নবজাতককে ফেলে দেওয়ার আগে চুমু খেলেন বাবা

0
463

খবর ৭১: তিন সন্তানের পর আরও একটি সন্তান। সমাজে তো এবার মুখ দেখানো যাবে না! আত্মীয়-পরিজন, প্রতিবেশীরা ছিঃ ছিঃ করবে, তা হলে উপায়?

তাই বাবা-মা সিদ্ধান্ত নিলেন দুদিনের সন্তানকে তারা গির্জার সামনে ফেলে দিয়ে আসবে। সদ্যজাত সন্তানকে গির্জায় ফেলে রেখে যাওয়ার সেই দৃশ্য ধরা পড়েছে সিসিটিভি ফুটেজে।

ঘটনাটি কেরলের কোচির। ওয়াড়াক্কানচেরির বাসিন্দা বিট্টু ও তার স্ত্রী প্রতিভা। তাদের তিন সন্তান রয়েছে। ফের গর্ভবতী হন প্রতিভা।

ত্রিশূরের একটি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। বুধবার ফুটফুটে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। খবর আনন্দবাজার পত্রিকা।
পাড়া-প্রতিবেশী, বন্ধুদের পরিহাস থেকে বাঁচতে তাই জন্মানোর পরই নবজাতককে রাতের অন্ধকারে ফেলে রেখে এলেন একটি গির্জার বাইরে।

ওই দম্পতি ভেবেছিলেন, যাক রক্ষা পাওয়া গেল। আর কৈফিয়ত দিতে হবে না, পরিহাসের মুখোমুখি হতে হবে না। কিন্তু শেষ রক্ষা হল কোথায়! ‘একজন’ অলক্ষ্যে নজর রাখছিল তাদের ওপর। আর তা হল গির্জার সিসিটিভি ক্যামেরা।

সেই ক্যামেরার ফুটেজই রহস্য উদ্ঘাটন করল। পরিবারে নতুন অতিথি আসায় আনন্দের থেকে আশঙ্কাই ঘিরে ধরে বিট্টু ও প্রতিভাকে।

বাড়ি ফিরলেই বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশীদের কাছ থেকে শুনতে হবে নানা রকম কথা। তাই হাসপাতালে বসেই দুজনে শিশুটিকে কোথাও রেখে আসার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন, পুলিশের কাছে অন্তত তেমনটিই দাবি করেছেন বিট্টু।

লোকলজ্জার হাত থেকে বাঁচতে তাই হাসপাতাল থেকে সবার নজর এড়িয়ে শুক্রবার রাতে তারা সোজা চলে আসেন এরাপল্লির সেন্ট জর্জ ফোরেন গির্জায়। সে সময় গির্জায় আশপাশটা পুরো নির্জনই ছিল। সুযোগও এসে যায়।

শিশুটিকে খুব সন্তর্পনে গির্জার সামনে রেখে দেন তারা। রাখার আগে শিশুটির কপালে ‘স্নেহভরা’ চুম্বনও করেন বিট্টু। তার পর নিঃশব্দে সেখান থেকে সরে পড়েন।

রাত তখন সাড়ে ৮টা। গির্জার নিরাপত্তারক্ষী হঠাৎই শিশুর কান্নার আওয়াজ পেয়ে এগিয়ে আসেন। দেখেই চমকে ওঠেন। একটি সদ্যজাত শিশু কাপড় দিয়ে জড়িয়ে শোয়ানো রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি পুলিশে খবর দেন।

পুলিশ এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। শিশুটির মা-বাবার খোঁজ করে পুলিশ। তবে তাদের খোঁজ পেতে অবশ্য বেশি বেগ পেতে হয়নি পুলিশকে।

গির্জার সিসিটিভি ফুটেজে সংগ্রহ করে সংবাদমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করে তারা। তার পরই বিট্টু ও প্রতিভার খোঁজ পাওয়া যায় ত্রিশূরের ওয়াড়াক্কানচেরিতে।

পুলিশ ওই দুজনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে। বিট্টু জেরায় পুলিশকে জানিয়েছেন, বারবার গর্ভবতী হওয়ায় পাড়ায় প্রতিভাকে অনেকেই উপহাস করতেন। বন্ধুবান্ধবরাও কটাক্ষ করতে ছাড়ত না।

এসবের হাত থেকে মুক্তি পেতেই সদ্যজাত সন্তানকে রেখে আসার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। কিন্তু শুধুই কি লোকলজ্জার কারণ, না কি এর পেছনে আরও কোনো কারণ আছে- তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
খবর ৭১/ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here