খবর ৭১: ‘বিএনপি ছাড়া অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব না। তাই বিএনপির সঙ্গে সরকারের সমঝোতায় আসতেই হবে। আর অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সেদিন হবে যেদিন বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হবেন’ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যরিস্টার মওদুদ আহমদ।
শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব আ স ম মোস্তফা কামালের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন-বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান,শামসুজ্জামান দুদু, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমতুল্লাহ, খালেদা ইয়াসমিন, কৃষকদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদী প্রমুখ।
গণবিস্ফোরণের মাধ্যমে এই অবৈধ সরকারের পতন ঘটাতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরেও আমাদের চ্যালেঞ্জ এদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। এর চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক একটা জাতির জন্য আর কি হতে পারে? তাহলে কি এটা একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র ? জাতি কি তাহলে ব্যর্থ হয়ে গেল? আজকে যে সংকট তা নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসবে ততই মজবুত হবে। আমাদের এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সর্বদলীয় জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে গণবিস্ফোরণের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে। এর চেয়ে কোনও বিকল্প আর নেই। হয় শান্তিপূর্ণ সমঝোতায় আসতে বাধ্য করা হবে আর না হয় অতীতে যে ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে স্বৈরাচারের পতন ঘটানো হয়েছে তা করতে হবে।
নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমরা আগেই বলেছি এই নির্বাচন কমিশন পুর্নগঠন করতে হবে। খুলনা এবং গাজীপুরের নির্বাচনের মাধ্যমে এই কমিশনের মুখোশ উন্মোচন হয়ে গেছে। আমরা বারবার বলছি আগামী নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিতে হবে। নির্বাচনের ৯০ দিন আগে সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে এবং এই নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে।
দেশের উচ্চতম আদালতের আদেশকে অকার্যকর করার জন্য নিম্ন আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটকে ব্যবহার করা হচ্ছে এমন অভিযোগ করে মওদুদ বলেন, সম্পূর্ণ বানোয়াট মিথ্যা মামলার ওপর ভিত্তি করে খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজকে ৫ মাস হয়ে গেছে তিনি জেলে। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রেখেছে। তারপরও আমরা তাকে মুক্ত করতে পারছি না। দেশের উচ্চতম আদালতের আদেশকে অকার্যকর করতে নিম্ন আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটকে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাহী বিভাগের কাজ করছে। দেশের মানুষকে বোঝাতে হবে উচ্চতম আদালতের জামিন আদেশ কিভাবে ম্যাজিস্ট্রেট বিলম্ব করে। আজকে খালেদা জিয়ার ব্যপারে এরকম হলে সাধারণ মানুষের কি অবস্থা তাহলে চিন্তা করেন। কোথায় যাবে সাধারণ মানুষ যদি আদালতে সুবিচার না পায়। আমরা চাই আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে নিয়ে আসতে কিন্তু রাজপথ ছাড়া আর কোনও উপায় থাকছে না।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দল জড়িত নেই এমন দাবি করে মওদুদ বলেন, এটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বত:স্ফূর্ত একটা আন্দোলন। ১০০টা সরকারি চাকরির নিয়োগের মধ্যে ৫৬টি যদি কোটায় চলে যায় তাহলে থাকে কি? বাকি যে ৪৪ শতাংশ নিয়োগ পায় তার মধ্যে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো হয়। প্রধানমন্ত্রী ১১ এপ্রিল সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছেন কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হবে। আমরা শুনে তার প্রশংসা করেছিলাম। কিন্তু ২৭ জুন তিনি আবার একই সংসদে দাঁড়িয়ে বললেন কোটা পদ্ধতি থাকবে। আমরা কিভাবে তার কথা বিশ্বাস করবো? প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানাই যে কথা বলেছেন তা রক্ষা করেন। এমনিতেই জনগণের অনেক বিশ্বাস আপনার ওপর থেকে চলে গেছে।
খবর ৭১/ই: