খবর ৭১: ফারুক ইফতেখার সুমন, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) থেকে-
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় সরকারি ভাবে চাল সংগ্রহ অভিযানে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। পর্যাপ্ত চাল খাদ্য বিভাগ সংগ্রহ করতে না পারলে ভিজিডি-ভিজিএফ সহ সরকারি ত্রান সরবরাহে চালের সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় সচেতন নাগরিকগণ।
উপজেলা খাদ্য গুদাম সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় লক্ষ্য মাত্রার অর্ধেক পরিমান চালও কেনার জন্য চুক্তি করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। এছাড়া ভরা মৌসুম চললেও সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাজারে চালের দাম বেশি থাকায় মিল মালিকরা আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনায় সরকারি গুদামে চাল দিচ্ছেন না।
এ উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্যে সরকারি ভাবে খাদ্য বিভাগ ইরি-বোরো মৌসুমে চাল ও গম সংগ্রহ অভিযান শুরু করে। ১ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন চাল সরবরাহকারী রাইস মিল মালিকদের সাথে চুক্তি করে খাদ্য বিভাগ। ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলছে চাল সংগ্রহ। সরকারী ভাবে কেনার জন্য প্রতি কেজী সিদ্ধ চালের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে ৩৪ টাকা এবং আতব চালের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে ৩৩ টাকা। কিন্তু সরকারি ভাবে সিদ্ধচাল ৩৪ টাকা কেজি দরে নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও স্থানীয় বাজারে ৩৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে সেই চাল। আতব চাল সরকারি ভাবে ৩৩ টাকা কেজি দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও স্থানীয় বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩৬ টাকা দরে। সরকারি ভাবে দাম নির্ধারণ করা চাল গুদামে সরবরাহ করলে রাইস মিল মালিকরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন সে কারণে এ উপজেলার প্রায় অর্ধেক পরিমান রাইস মিল খাদ্য গুদামের সাথে চাল সরবরাহের চুক্তি করেনি। যারা চুক্তি করেছে তাও লক্ষমাত্রা (টার্গেটের) প্রায় অর্ধেক পরিমান। এতে এ অঞ্চলে চাল সংকট পড়বে বলে খাদ্য বিভাগ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তাছাড়া চলতি বছর হাওর অঞ্চলে ফসল ডুবির সাথে সাথে এ উপজেলার নিম্মাঞ্চলের ফসল ডুবে যাওয়ায় কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়েছে। এছাড়া বর্তমান সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে বিক্রি হচ্ছে চাল। একারণেই এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
খাদ্য বিভাগ থেকে এ উপজেলায় খাদ্য বিভাগকে এ অঞ্চলে ১০২৮ মেট্রিকটন সিদ্ধ চাল কেনার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলেও চাল সরবরাহ কারী রাইসমিল মালিকদের সাথে ৩০০ মেট্রিক টন চাল কেনার চুক্তি করতে পেরেছে স্থানীয় খাদ্য বিভাগ। ৩৭৯ মেট্রিক টন আতব চাল কেনার কথা থাকলেও ১০০ মেট্রিক টন চাল কেনার চুক্তি হয়েছে। তবে এপর্যন্ত মাত্র ৫০ টন চাল জমা হয়েছে খাদ্য গুদামে। ৪৯ মেট্রিক টন গম কেনার কথা থাকলেও কেউ গম সরবরাহ করতে চুক্তি করেনি। উপজেলার ২৬ জন চাল সরবরাহ কারী রাইস মিলের মধ্যে খাদ্য বিভাগের সাথে চুক্তি করেছে মাত্র ৭টি প্রতিষ্ঠান। সরকারি মূল্যের চেয়ে বাজার মূল্য বেশি হওয়ায় মিল মালিকরা চাল সরবরাহ করছেনা বলে জানিয়েছে খাদ্য বিভাগ।
উপজেলাা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. আলা উদ্দিন জানান, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম চুক্তি করা গেছে। বাজার মূল্য বেশি থাকায় চাল সংগ্রহে লক্ষ্য মাত্রা পূরণ করতে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।##