খবর ৭১: রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলাটা অনেকটাই অসম্ভব ছিল পেরুর পাওলো গুয়েরেরোর। ড্রাগ নেওয়ার অভিযোগ পেছনে ফেলে দিয়েছিলো তাকে। কিন্তু অবশেষে তিনি বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেয়ে যান। তবে নিজের এই সৌভাগ্যের কারণ হিসেবে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ৫০০ বছরের পুরোনো এক মমিকে নিয়ে। বিষয়টি আশ্চর্যজনক হলেও সম্প্রতি এমন ঘটনা ঘটেছে।
‘ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক’-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৯৯ সালে বরফে ঢাকা আন্দিজ পর্বত থেকে ৫০০ বছর পুরোনো তিনটি মমি আবিষ্কৃত হয়। সম্প্রতি সেখানকার একটি মমিই যেনো রহস্য ছড়াচ্ছে রাশিয়ার বিশ্বকাপে।
জানা গেছে, পেরুর ৩৪ বছর বয়সী ফুটবলার পাওলো ডোপ টেস্টের কারণে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন। অর্থাৎ বিশ্বকাপে দেশের জার্সি পরে নামার স্বপ্নের সেখানেই ইতি ঘটে এই তারকার। নিজের ওপর আসা অপবাদের বিপরীতে পাওলো বোঝাতে চেষ্টা করেন, তিনি কোনো নিষিদ্ধ ড্রাগ নেননি। কোকেন সেবনের তো প্রশ্নই ওঠে না। পরীক্ষার আগে তিনি কোকা পাতার চা খেয়েছিলেন। তাতে চিনি ইত্যাদি মেশানো ছিল।
আদালতে পাওলো ও তার আইনজীবীর পাশে দাঁড়ান প্রত্নতত্ত্ববিদ চার্লস স্ট্যানিশ। দক্ষিণ ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্তা তিনি। একজন ব্রাজিলিয়ান বায়োকেমিস্ট পাওলোর কেসটি তার কাছে নিয়ে যান।
পাওলো প্রমাণ করে দেন, একজন মানুষ কোকেন না খেলেও তার শরীরে কোকেন মিলতে পারে! আর এই প্রমাণে তার তুরুপের তাস ছিল ষোড়শ শতাব্দীর ওই তিনটি প্রাচীন মমি। ওই মমিগুলোর ভিতরে একটির চুলে কোকেন পাওয়া গিয়েছিল। অথচ ঊনবিংশ শতাব্দীর আগে কোকেন আবিষ্কৃতই হয়নি!
প্রত্নতত্ত্ববিদ স্ট্যানিশ জানান, ২০১৩ সালে ‘লাইটনিং গার্ল’ নামের ওই মমিটির চুলে মিলেছিল কোকেনের নমুনা। আসলে কোনো ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণেই ওই তিনজনকে বলি দেওয়া হয়েছিল। তার আগে হয়তো ধর্মীয় রীতি মেনেই পান করানো হয়েছিল কোকা চা। এমনকি ওই মমির ঠোঁটে তখনও পর্যন্ত লেগেছিল কোকা পাতা।
ওই মমির উদাহরণ টেনে এনে স্ট্যানিশ জানান, পেরুর লিমায় কোকা চা খুবই জনপ্রিয়। চিনি ইত্যাদি সহযোগে ওই চা পান করা হয়। পাওলোও পান করেছিলেন। আর তাই তার দেহে কোকেন পাওয়া গিয়েছিলো। এতে মুক্তি পেয়ে যান পাওলো। দলের সঙ্গে পাড়ি দেন রাশিয়া।
তবে তার দল অবশ্য বিদায় নিয়েছে গ্রুপ পর্বেই। কিন্তু বিশ্বকাপের সঙ্গে জুড়ে গেল মমি রহস্য।
খবর ৭১/ই: