খবর ৭১ঃঠাণ্ডা যুদ্ধের সময়কার মতো উত্তেজনা না থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে আজ হেলসিংকিতে অনুষ্ঠেয় বৈঠকের দিকে আগ্রহ থাকবে গোটা বিশ্বের। বৈঠকে দুই শক্তিশালী রাষ্ট্রপ্রধান সিরিয়া, ইরান, উত্তর কোরিয়া, বাণিজ্যযুদ্ধসহ বেশকিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। খবর রয়টার্স।
দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি আগে, ১৯৯৪ সালে তত্কালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়েলেিসনের মধ্যকার বৈঠকটি ছিল ৫৫ লাখ অধিবাসীর ফিনল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সর্বোচ্চ পর্যায়ের কোনো বৈশ্বিক বৈঠক। এ উপলক্ষে ছুটিতে থাকা হাজার হাজার পুলিশ, উপকূলরক্ষী এবং উদ্ধারকর্মী কাজে যোগদান করে বৈঠকের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।
ট্রাম্প ক্ষমতায় আরোহণের পর থেকেই অভিযোগ আছে, রাশিয়া ২০১৬ সালের যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছে এবং ট্রাম্পের জয়লাভে ক্রেমলিন ভূমিকা রেখেছে। রাশিয়া অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও জানিয়েছেন, ট্রাম্প পুতিনকে পরিষ্কারভাবে জানাবেন, মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য।
ইউক্রেনে রাশিয়াপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহায়তার জন্য অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রও মস্কোকে দোষারোপ করেছে। সংঘর্ঘ বৃদ্ধির আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ইউক্রেনকে মারণাস্ত্র সরবরাহ না করলেও চলতি বছরের মার্চে কিয়েভের কাছে ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রি করায় ক্ষিপ্ত হয় রাশিয়া। এছাড়াও সিরিয়ায় রাশিয়ার মিত্র বাশার আল-আসাদ রাসায়নিক হামলা চালিয়েছেন— এ অভিযোগে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট গত বছরের এপ্রিল এবং চলতি বছরের এপ্রিলে বিমান হামলা চালালে দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি হয়।
সিরিয়ার মতো রাশিয়ার আরেক মিত্র ইরানের প্রতি মার্কিন দৃষ্টিভঙ্গিও রাশিয়াকে ক্ষুব্ধ করেছে। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে একটি ঐতিহাসিক পারমাণবিক চুক্তি করলেও ট্রাম্প একক সিদ্ধান্তে চলতি বছর চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। এর ফলে রাশিয়া চুক্তিটিকে বাঁচানোর জন্য ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একাট্টা হতে ইউরোপীয় শক্তিগুলোকে আহ্বান জানিয়েছে।
একই রকম ঘটনা ঘটেছে বাণিজ্যযুদ্ধের বেলায়ও। ট্রাম্প চীনসহ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া, কানাডা ও মেক্সিকোর ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর উচ্চহারে শুল্ক আরোপ করলে চলতি মাসে রাশিয়াও মার্কিন পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করে এ যুদ্ধে শামিল হয়।
এসব ইস্যু ছাড়াও ব্রিটেনে রাশিয়ার একজন সাবেক গুপ্তচরের ওপর রাসায়নিক হামলা, পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ ও ন্যাটোর শক্তিশালীকরণ নিয়ে দুই পরাশক্তির মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। দেখার বিষয়, এসব নিয়ে আজ হেলসিংকিতে কী আলোচনা হয় এবং এর পরিণতি কী দাঁড়ায়?