খবর ৭১ঃ ৮ ফেব্রুয়ারি রায়ের পর আদালতে খালেদা জিয়াপ্রায় ১১ বছর আগে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে (২০০৭ ও ২০০৮ সাল) ২টি ঈদ কারাগারে কাটাতে হয়েছে বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়াকে। এবার নাজিম উদ্দিন রোড়ের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে একাই ঈদ উদ্যাপন করতে হবে বিএনপি চেয়ারপারসনকে। কারণ এখানে তিনি ছাড়া আর কোনো কারাবন্দি নেই।
১১ বছর আগের সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দায়ের হওয়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজা প্রাপ্ত হয়ে চলিত ৮ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে রয়েছে খালেদা জিয়া। এই মামলায় তিনি জামিন পেলেও অন্য তিন মামলায় তাকে গ্রেপ্তোর দেখানো হয়। সব মিলিয়ে তার বিরুদ্ধে ৩৪টি মামলা চলমান রয়েছে।
এর আগে ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ভোরে খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের মইনুল রোডের বাসভবন থেকে গ্রেপ্তারের পর নেয়া হয় সিএমএম আদালতে। ওই আদালতে জামিন না মঞ্জুর হলে তাকে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় স্থাপিত সাব জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সাব জেলে থাকার সময় ২০০৭ সালের ১৪ অক্টোবর প্রথম পালিত হয় রোজার ঈদ। এরপর ২০০৭ সালের ২১ ডিসেম্বর কোরবানির ঈদও ওই সাবজেলেই পালন করেন তিনি। ওই কারাগারে ৩৭২ দিন কাটানোর পর ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়া মুক্তি পান। তবে কারাবন্দি থাকার সময় মায়ের মৃত্যুতে ২০০৮ সালের ১৯ জানুয়ারি প্যারোলে মুক্তি পেয়ে মইনুল রোডের বাসায় গিয়ে মায়ের লাশ দেখে আসেন খালেদা জিয়া।
জানা গেছে, ওই সময় কারাগারে থাকার সময় ঈদের দিনগুলোয় খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান ও আরাফাত রহমানের স্ত্রী ও তাদের সন্তানরা দেখা করেন। কিন্তু এবার তারেক রহমানের পরিবার, আরাফাত রহমানের স্ত্রী ও মেয়েরা লন্ডনে রয়েছেন।
ওই সময়ের জিআইজি প্রিজন ও বর্তমানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মেজর (অব.) শামসুল হায়দার সিদ্দিকী বলেন, ‘যতদূর মনে পড়ে ঈদের দিন দুই দফায় পাঁচ জন করে ১০জন আত্মীয় তার সঙ্গে দেখা করেন। সাক্ষাতের সময় পরিবারের সদস্যরা তার জন্য ঈদের নতুন কাপড়, উন্নত খাবার ও ফুল নিয়ে যান।’
জানা গেছে, এবার ঈদের দিন খালেদা জিয়ার জন্য বিশেষ খাবার ও বিনোদেনের ব্যবস্থা খাকবে। এছাড়া এদিন খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা চাইলে দেখা করতে পারবেন। তার জন্য খাবারও নিয়ে আসতে পারবেন।
কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন বলেন, ‘ঈদে সাধারণ বন্দিদের জন্য স্পেশাল খাবার ও বিনোদনের ব্যবস্থা থাকে। খালেদা জিয়ার জন্যেও বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। ঈদের দিন তার স্বজনরা দেখা করতে পারবেন। তারা খাবার নিয়ে আসতে চাইলে তাও নিয়ে আসতে পারবেন।’
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ঈদের দিন কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা দেখা করতে পারেন। তারেক রহমানের পরিবার, কোকোর স্ত্রী ও মেয়েরা লন্ডনে থাকায় খালেদা জিয়ার ভাই, বোন ও তাদের ছেলে-মেয়রা যাবেন দেখা করতে। এছাড়া বিএনপির নেতারাও দেখা করতে যাবেন বলে জানা গেছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটি ও সিনিয়র নেতারা যাবেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘দলের সিনিয়র নেতারা ঈদের দিন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে কারাগারে যাবো। এর জন্য আমরা অনুমতিও চেয়েছি। তবে এখনও অনুমতি পাইনি।’
তিনি আরো বলেন, ‘দলীয় চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানটি হচ্ছে না। খালেদা জিয়া ছাড়া কাকে নিয়ে আমরা অনুষ্ঠান করবো? তবে আমরা ঈদের দিন জিয়ার কবর ও বনানীতে আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত করবো।’