উপকূলীয় অক্সফোর্ড খ্যাত নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম সুনামধন্য একটি প্রতিষ্ঠান। ১০১ একর ভূমিতে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটিতে রয়েছে চমৎকার কয়েকটি স্থাপনা। সৌন্দর্যমন্ডিত সুবিশাল প্রবেশদ্বার, মূল ফটকের সামনেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিস্তম্ভ ,শহীদ মিনার, উপাচার্যের ভবন, বিশ্ববিদ্যালয় অডিটরিয়াম , বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক হল, চিরসবুজের ছায়াঘেরা বিশ্ববিদ্যালয় পার্ক এবং বিশ্ববিদ্যালয় পার্কে অবস্থিত ক্যান্টিন অক্টাগোনাল ইত্যাদি । স্থাপনা গুলোর নির্মাণশৈলী যেকাউকেই মুগ্ধ করবে। অন্যদিকে পাঁচতলা বিশিষ্ট সেন্ট্রাল লাইব্রেরি, দৃষ্টিনন্দন মসজিদ, তিনটি আবাসিক হলসহ আরও বেশ কয়েকটি স্থাপনা নির্মাণের কাজ চলছে।
ইটের দেয়ালে ঘেরা নোবিপ্রবি গোলচত্ত্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এতে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি ভাস্কর্য। যা দেখেই মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের স্মৃতি দুচোখে ভেসে ওঠে। হৃদয়ের গহিন থেকে চলে আসে সম্মান, ভালবাসা আর দোয়া। ভাস্কর্যের চতুর্দিক বিভিন্ন ধরনের ফুল দিয়ে ঘেরা। মনে হবে যেন, মুক্তিযুদ্ধাগণ পাকিস্তানি হানাদার বাহিণীদের পরাজিত করে জয়ী হয়ে ফিরেছে আর তাদের সম্মানে ফুল দিয়ে সাজিয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের চরণযুগল। রয়েছে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার নির্দিষ্ট স্থান। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে পতাকা উত্তোলন করা হয় সেখান থেকে। ২রা মার্চ আ স ম আব্দুর রব এর জাতীয় পতাকা উত্তোলনের দৃশ্য নতুন করে জেগে ওঠে সবার হৃদয়ে।
দর্শনার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করেই দেখে বঙ্গবন্ধুর সৃতিস্থাপনা। একটু সামনে এগোলেই দেখে মুক্তিযোদ্ধা সৃতিস্তম্ভ আর জাতীয় পতাকা উত্তোলের স্থান। পাশেই রয়েছে প্রশাসনিক ভবন। একইসাথে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি, জাতীয় পতাকা আর প্রশাসনিক ভবন একসাথে দেখে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মলগ্নের ইতিহাস আবার ভেসে উঠে তাদের হৃদয়ে।
ফেকাশে লাল বর্ণের আবরণে ইটের এই দেয়ালে বসে গ্রুপস্টাডি আর অবসর সময়ে আড্ডা দিতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীগণ। আর দর্শনার্থীরা সারা ক্যাম্পাস গুরে এসে কিছুক্ষন বিশ্রাম নেয়া আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ডু মারার জন্য কয়েকটি গ্রুপছবি বা সিংগেল ছবি তোলার উপযুক্ত স্থান হিসেবেও গন্য করে এই স্থানটিকে।
ভালবাসার এই ক্যাম্পাসকে ভালভাবে অবলোকন করলে প্রাণ জুড়ে যাবে। গোলচত্ত্বর দেখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জেগে উঠবে হৃদয় মাজারে। মুক্তিযুদ্ধের আরো স্থাপনা দিয়ে ভরে যাবে এই ক্যাম্পাস। একসময় হয়তো পর্যটকদের ভিড় জমবে শুধু এই মুক্তিযুদ্ধের স্থাপনাগুলা এক নজর দেখার জন্য। এই বিশ্ববিদ্যালয় বিখ্যাত হয়ে যাবে মুক্তিযুদ্ধের স্থাপনার অন্যতম স্থান হিসেবে। আর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ হবে নোবিপ্রবি গোলচত্ত্বর।