ইরানকে নামিয়ে সৌদিকে তুলছে যুক্তরাষ্ট্র

0
477

খবর৭১ঃ ইরানের তেল রফতানি আয় শূন্যে নামিয়ে আনতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে দেশটি ওপর সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগে প্রচারণা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

ইরানের ওপর নতুন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারির পর ইরান থেকে ৫০টি আন্তর্জাতিক কোম্পানি তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা পরিকল্পনার পরিচালক ব্রায়ান হুক এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে কূটনীতি সফল করতেই নতুন এ নিষেধাজ্ঞা আনছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানকে ‘শূন্য কাটায়’ নামিয়ে সৌদি আরবকে টেনে তুলতেই এ মোক্ষম অস্ত্রের ব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্র।

রিয়াদকে একচেটিয়া তেল বাণিজ্য পাইয়ে দিতে উঠে পড়ে লেগেছে ওয়াশিংটন। সৌদি আরবও তাদের পুরাতন ‘তেলমহাজন’ উপাধি ফিরে পেতে মরিয়া। খবর আলজাজিরা ও রয়টার্সের।

গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরান থেকে তেল আমদানি বাতিল করতে বিভিন্ন দেশকে আহ্বান জানান। ইরানের পরমাণু চুক্তির বদলে নতুন চুক্তির জন্য তেহরানকে রাজি করাতে ট্রাম্প প্রশাসন এই চাপ প্রয়োগ করছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।

ব্রায়ান হুক সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইরান কোনো স্বাভাবিক রাষ্ট্র নয়। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এড়াতে দেশটিকে অবশ্যই ১২ দফা শর্ত মানতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘স্বাভাবিক কোনো রাষ্ট্র অন্য দেশকে সন্ত্রাসবাদে মদদ দিতে পারে না, ক্ষেপাণাস্ত্র বৃদ্ধি করে না ও নিজেদের জনগণকে সম্বলহীন করে না। যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতি ইরানের শাসক পরিবর্তনের জন্য নয়, শাসকদের আচরণ পরিবর্তনের জন্য।’

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘স্ন্যাপ ব্যাক’ নামের এই নিষেধাজ্ঞা ৪ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। এ নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য ইরানের গাড়ি খাত ও সোনাসহ অন্যান্য ধাতব বস্তুর বাজার। ৬ নভেম্বর দ্বিতীয় আরেকটি নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।

এ নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্যবস্তু হবে ইরানের জ্বালানি খাত। বিশেষ করে তেল লেনদেন ও ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লেনদেন। ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের দুই মাসের মাথায় এই পদক্ষেপগুলো নেয়া হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের মিত্র দেশগুলোকে ইরানের কাছ থেকে তেল আমদানি বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে। যাতে চাপে পড়ে ইরান নতুন চুক্তি করতে সম্মত হয়।

এদিকে ইরানের তেল বন্ধে সৃষ্ট সম্ভাব্য খরা মেটাতে সৌদি আরবকে আবারও একচেটিয়ে তেল বাণিজ্য পাইয়ে দেয়ার মহড়ায় নেমেছে যুক্তরাষ্ট্র। পুরাতন ‘তেলকুবের’ খ্যাতিতে ফিরতে প্রস্তুত রিয়াদ।

২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর তেল বাণিজ্য থেকে ধীরে ধীরে সরে আসতে থাকে। তখন যুক্তরাষ্ট্রের তেল বাজারও বিপর্যস্ত হয়।

১৯৭০-এর দশক থেকে বিশ্বের বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় তেলের একচেটিয়ে বাণিজ্য করে আসছে সৌদি আরব। দেশটি আবারও পুরানো খ্যাতিতে ফিরছে। রোববার ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপে সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ তেল উৎপাদন বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
খবর৭১/এস;

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here