খবর৭১:
এমপি’র গাড়ী থেকে ৪ অভিযুক্ত গ্রেফতার \ ক্ষুদ্ধ গ্রামবাসীরা জানাজায় অংশ নিতে দেয়া হয়নি এমপি’কে
রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় সরকারি খাস পুকুর দখল করাকে কেন্দ্র করে নিহত আজিম উদ্দিনের জানাজায় স্থানীয় এমপি ইসরাফিল আলমকে অংশগ্রহন করতে দেয়নি ক্ষুদ্ধ গ্রামবাসীরা। তিনি জানাজায় অংশগ্রহন করতে গেলে স্থানীয় উত্তেজিত জনতা তাঁকে বাধা দিলে তিনি সেখান থেকে চলে আসেন। এই হত্যাকান্ডকে ঘিরে এলাকায় এখনও উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় এমপি’র গাড়ী থেকে ৪ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, দুর্বৃত্তদের লাঠি সোটা, লোহার রড ও হাতুড়ের আঘাতে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়তে থাকা আজিম উদ্দিনকে রাণীনগর হাসপাতালে চিকিৎসাও করতে দেয়া হয়নি। পরবর্তীতে আদমদিঘী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানে থেকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠাতে অনেক দেরী হওয়ায় পথের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়েছে। নিহত আজিম উদ্দিন রাণীনগর উপজেলার কালিগ্রাম ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি।
নওগাঁ জেলা পুলিশের মিডিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ডিএসবি ফারজানা হোসেন বলেন, রাণীনগর উপজেলার করজগ্রাম সখিনপাড়া মসজিদের খাস পুকুরটি মসজিদের নিকট থেকে লীজ নিয়ে প্রায় ১৪-১৫ বছর থেকে মাছ চাষ করে আসছিলেন নিহত আজিম উদ্দিনের বড় ভাই শহিদুল ইসলাম। কিন্তু হঠাৎ করে ২৭ মে রবিবার দুপুর অনুমান ২টায় মো: সাহাদত সায়েম, নাজমুল হক মাসুম, আব্দুল আজিজ, রহিমসহ ৩০-৩৫ জন মোটরসাইকেল যোগে ঐ পুরকুরপাড়ে গিয়ে স্থানীয় এমপি’র নাম ভাঙ্গিয়ে বলে যে এই পুকুর তারা লীজ নিয়েছে এখন সেখানে মাছ ছাড়বো। এই ঘটনায় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সায়েম ও তার দলবল লাঠিসোটা, লোহার রড, হাতুড়ী ইত্যাদি দিয়ে আক্রমন করে। এতে আজিম উদ্দিনসহ তার ভাই শহিদ, জালাল ও তাদের মা মানিকজান বেওয়াসহ বেশ কয়েকজন মারাত্মক ভাবে গুরুত্বর আহত হয়। এদের মধ্যে আজিম উদ্দিনের অবস্থা বেশী আশংকা জনক হওয়ায় তাকে প্রথমে রাণীনগর হাসপাতালে ভর্তি করতে ব্যর্থ হলে তাকে পরে আদমদিঘী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা বেশী আশঙ্কাজনক হলে তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। নওগাঁ হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় রোববার গভীর রাতে নিহতের বড় ভাই শহিদুল ইসলাম বাদী সায়েমকে প্রধান আসামী করে ৪০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
রোববার সন্ধ্যায় পুলিশ সুপার মো: ইকবাল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাকিবুল আকতার, সহকারী পুলিশ সুপার সদর দপ্তর মতিয়ার রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
সূত্র আরও জানায় সন্ধ্যার পর অনুমান সাড়ে ৭টায় স্থানীয় সংসদ সদস্যের গাড়ি থেকে হত্যার সাথে সম্পৃক্ত বলে অভিযুক্ত সাহাদত হোসেন সায়েম, মো: নাজমুল হক মাসুম, আব্দুল আজিজ ও মো: রহিমকে এবং অন্যত্র থেকে আমিনুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে রাণীনগরে সায়েমের অফিস তল্লাশী করে আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র এবং বিভিন্ন রকমের মদ উদ্ধার করা হয়েছে। আবার সোমবার বিভিন্ন সময়ে মো: সোহেব খন্দকার, মো: নয়ন ও মিল্টন খন্দকারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত, মো: সাহাদত সায়েম নওগাঁ সদর উপজেলার চকবুলাকী গ্রামের এচাহাকের ছেলে, নাজমুল হক মাসুম রাণীনগর উপজেলার পশ্চিম বালুভরা গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে, আব্দুল আজিজ রাণীনগর উপজেলার মধ্যরাজাপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে, মো: রহিম পশ্চিম বালুভরা গ্রামের রাজ্জাকের ছেলে, সোহেব খন্দকার বেদলা গ্রামের মো: জুলফিকার আলী ভুট্টুর ছেলে, মো: নয়ন পশ্চিম বালুভরা গ্রামের জালালের ছেলে ও মিল্টন খন্দকার চকমুনু গ্রামের মো: নাজিম উদ্দিনের ছেলে।
খবর৭১/জি: