মুকুরুল ইসলাম মিন্টু চৌগাছা (যশোর)ঃ যশোরের চৌগাছা থানা পুলিশের দায়ের করা কথিত নাশকতা মামলায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও পৌর বিএনপির সভাপতি সাবেক মেয়র সহ ২৬ নেতাকর্মীকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। সোমবার যশোরে মহামান্য আদালতে নেতাকর্মীরা আত্মসমার্পন করে জামিন আবেদন করলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজাতে প্রেরনের নির্দেশ দেন। মিথ্যা বানোয়াট সাজানো এই মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সূত্র জানায়, গত ৩১ মে বৃহস্পতিবার উপজেলার স্বরুপদাহ ইউনিয়ন বিএনপি কর্তৃক আয়োজিত ইফতার মাহফিলে যোগ দেন মামলার আসামী বিএনপির নেতৃবৃন্দ। ইফতার মাহফিল শেষ করে নেতাকর্মীরা যে যার ঠিকানায় পৌছে রমজানের তারাবি নামাজ আদায় করেন। পরের দিন তারা জানতে পারেন তাদের নামে চৌগাছা থানায় নাশকতা মামলা করা হয়েছে। চৌগাছা থানার সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) কওছার আলম বাদি হয়ে ২৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২৫/৩০ জনকে আসামী করে এই মামলাটি করেন। মামলার প্রধান আসামী করা হয় উপজেলা বিএনপির সভাপতি বর্ষিয়ান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব জহুরুল ইসলামকে। অন্য আসামিরা হলেন, পৌর বিএনপির সভাপতি সাবেক মেয়র সেলিম রেজা, স্বরুপদাহ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন, সাবেক ছাত্রনেতা মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, বিএনপি নেতা পুড়াপাড়া গ্রামের মিজানুর রহমান, আব্দুর রাজ্জাক, স্বরুপদাহের মোঃ লোটন, একই গ্রামের ইউপি সদস্য মোঃ বাবু, কদমতলা গ্রামের বদর উদ্দিন, রায়হান উদ্দিন, খাড়ি গ্রামের মমিনুর রহমান, খাড়ি নওদাপাড়ার আব্দুল ওহাব ঝন্টু, আন্দারকোটা গ্রামের মন্টু মিয়া, বহিলাপোতা গ্রামের শফিউদ্দিন, মাধবপুর গ্রামের ডাক্তার আমিনুর রহমান, একই গ্রামের তাহাজ্জেল হোসেন, মতলেব আলী, দিঘড়ী গ্রামের আব্দুস সাত্তার, ইসলাম হোসেন, গদাধরপুর গ্রামের আব্দুল মালেক, নওদাপাড়া গ্রামের সানোয়ার হোসেন, তিলেকপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান, সাডাঙ্গা গ্রামের মামুনুর রহমান মামুন, পুড়াপাড়া গ্রামের মুসা মিয়া ও একই গ্রামের আহাদ আলীর ছেলে জামিনুর রহমান। মামলার এজাহার ভুক্তি সকল আসামী গত ৬ জুন মাহামান্য হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত তাদের ৪ সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করেন। চার সপ্তাহের জামিনের মেয়াদ ২ জুলাই সোমবার শেষ হলে আসামীগন যশোরের আদালতে আত্মসমার্পন করে জামিনের আবেদন করলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। এদিকে মিথ্যা বানোয়াট এবং সম্পূর্ণ কাল্পনিক এই মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানিয়েছেন উপজেলা ও পৌর বিএনপি এবং তার সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। উল্লেখ্য, গত ৩১ মে পবিত্র মাহে রমজানে স্বরুপদাহ ইউনিয়নের চাপাডাঙ্গায় বিএনপি কর্তৃক আয়োজিত ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ইফতার ও দোয়া মাহফিলে মামলার আসামীসহ শতশত বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেয়। ইফতার শেষে নেতাকর্মীরা নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে তারাবি নামাজ আদায় করে ঘুমাতে যায়। পরের দিন অর্থাৎ ১ জুন ইফাতারে অংশ নেতাকর্মীরা জানতে পারেন তাদের নামে চৌগাছা থানা পুলিশ বাদি হয়ে নাশকতা মামলা করেছেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভে ফেটে পড়েন নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ। পুলিশের এহেন কর্মকান্ডে সকলে হতবাক হয়ে যান। মামলায় উল্লেখ করা হয়, ইফতার শেষে রাত আনুমানিক ৮ টা ৫ মিনিটের সময় জহুরুল ইসলাম, সেলিম রেজা আওলিয়ারসহ নেতাকর্মীরা চৌগাছায় নাশকতা করার জন্য ইফতার স্থানের অদুরে গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ সেখানে উপস্থিত হলে তারা ছত্র ভঙ্গ হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় মামলার এজাহারভুক্তি আসামীদের পুলিশ চিনতে পারেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ৪টি জিহাদি বই, ২০ টি লিপলেট ও ৪ টি হাতবোমা উদ্ধার করেন পুলিশ। সূত্র জানায়, ওই রাতে উপজেলা বিএনপির সভাপতি জহুরুল ইসলাম চৌগাছা পাঁচনামনা পৌর জামে মসজিদে রাত সাড়ে ৮ টায় এবং সাবেক পৌর মেয়র সেলিম রেজা আওলিয়ার বাকপাড়া জামে মসজিদে একই সময় রমজানের তারাবি নামাজ আদায় করেন। তারাই হলেন নাশকতার আসামী এটি হাস্যকর ছাড়া কিছুই না বলে মন্তব্য করেছেন উপজেলার সচেতন মহল।
খবর ৭১/ইঃ