উজ্জ্বল রায় নড়াইল জেলা প্রতিনিধিঃ নড়াইলে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আলোচিত গণধর্ষণ মামলার দুই আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে নড়াইল জেলা পুলিশের একটি বিশেষ টিম। নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, পিপিএমের বলিষ্ঠ পদক্ষেপে এবং তাঁর নিকট আসা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পার্শ্ববর্তী জেলা মাগুরাতে অভিযান চালিয়ে গণধর্ষণ মামলার দুই আসামিকে গ্রেফতার করে নড়াইল সদর থানা পুলিশ। আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়ের রিপোটে, শনিবার (২৩ জুন) সকাল ১১টায় তাদেরকে মাগুরা জেলা থেকে গ্রেফতার করে নড়াইল সদর থানায় আনা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো নড়াইল জেলার সদর উপজেলাধীন সুবুদ্ধিডাঙ্গা গ্রামের হালিম মিনার ছেলে শাহজালাল (২৩) ও একই গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে এনামুল (২৫)। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত গণধর্ষণ মামলার এই দুই আসামি পুলিশের ভয়ে মাগুরা জেলাতে লুকিয়ে আছে মর্মে নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, পিপিএমের নিকট একটি গোপন সংবাদ আসে। ওই সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেনকে নির্দেশ দিলে তিনি সঙ্গীয় ফোর্স এসআই মনির, এএসআই আনিচ, মনির, ইলিয়াস, রেজাউলকে সাথে নিয়ে মাগুরা জেলাতে অভিযান চালান। এ সময় তার ওই দুইজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। এ বিষয়ে নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, পিপিএম নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায় ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ হিমেল মোল্যাকে বলেন, আলোচিত এই গণধর্ষণ মামলাটি খুবই স্পর্শকাতর। এ কারণে আমরা মামলাটি টপ প্রায়োরিটি দিয়ে আসামি দু’জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। আর এই অভিযানে যারা অংশগ্রহণ করে অভিযানটিকে সফল করেছেন তিনি তাদেরকেও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। উল্লেখ্য যে, , নড়াইল সদরের হবখালী ইউনিয়নের সুবুদ্ধিডাঙ্গা গ্রামে প্রেমিককে গাছে বেঁধে রেখে প্রেমিকাকে গণধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় বুধবার (২০ জুন) দুপুরে তিনজনের নামে সদর থানায় মামলা দায়ের হয়। এর আগে মঙ্গলবার রাতে নড়াইল সদরের ডাঙ্গাসিঙ্গীয়া গ্রামের ভূক্তভোগী মেয়েটিকে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে গণধর্ষণ করে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এ মামলার আসামিরা হলো-সুবুদ্ধিডাঙ্গা গ্রামের আজাদ মিনার ছেলে রফিকুল মিনা (৩০), হালিম মিনার ছেলে শাহজালাল মিনা (২৩) এবং আজগর মিনার ছেলে মাসুম মিনা (২৫)। এদিকে বুধবার দুপুরে নড়াইল সদর হাসপাতালে মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। ভূক্তভোগী মেয়েটি নড়াইলের ব্রাক্ষণীনগর গ্রামে নানাবাড়িতে থেকে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ালেখা করছে। মামলার বিবরণে ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে তার প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে যশোর থেকে নড়াইলে আসছিলো অষ্টম শ্রেণীর ওই শিক্ষার্থী। পথিমধ্যে নড়াইলের হবখালী আদর্শ কলেজ এলাকায় অটোবাইক থেকে নেমে যায় তারা। রাত ৯টার দিকে মাসুমের দোকানের কাছে পৌঁছালে ৮-৯ জন লোক তাদের (প্রেমিক-প্রেমিকা) পথরোধ করে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে নেয়ার কথা বলে তাদের হবখালী বাজারের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে এলাকার কয়েকজন যুবক। এক পর্যায়ে অভিযুক্ত রফিকুল মিনা, শাহজালাল মিনা ও মাসুম মিনা হবখালী কলেজ এলাকায় প্রেমিককে গাছে বেঁধে রেখে পাটক্ষেতে নিয়ে প্রেমিকা গণধর্ষণ করে এবং বুক, মুখ ও হাতের বিভিন্ন অংশে জখম করে। গণধর্ষণের পর আসামিরা হুমকি দেয়-বিষয়টি কাউকে জানালে তারা ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবে। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে গণধর্ষণের পর মেয়েটি অসুস্থ হলে পড়লে অভিযুক্ত যুবকেরা তাকে (মেয়েটি) ক্ষেতের মধ্যে ফেলে রেখে চলে যায়। রাত ১২টার দিকে প্রেমিকসহ স্থানীয় তিনজন ভূক্তভোগী মেয়েটিকে উদ্ধার করে সুবুদ্ধিডাঙ্গা গ্রামে শাকিলের বাড়িতে নিয়ে কিছুটা সুস্থ করে তোলেন। ওই রাতেই শাকিলের বাড়িতে স্থানীয় লোকজন উপস্থিত হয়ে ভূক্তভোগী মেয়েটির পাশে দাঁড়ান। পরে পুলিশ এসে প্রেমিক-প্রেমিকা উদ্ধার করে নড়াইল সদর থানায় নিয়ে আসে। দ্রুত গ্রেফতারসহ যথাযথ বিচার দাবি করেছেন। নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, পিপিএম নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের নিকট একান্ত সাক্ষাৎকারে ক্লাবটির সভাপতি উজ্জ্বল রায় ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ হিমেল মোল্যাকে জানান, ধর্ষণ একটি সামাজিক ব্যধি। ধর্ষণের সাথে জড়িতদের কোনো ছাড় নেই। সেই সাথে ধর্ষিতার পরিবারকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্বও আমাদের। এ কারণে আমরা মামলাটিকে টপ প্রায়োরিটি দিয়ে আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করার জন্য নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা রাখি এ ঘটনার সাথে জড়িতরা দ্রুত আইনের আওতায় চলে আসবে।
খবর ৭১/ইঃ