খবর ৭১ঃনানা ঘটনা আর অঘটনের জন্ম দিচ্ছে রাশিয়া বিশ্বকাপ। বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় নকআউট পর্বের অগ্নিপরীক্ষায় সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্পেনের মুখোমুখি হয়েছে রাশিয়া।
খেলার ১২ মিনিটে রাশিয়ার এস ইগনাশেভিচের আত্মঘাতী গোলে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় স্পেন। কিন্তু ৪১ মিনিটে ডি বক্সে হ্যান্ডবলের কারণে পেনাল্টি পায় রাশিয়া। দিয়েবার পেনাল্টি গোলে ১-১ গোলে সমতায় থেকে স্পেনের বিপক্ষে প্রথমার্ধ শেষ করে স্বাগতিক রাশিয়া।
সৌদি আরবকে ৫-০ গোলে চূর্ণ করে সবাইকে চমকে দিয়েছিল জিউবার দল। অপ্রত্যাশিত ঘটনার বিশ্বকাপের সুরটাই যেন সেদিন বেঁধে দিয়েছিলেন চেরিশেভরা। তারা জানিয়ে দিয়েছিল এবারের বিশ্বকাপে ছোটদল-বড়দল বলে কিছু নেই। তবে স্বাগতিক রাশিয়ার কাছে আজকের ম্যাচই যেন স্বপ্নের ফাইনাল।
আজ রাশিয়া একাই নয়, সঙ্গে রয়েছেন তাদের লুঝনিকি স্টেডিয়ামের ৮০ হাজার দর্শক। এদিকে গায়ে ফেভারিটের তকমা লাগিয়ে বিশ্বকাপে এলেও এখন পর্যন্ত জ্বলে উঠতে পারেনি ভূমধ্যসাগর পাড়ের দেশটির। প্রথম রাউন্ডে গোলের ওপর থাকলেও গোল হজমও করতে হয়েছে প্রায় সমানসমান। শেষ ষোলোতে স্থান করে নিতে মরক্কোর বিপক্ষে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ঘাম ঝরাতে হয়েছিল রামোসদের।
তবু আজ পরিষ্কার ফেভারিট স্পেন। শক্তি-সামর্থ্যে লা রোহাদের সঙ্গে কোনো তুলনাই চলে না রাশিয়ার।
নিজেদের ভালো করে মেলে ধরতে না পারলেও গত দুবছরে টানা ২৩ ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ড বলছে- স্পেন এখনও অপ্রতিরোধ্য। জ্বলে উঠলে ইউরোপীয় ফুটবল গর্বকে লুঝনিকির মাঠে উপস্থাপন করতে পারে রামোস-মার্কোর দল।
আজকের ম্যাচ নিয়ে রুশ ফরোয়ার্ড আরতিয়ম জিউবা বলেন, ‘৩২ বছর পর বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে উঠেছি আমরা। এটি অনেকটা বক্সিংয়ের খেতাবি লড়াইয়ের মতো। নিজেদের দিনে যে কোনো দলকেই হারানো সম্ভব।’
তবে কোয়ালিফাই রাউন্ডে উঠে বিশ্ব ফুটবলে নিজেদের অবস্থানকে ভুলে যাননি জিউবা। জিউবার সরল স্বীকারোক্তি- ‘আমরা জানি স্পেনের বিপক্ষে কী অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য। এই ম্যাচে স্পেনই ফেভারিট। উরুগুয়ে ভালো একটা শিক্ষা দিয়েছে আমাদের।’
তবে স্পেনের গতি থামিয়ে দিয়ে স্বাগতিকরা বিশ্বকাপ ইতিহাসে তাদের নতুন রেকর্ডটা করে ফেললে হয়তো অনেকেই এটাকে অঘটন বলবে না। কারণ, বিশ্বকাপে কোনো স্বাগতিক দেশের সঙ্গে জয়ের ইতিহাস নেই স্পেনের। বিগত দিনের রেকর্ড বলছে, বিশ্বকাপে স্বাগতিক দেশগুলোকে কখনো হারাতে পারেনি স্পেন। তিনবার স্বাগতিকদের মুখোমুখি হয়ে হেরেছে একবার, আর ড্র করেছে বাকি দুইবার।
তবে রেকর্ড বুকে তাকালে স্পেনের পক্ষেই যাবে আজকের ম্যাচ। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে আলাদা হওয়ার পর স্পেনকে কখনো হারাতে পারেনি রাশিয়া। ছয়বার মুখোমুখি হয়ে হেরেছে চারবারই, ড্র করেছে বাকি দুইবার। এছাড়াও রাশিয়ার বিপক্ষে শেষ তিন ম্যাচে ১০ গোল করেছে স্পেন।
এদিকে মেজর টুর্নামেন্টে শেষ তিনটি লড়াইয়ে স্পেনের কাছে হেরেছে রুশরা। ২০০৮ ইউরোতে গ্রুপ পর্বে ৪-১ গোলে হারার পর সেমিফাইনালে হেরেছিল ৩-০ গোলে, আর ইউরো ২০০৪ এর গ্রুপ পর্বে হেরেছিল ১-০ গোলে।
তবে রাশিয়ার এবারের বিশ্বকাপটা শুরু হয়েছে দারুণভাবে। সৌদি আরবকে বিধ্বস্ত করে জয়ের পর এই বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ডে ৮ গোল করেছে রাশিয়া। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে ১২ গোল করার পর এবারই কোন বিশ্বকাপে এতগুলো গোল করেছে রাশিয়া।
খবর ৭১/ইঃ