে প্রতিনিধিত্ব করে কিনা– এ প্রশ্ন রয়েছে। তাই জনগণের সম্মতি নিতে, গণভোট একটি চূড়ান্ত অভিমত। গণভোটে যে জনরায় আসবে, তা সার্বভৌম ক্ষমতার রায়। সব সংসদ সদস্য তা মানতে বাধ্য হবেন।

আগামী সংসদে জুলাই সনদের বিরোধী এমপিরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়, তবে কি তারা গণরায় মানতে বাধ্য থাকবেন– সাংবাদিকদের প্রশ্নে সালাহউদ্দিন বলেন, জনরায় চূড়ান্ত।
গণভোট দিয়ে আগামী সংসদকে জুলাই সনদ অনুযায়ী সংবিধান সংস্কারে বাধ্যবাধকতা দেওয়া যায় কিনা– প্রশ্নে তিনি বলেন, সংসদ সব সময় সার্বভৌম। তবে গণভোটের রায়কে উপেক্ষা করা যায় না।

নোট অব ডিসেন্ট থাকা সংস্কারের বিষয়ে কী হবে– প্রশ্নে সালাহউদ্দিন বলেন, জুলাই সনদ প্রণীত হবে, স্বাক্ষরিত হবে, অঙ্গীকারনামায় সবাই সই করবেন। জনগণ জানবে জুলাই সনদে কী আছে। যারা ম্যান্ডেট পাবে, তারা তাদের নোট অব ডিসেন্ট অনুসারে যেতে পারবে।

সংবিধান আদেশের মাধ্যমে নির্বাচনের আগে সাংবিধানিক সংস্কার কার্যকরে আপত্তি কেন– প্রশ্নে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘সংসদ ছাড়া আর কী ফোরাম আছে, যদি আপনারা বলে দিতেন?’

নির্বাচনের আগে গণভোট চায় জামায়াত

সনদ বাস্তবায়নে নির্বাচনের আগে গণভোট দাবি করেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ। তিনি বলেন, আইনি ভিত্তির জন্য গণভোটে বিএনপিসহ সব দল একমত। জনগণ গণভোটে অভ্যস্ত নয়। তবে জামায়াত মনে করে, জাতীয় নির্বাচন কোনো ধরনের সমস্যা ছাড়া করতে গণভোট নভেম্বর অথবা ডিসেম্বরে হতে পারে। সংসদ নির্বাচনের তপশিলের আগেও হতে পারে। গণভোট হয়ে গেলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে কোনো বাধা নেই। এতে আমরাও বাঁচি, জাতিও বাঁচে। তবে গণভোট আগে না পরে– এটি নিয়ে আলোচনার সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

হামিদুর রহমান বলেন, গণভোটের রায় আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না। আবার সংসদও প্রত্যাখ্যান করতে পারবে না।

বিএনপির সঙ্গে দূরত্ব নেই দাবি করে তিনি বলেন, গণভোটের ফল বিপক্ষে গেলেও জামায়াত মেনে নেবে। গণভোটের মাধ্যমে সংস্কারের জন্য জামায়াত সব সময় সোচ্চার ছিল। সনদের আইনি ভিত্তির জন্য গণভোটের পক্ষে সবাই মত দিয়েছে।

সনদের আইনি ভিত্তিতে ঐক্য গড়ে উঠছে

জুলাই সনদের আইনি ও সাংবিধানিক ভিত্তি নিশ্চিত করতে গণভোট আয়োজনের সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ধীরে ধীরে ঐকমত্য গড়ে উঠছে বলে মন্তব্য করেছেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার। তিনি বলেন, প্রায় সব রাজনৈতিক দল একটি জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে– জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি আগে নিশ্চিত করতে হবে।

তুষার বলেন, কমিশন এক সময় প্রস্তাব দিয়েছিল সংবিধান আদেশ জারির। কিছু দল আবার বলেছিল ‘লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার’ বা ‘রেফারেন্ডাম অধ্যাদেশ’ করতে। এনসিপি বলছে, নাম যাই হোক, এর ভিত্তিতে গণভোট হতে হবে এবং তা নির্বাচনের দিনেই করা যেতে পারে।

এনসিপির দাবি ছিল সংসদের আগে গণপরিষদ গঠন। তুষার বলেন, পরবর্তী নির্বাচিত সংসদকে দ্বৈত ক্ষমতাসম্পন্ন করতে হবে। শুধু আইন প্রণয়নকারী সংসদ হিসেবে কাজ করবে না। সাংবিধানিক পরিবর্তন আনার এখতিয়ারও থাকতে হবে। কিছু সংস্কার শুধু সাংবিধানিক সংশোধনে বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। যেমন প্রধানমন্ত্রীর পদ ১০ বছরে সীমাবদ্ধ করা, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠন কিংবা বিভাগীয় পর্যায়ে হাইকোর্টে বেঞ্চ স্থাপন। বিএনপিও এখন কিছুটা নমনীয় হয়েছে গণভোটে।

নোট অব ডিসেন্টসহ গণভোটের বিরোধিতা করে সারোয়ার তুষার বলেন, গণভোট হবে পুরো জুলাই সনদ নিয়েই। ৮৪ বা ৮৬টি প্রশ্নে গণভোট হয় না। প্রশ্ন থাকবে– জনগণ জুলাই সনদ অনুমোদন করে কিনা– এ ধরনের ‘হ্যাঁ’ অথবা ‘না’ প্রশ্ন।

গণভোট নিয়ে নির্বাচন কমিশনের আপত্তির আশঙ্কা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন এখনকার সংবিধানের আলোকে কথা বলে। রাজনৈতিক দলগুলো এক হলে জনগণও জুলাই সনদ এবং গণভোট মেনে নেবে।

প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

সংলাপের আগে প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে ঐকমত্য কমিশনের সভা হয় যমুনায়। প্রধান উপদেষ্টা এ কমিশনের সভাপতি। আলী রীয়াজ সাংবাদিকদের কমিশনের অগ্রগতির বিষয়ে সরকার প্রধানকে জানান। তিনি দ্রুততার সঙ্গে সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি সুপারিশের তাগিদ দিয়েছেন।

আলী রীয়াজ জানান, কমিশনের বর্ধিত মেয়াদ অর্থাৎ ১৫ অক্টোবরের মধ্যেই সুপারিশ চূড়ান্ত করে সরকারকে দেওয়া হবে। সনদ সইয়ের জন্য ৩০ রাজনৈতিক দলের তিন-চতুর্থাংশ দল দলীয় প্রতিনিধির নাম দিয়েছে।

সভা সূত্র সমকালকে জানিয়েছে, সনদ বাস্তবায়নে সরকারপ্রধানকে শক্ত হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য না হলে, কমিশনের বিশেষজ্ঞ প্যানেল যেসব পরামর্শ দিয়েছে, সেভাবে সনদ বাস্তবায়নের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে বলা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা সাংবিধানিক আদেশ জারির মাধ্যমে সাংবিধানিক সংস্কার কার্যকর করে নির্বাচনের সঙ্গে গণভোট কিংবা আগামী সংসদকে নির্ধারিত সময়ের জন্য গণপরিষদ হিসেবে গণ্য, সেখানে সনদ বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছেন। যমুনার সভা সূত্র জানিয়েছে, সরকারপ্রধান রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় জোর দিয়েছেন। তা সম্ভব না হলে, তখন কী করা হবে, এ সিদ্ধান্ত পরিস্থিতি অনুযায়ী গ্রহণের কথা বলেছেন ড. ইউনূস।

Popular post
হাইকোর্টের রুল জারি, কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতি কেন অবৈধ নয়

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে। 

কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতি বিতর্ক : উদ্বেগে দুই শতাধিক কর্মকর্তা

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।   

কৃষি ব্যাংকের ‘ভুয়া সিবিএ সভা’ ঘিরে চাঞ্চল্য

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে।  অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

হালিম হত্যার আসামিরা পলাতক, ধামাচাপা দিচ্ছে প্রশাসন

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।  কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

কৃষি ব্যাংকে ভুয়া সিবিএ নেতাদের কোটি টাকারও বেশি চাঁদাবাজি

অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।  

সর্বশেষ

আরও দেখুন
ছবি: সংগৃহীত
পদত্যাগের পর আসিফ-মাহফুজকে যে পরামর্শ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে থাকা দুই ছাত্র প্রতিনিধি আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলম পদত্যাগ করেছেন। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে তারা পদত্যাগপত্র জমা দেন—এ তথ্য নিশ্চিত করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।   প্রেস সচিব জানান, প্রধান উপদেষ্টা তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে দু’জনের সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করেন। একই সঙ্গে তিনি লিখিত বক্তব্যে ছাত্র নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের প্রশংসা করেন। ড. ইউনূস বলেন, অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়ে তোমরা যেভাবে জাতিকে ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্তির পথে এনেছ, তা জাতি স্মরণে রাখবে। ভবিষ্যতেও গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও বিকাশে তোমরা একই ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস। তিনি আরও বলেন, আজ একটি ঐতিহাসিক দিন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সবসময় তোমাদের অবদান মনে রাখবে। এত অল্প সময়ে তোমরা জাতিকে যে শক্তি ও প্রেরণা দিয়েছ, তা কখনো ভুলে যাওয়ার নয়। আগামী দিনে আরও বৃহত্তর পরিসরে তোমাদের অবদান দেখতে চাই। ছাত্র প্রতিনিধিদের উদ্দেশে তিনি আহ্বান জানান, সরকারে থেকে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছ, তা দেশের মঙ্গলার্থে ভবিষ্যৎ জীবনে কাজে লাগাতে হবে। উল্লেখ্য, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে উপদেষ্টা পরিষদে যুক্ত হয়েছিলেন মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ। মাহফুজ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের এবং আসিফ মাহমুদ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়সহ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।   ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। পদত্যাগের পর উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যসংখ্যা এখন ২৩ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ২১ জনে।

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ১০, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত

বিদেশি গবেষক আকর্ষণে কানাডার দেড় বিলিয়ন ডলারের মহাপরিকল্পনা

মানুষ সমান মর্যাদা ও অধিকার নিয়ে জন্মগ্রহণ করে, কিন্তু বাস্তবতা?

ছবি : সংগৃহীত

দেশের প্রথম নারী মহাকাশচারী হওয়ার দোরগোড়ায় সারাহ করিম

ছবি: সংগৃহীত
নখ কাটলে কি অজু ভেঙে যায়?

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। এখানে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি কাজেরই সুনির্দিষ্ট শিক্ষা ও নির্দেশনা রয়েছে। পবিত্রতা, পরিচ্ছন্নতা ও শৃঙ্খলা ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ জন্যই নবী করিম (সা.) আমাদের দেহ-মনকে পরিচ্ছন্ন রাখার নানা উপায় শিখিয়ে দিয়েছেন। যেমন : দাড়ি-গোঁফ পরিপাটি রাখা, শরীরের লোম ছাঁটা, নিয়মিত গোসল করা, দাঁত মেজে পরিষ্কার রাখা এবং নখ কাটা। এর মধ্যে নখ কাটা নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য দায়েমি সুন্নত হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। সপ্তাহে একদিন নখ কাটাকে সুন্নত হিসেবে মানা হয়। (শরহুস্ সুন্নাহ : ৩০৯০ ও ৩০৯১) তবে, আমাদের সমাজে নখ কাটাকে ঘিরে কিছু ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। অনেকে বলেন, নখ কাটলে নাকি অজু ভেঙে যায়। আবার কেউ কেউ মনে করেন, নখ কাটার একটি নির্দিষ্ট ক্রম আছে, যা নাকি হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। অথচ বাস্তবে দেখা যায়, এসব ধারণার বেশিভাগেরই কোনো প্রামাণ্য ভিত্তি নেই। নখ কাটার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ক্রম অনুসরণের যে নিয়ম প্রচলিত আছে, তা আসলে আদব হিসেবে কিছু ফকিহ ও বুজুর্গরা উল্লেখ করেছেন। তবে এটিকে হাদিস বা সাহাবায়ে কেরামের আমল দিয়ে প্রমাণ করা যায় না। ফকিহরা বলেন, নখ কাটার আদব হলো, হাত দুটো মুনাজাতের মতো করে ধরে ডান হাতের শাহাদাত আঙুল থেকে শুরু করে ধারাবাহিকভাবে বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলিতে গিয়ে শেষ করা। এরপর সর্বশেষে ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলির নখ কাটা (ফাতওয়ায়ে শামি ৬/৪০৬; ফাতওয়ায়ে আলমগিরি ৫/৩৫৮)। এটি একটি সুন্দর নিয়ম হলেও একে বাধ্যতামূলক বলা যাবে না। নখ কাটলে কি অজু ভেঙে যায়? অনেকের মনে এই প্রশ্ন জাগে, আবার কেউ কেউ অজুর পর নখ কাটতে ভয় পান। অথচ শরীয়তের আলোকে এর সুস্পষ্ট উত্তর হলো, নখ কাটলে অজু ভাঙে না। এ প্রসঙ্গে রাজধানীর জামিয়া ইকরার ফাজিল মুফতি ইয়াহইয়া শহিদ বলেন, নখ কাটা বা চুল ছাঁটার মধ্যে অজু ভাঙার কোনো কারণ নেই। অজুর ভেতরে যেসব বিষয়কে অজু নষ্টের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, নখ কাটা তার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নয়। ইয়াহইয়া শহিদ জানান, হাসান বসরিকে (রহ.) একবার প্রশ্ন করা হয়েছিল, কেউ যদি অজু করার পর চুল বা নখ কাটে, তাহলে কি তার অজু ভেঙে যাবে? উত্তরে তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, এ সব কারণে অজুর কোনো ক্ষতি হয় না। নতুন করে অজু করতে হবে না। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা : ৫৭৬)। অতএব, নখ কাটার পর অজু ভেঙে যায়— এ কথা সঠিক নয়। অজু করার পর নখ কাটলে নতুন করে অজু করতে হবে না। ইসলাম আমাদের জীবনকে সহজ ও সুন্দর করে দিয়েছে, তাই এখানে কুসংস্কার বা অযথা ভয়ের কোনো স্থান নেই। অজু ভঙ্গের প্রধান কারণগুলো ১. প্রাকৃতিক পথ দিয়ে নির্গত হওয়া : পায়খানা, প্রস্রাব, পায়ুপথ দিয়ে বায়ু বা এমন কিছু নির্গত হওয়া। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কারও নামাজ হবে না, যদি তার ‘হাদাস’ হয় আর অজু না করে।’ (সহিহ মুসলিম : ২২৫) ‘হাদাস’ মানে পায়খানা, প্রস্রাব, পায়ুপথ দিয়ে বায়ু বা এমন কিছু নির্গত হওয়া। ২. ক্ষতস্থান থেকে বের হওয়া তরল : শরীর কোথাও থেকে রক্ত, পুঁজ বা হলুদ পানি এতটুকু যদি বের হয়, যা গড়িয়ে পড়ার মতো, তাহলে তা অজু ভঙ্গ করে। ৩. গভীর ঘুম : গভীর ঘুমে পড়ে গেলে অজু ভেঙে যায়; কারণ, এ সময় শরীরের নিয়ন্ত্রণ থাকে না। তবে বসে বা হালকা ঘুমে অজু ভাঙে না। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘চোখ জাগ্রত থাকলে পায়ু বন্ধ থাকে।’ (মুসনাদে আহমদ : ১৬,৮৯৩) ৪. সংজ্ঞা হারানো : মূর্ছা যাওয়া, মদ্যপান বা অন্য কারণে সংজ্ঞা হারালে অজু ভেঙে যায়। ৫. জননাঙ্গ স্পর্শ : পুরুষ বা নারী সরাসরি যৌনাঙ্গ দিয়ে অন্যের যৌনাঙ্গ স্পর্শ করলে অজু ভাঙে। (সুনানে আবু দাউদ : ১৮১) ৬. বমি : প্রবল বেগে মুখ ভরে বমি হলে অজু ভেঙে যায়। ৭. নামাজে হাসা : নামাজে জোরে হাসলে অজু ও নামাজ দুটিই ভেঙে যায়। তবে মৃদু হাসলে শুধু নামাজ নষ্ট হয়।

মো: দেলোয়ার হোসাইন ডিসেম্বর ০৯, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত

বাজার সিন্ডিকেটের দাপটে এখনো অসহায় সরকার

ছবি: সংগৃহীত

১৬ ডিসেম্বর থেকে এনইআইআর চালু–সিদ্ধান্তে অটল সরকার

ছবি: সংগৃহীত

আসছে মৌসুমের প্রথম শৈত্যপ্রবাহ ‘পরশ’

ছবি: সংগৃহীত
বায়ুদূষণে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ঢাকা

জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন শহরে দিন দিন বাড়ছে বায়ুদূষণ। দীর্ঘদিন ধরে মেগাসিটি ঢাকার বাতাসও দূষিত। সম্প্রতি বৃষ্টির কারণে ঢাকার বায়ুমান কিছুটা উন্নতির দিকে থাকলেও আজ ঢাকার বাতাস ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে গণ্য করা হয়। সোমবার (০৮ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় মিনিটে আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার থেকে এ তথ্য জানা যায়। ২৭১ স্কোর নিয়ে আজ বায়ুদূষণে শীর্ষে রাজধানী ‘ঢাকা’ যা এখানকার বাতাসের মান নাগরিকদের জন্য ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’। একই সময় ২৬০ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে মিশরের শহর ‘কায়রো’ এদিকে ২৫১ স্কোর নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারতের রাজধানী ‘দিল্লি’, যা এখানকার বাতাসের মান নাগরিকদের জন্য ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’। আইকিউএয়ার স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়, আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু বলে মনে করা হয়। ২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ ও অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। এ ছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকা আইকিউএয়ার ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। সাধারণত একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে। যেমন—বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)। বায়ুদূষণ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে থাকে। এটা সব বয়সী মানুষের জন্য ক্ষতিকর। তবে শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, প্রবীণ ও অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য বায়ুদূষণ খুবই ক্ষতিকর। ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজেশনের (ডব্লিউএইচও) মতে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বায়ুদূষণে প্রধানত স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যানসার ও শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ থেকে মৃত্যুর হার বাড়ে।

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ০৮, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত

বিদেশি সিগারেট পাচারে ইউপি সদস্যসহ চারজন আটক

ছবি: সংগৃহীত

আগামী ৫ দিনে তাপমাত্রার পরিবর্তন নিয়ে পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস

ছবি: সংগৃহীত

মালয়েশিয়ায় মেগা অভিযানে আটক ৮৪৩, আছে বাংলাদেশিও

0 Comments