আবু বক্কর সিদ্দিক, গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামাড়জানীতে ব্রহ্মপুত্র নদের তীব্র ভাঙ্গণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভাঙ্গণ কবলিত মানুষ-জন।
নদের কূলবর্তী বসবাসকারী মানুষগুলো পরিবার-পরিজন নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছেন। বয়ো-বৃদ্ধ, শিশু, ঘরবাড়ি, গৃহ-পালিত পশু-পাখি নিয়ে তাঁরা বর্তমানে চরম বিড়ম্বনায় পড়েছেন। গরু, ছাগল হাঁস-মুরগী অল্পমূল্যে বিক্রি করতে পারলেও ঘর-বাড়ির আসবাবপত্র সরিয়ে নেয়ার আগেই বাস্ত-ভিটা নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিলীণ হয়েছে ঐতীহ্যবাহী কামাড়জানী বন্দরের ১’শ গজ উত্তরে গোঘাট গ্রাম। এ গ্রামকে ঘিরে গড়ে উঠেছিল অসংখ্য বসত-বাড়ি। আর এসব বসত-বাড়িতে প্রায় ১০ হাজার মানুষের বসবাস ছিল। অথচ, এ গ্রামকে রক্ষার কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করায় স্থানীয় প্রশাসন প্রশাসনের প্রতি অভযোগ রয়েছে সচেতন মহলের। শুধু তাই নয়; নদী ভাঙ্গণ দেখার কথা যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের। তারাও সঠিক তদারকী করছে না। পাউবো’র গাফলতির ফলে গ্রামটি ব্রক্ষ্মপুত্র গর্ভে চলে গেছে। এখন যেসব বসত-বাড়ি রয়েছে; তা অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার জন্য কাজ করছেন। কেউ বা বসত বাড়ির গাছ কাঁটছেন, কেউ বা টিনের ছাউনি খুলছেন। অনেকে আবার শেষ সম্বল ঘরটি যত্মসহকারে সরিয়ে নিতে সম্মিলিত ভাবে কাজ করছেন। ঐ গ্রামের বাসীন্দা নবাব, দেলোয়ার, কলিম ও সামিউল ইসলামসহ অনেকেই জানান, গেল ৩ বছর আগেও এ গ্রামে ছিল প্রায় ১০ হাজার মানুষের বসবাস। সন্তানদের শিক্ষার জন্য ছিল একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। মসজিদ, নামাজ, মন্দিরসহ সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এখন আর নেই। প্রতি বছর এ গ্রামে আয়োজন করা হতো বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের। এখন নদীবক্ষে নিমজ্জিত এ গ্রামের জায়গা- জমি। স্থানীয়রা জানান, শুষ্ক মৌসুমে পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী।ভাঙ্গণ রোধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। নদীতে পানি আসলেই তারা বালু বস্তা ফেলে নদী ভাঙ্গণ রোধে দায়সারা কাজ করে থাকায় যা ক্ষতি হবার; তা হয়েই যাচ্ছে। তাঁরা আরো অভিযোগ জানান, যেখানে ১ হাজার বালুবস্তা ফেলা দরকার। সেখানে তাঁরা ১-রদ ২’শটি
করে বালুর বস্তা ফেলেন। যা, পর্যাপ্ত নয়। কিন্তু, বিভাগের কাগজ- কলমে ১ হাজার লিপিবদ্ধ হয়। যে সব জায়গায় লোক দেখানো বালিবস্তা ফেলা হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেসব জায়গা ভেঙ্গে যায়। ফলে, বাস্ত-ভিটাসহ বসত -বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হতেই থাকে। ক্ষতিগ্রস্থ মানিষ- জনসহ এলাকাবাসী ভাঙ্গণ কবলিত মানুষদের দ্রুত পূণর্বাসনসহ নদী ভায়্গণ রোধে স্থায়ী সমাধানের জোড় দাবী হানান সরকারের প্রতি।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড’র নির্বাহী প্রকৌশলী- মাহাবুবুর রহমান জানান, কামাড়জানীর নদী ভাঙ্গণ রোধে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এখনও বরাদ্দ পাওয়া যায় নি। তবে, ভাঙ্গণ রোধে জরুরী ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ডাম্পিং’র কাজ চলছে।
খবর ৭১/ইঃ