উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:নড়াইল সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালের স্টোররুমে পাঁচ বছর ধরে কয়েক শত অ্যান্টি স্নেক ভেনম পড়ে থাকলেও একটিও ব্যবহার হয়নি। প্রতি বছরই মেয়াদ শেষে এসব প্রতিষেধক নষ্ট করে ফেলা হয়। ব্যবহার না থাকায় এ বছর অ্যান্টি স্নেক ভেনমের চাহিদাপত্র দেয়া হয়নি। তাই বর্তমানে এ হাসপাতালে কোনো প্রতিষেধক নেই। সাপে কাটা রোগী ভর্তি হলে জরুরি বিভাগ থেকে খুলনা অথবা যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সেখানে পৌঁছালে বা পথেই রোগী মারা যায়। দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয়দের অভিযোগ করে, নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে জানান, জেলায় অ্যান্টি স্নেক ভেনম ইনজেকশন সংকটের কারণে সাপের কামড়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। এমনকি নড়াইল সদর হাসপাতালেও সরকারিভাবে সরবরাহকৃত অ্যান্টি স্নেক ভেনম পাওয়া যায় না। সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় সাপে কাটা কোনো রোগীকে অ্যান্টি স্নেক ভেনম দেয়া যায়নি। তাই চলতি বছর এ প্রতিষেধকের কোনো চাহিদাপত্রই দেয়া হয়নি। পরিবার ও হাসপাতাল সূত্রে গেছে, নড়াইলের চাঁচুড়ি ইউনিয়নের কালডাঙ্গা গ্রামের অহিদুল মোল্যার ছেলেকে শামীউল মোল্যা (১৩) শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়িতে সমবয়সীদের সঙ্গে খেলছিল। এ সময় তাকে সাপে কামড় দেয়। তাকে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও অ্যান্টি স্নেক ভেনম না থাকায় খুলনায় নিয়ে যেতে বলা হয়। তবে খুলনা নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। একই দিন বিকালে বাড়িতে রান্নাঘরে কাজ করার সময় নড়াইলের নলদী ইউনিয়নের নালিয়া গ্রামের বিশ্বজিত দের ছেলে শান্তকে (৩৫) সাপে কামড় দেয়। নড়াইল সদর হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জসিমউদ্দিন হাওলাদার এ বিষয়ে নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে জানান, নড়াইল জেলার কোনো হাসপাতালেই এ মুহূর্তে অ্যান্টি স্নেক ভেনম নেই। চাহিদাপত্র দিলেই এ প্রতিষেধক পাওয়া যাবে। কিন্তু জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে যেসব চিকিৎসক আছেন, তারা কেউ প্রতিষেধক দেয়ার উপযুক্ত ডাক্তার নন। সাপে কামড়ানোর চিকিৎসা করতে হলে চিকিৎসকদের আলাদা প্রশিক্ষণ নিতে হয়। নড়াইলের সিভিল সার্জন মুন্সি আসাদুজ্জামান দিপু এ বিষয়ে নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে জানান, সাপে কাটা রোগীদের ইনজেকশন প্রদানের জন্য চিকিৎসকদের আলাদা প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। নড়াইল সদর হাসপাতালে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কোনো চিকিৎসক না থাকায় প্রতিষেধক দেয়া সম্ভব হয়নি। নড়াইলের কালিয়া ও লোহাগড়ায় গত শুক্রবার একদিনেই সাপের কামড়ে শিশুসহ দু’জনের মৃত্যু ।
খবর ৭১/ই: