বিজিবি‘র তদারকির প্রতিবাদে বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ

0
356

শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোল(যশোর) প্রতিনিধি : দেশের সর্ববৃহ বেনাপোল স্থলবন্দরে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের তদারকির প্রতিবাদে বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

রোববার (১৫ জুলাই) দুপুর ১টা থেকে বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের আমদানি বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে সকাল ৯টায় চেকপোস্ট কাস্টমস কার্গো শাখা অফিসে তালা ঝুলিয়ে অফিসিয়াল কার্যক্রম বন্ধ করে দেন কাস্টমস সদস্যরা।

কাস্টমস ও ব্যবসায়ী সূত্রে জানাযায়, শনিবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস কার্গো শাখা অফিসের সামনে বিজিবি সদস্যরা চেয়ার বসিয়ে আমদানি-রফতানিতে তদারকি কাজ শুরু করেন। এছাড়া বন্দর এলাকায় তাদের টহল দিতেও দেখা যায়। হঠাৎ করে বিজিবি সদস্যদের বন্দরে এমন পদক্ষেপের প্রতিবাদে কাস্টমস সদস্যরা কাজ বন্ধ করে দেন।

এর আগে বেনাপোল বন্দরের প্রধান আমদানি-রফতানি পণ্য ঢোকার দু’টি ফটকে বিজিবি চেকপোস্ট বসিয়ে বন্দর ও কাস্টমসের পাশাপাশি তদারকি কার্যক্রম করে আসছেন।

বেনাপেল বন্দরে আমদানীকৃত পন্যে বিজিবির হস্তক্ষেপে বন্দরের আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে বৈধ রুটে আমদানিকৃত পণ্যচালান কাস্টমস ও বন্দরের কার্যক্রমের বাইরে বিজিবির আইন বহির্ভূত হস্তক্ষেপের ফলে বেনাপোলের সামগ্রিক বাণিজ্য ও রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশংকা করছেন ব্যবসায়ীরা।

বেনাপোল ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়াডিং এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, সুপ্রীম কোর্টের রায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এসআরও এবং বিভিন্ন সময়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক নির্দেশনা বিজিবি উপেক্ষা করে বন্দর এবং কাস্টমসে ওয়েং স্কেলে বসে আমদানি পণ্যচালানের ওজন পরিমাপ করা শুরু করেছেন। শনিবার থেকে বিজিবির কয়েকজন সদস্য বন্দরের ওয়েং স্কেল এবং কাস্টমস ওয়েং স্কেলে বসে আমদানিকৃত পণ্যচালানের মালামাল ওজন করছেন। বিজিবি বন্দর এলাকায় আমদানী রফতানী সংক্রান্ত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করায় আমদানী রফতানী কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। আর আমদানী রফতানী ব্যাহত হলে রাজস্ব আদায়ে ধ্বস নামবে বেনাপোল কাষ্টম হাউসে। এরই প্রতিবাদে রবিবার দুপুর থেকে বেনাপোলের ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট ব্যবসায়ীরা আমদানী পন্য খালাসের বিল অব এট্রি দাখিল করা বন্ধ করে দিয়েছেন।

এদিকে বিজিবি বলছেন তারা জাতীয় চোরাচালান প্রতিরোধ কমিটির ৬০ তম সভার কার্যবিবরণীর গৃহীত সিদ্ধান্তের পরিপেক্ষিতে শুল্ক বন্দর ও চেকপোস্ট সমূহে মালামাল ওজন করার সময় বিজিবির প্রতিনিধি উপস্থিত রাখা হয়েছে। কিন্তু কাষ্টমস বলছেন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কার্যক্রম সম্পাদনে উল্লিখিত আইন, প্রজ্ঞাপন ও বিধি বিধান উপেক্ষা করে কাস্টমস ও বন্দরের কার্যক্রমে বিজিবির এহেন কর্মকান্ড সম্পূর্ণভাবে আইন বহির্ভূত। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনায় বলা হয়েছে পত্র নথি নং-০৮.০১.০০০০.০৬৩.০১.০০৬.১৫/৭৬, তারিখ : ০২/০৮/২০১৫ খ্রি. বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে আমদানিকৃত নয় এমন পণ্য পরিবহন তথা চোরাচালান রোধকল্পে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাথে টাস্কফোর্সের আওতায় নিয়মিতভাবে অভিযান পরিচালনা করতে হবে। উক্ত পত্রে বিল অব এন্ট্রির পণ্য টাস্কফোর্সের আওতা বহির্ভূত রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে ৪৯ বিজিবির কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল আরিফুল হক জানান, জাতীয় চোরাচালান প্রতিরোধ কমিটির ৬০ তম সভার কার্যবিবরণীর গৃহীত সিদ্ধান্তের পরিপেক্ষিতে শুল্ক বন্দর ও চেকপোস্ট সমূহে আমদানীকৃত মালামাল ওজন করার সময় বিজিবির প্রতিনিধি উপস্থিত রাখা হয়েছে।

এদিকে বেনাপোল কাষ্টম হাউসের কমিশনার মোহম্মদ বেলাল হুসাইন চৌধুরী জানান কাষ্টমস্ এর কাজ কাষ্টমস করবে সে ক্ষেত্রে বিজিবি বেনাপোল বন্দরে আমদানীকৃত মালামাল ওজনের ব্যাপারে তদারকি করতে পারে না। তাছাড়া আমদানী-রফতানীকৃত মালামালের ক্ষেত্রে বন্দর এলাকায় বিজিবির কোন তদারকির একতিয়ার নাই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here