খবর৭১: কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতাদের কক্ষে এসে হত্যার হুমকি দেয়ায় বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। সেইসঙ্গে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করতে গেলে শাহবাগ থানা জিডি নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন নেতারা।
বুধবার (১৬ মে) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। পরে তারা গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক পদক্ষিণ করে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র সংলগ্ন রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়।
এসময় এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান বলেন, ‘মঙ্গলবারে রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হলের ১১৯ নাম্বার কক্ষে আমাদের সহযোদ্ধা নুরুল হক নুরের কক্ষে তাকে মেরে পেলার উদ্দেশ্যে হামলা করেছে ছাত্রলীগের কিছু সন্ত্রাসী। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে সহযোগিতা করছি। তাহলে কেন এই হামলা। কোনো আন্দোলনকারীর যদি কিছু হয় তবে ছাত্রসমাজ রাজপথে তা প্রতিহত করবে।
নুরুল হক নুর বলেন, আমাদেরকে এর আগে বিভিন্ন সময়ে হত্যার হুমকি দিলে আমরা সরকারের কাছে নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছি। কিন্তু আমাদের কেন নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হলো না। ছাত্রলীগের কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ইয়াবা ব্যবসায়ী আমাকে ও রাশেদকে হত্যা করে ফেলার উদ্দেশ্যে আমার কক্ষে হামলা চালিয়েছে। আমি ৯৯৯ নাম্বারে কল করেও কোনো নিরাপত্তা পাইনি। সরকার দাবানল নিয়ে খেলা করছে। দাবানল নিয়ে খেললে পুড়ে ছারখার হয়ে যাবেন। তিনি তাদের ওপর হামলাকারীদের অতি দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
এর আগে সোমবার মধ্যরাতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ফ্ল্যাটফ্রর্ম বাংলাদেশ সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বয়ক নুরুল হকে নুরের কক্ষে এসে তাদের মেরে ফেলার হুমকি দেন ছাত্রলীগের ২০/২৫ জন নেতাকর্মী। বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মোহাম্মদ মুহসীন হলের ১১৯ নাম্বার কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ও সময় কক্ষে অবস্থান করছিলেন সংগঠনের অপর যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান।
পিস্তল নিয়ে তার কক্ষে আসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইমতিয়াজ উদ্দিন বাপ্পি। তার সাথে ছিলেন মহসীন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানী, চারুকলা অনুষদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম লিমনসহ আরও অনেকে।
মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে এসময় ছাত্রলীগ নেতা বাপ্পি বলেন, ‘এই আন্দোলন করছিস তোরা সরকারের বিরুদ্ধে। তোদের একটাকেও ছাড়া হবে না। প্রজ্ঞাপনটা জারি হলে তোদের কুত্তার মতো পিটানো হবে। কুকুরের মতো গুলি করে রাস্তায় মারা হবে। তোরা তো কেউ বাঁচবি না। বেশি বাড়াবাড়ি করিস না। শেষবারের মতো মা-বাবার দোয়া নিয়ে নিস। শুধু প্রজ্ঞাপনটা জারি হোক। তোদের কী অবস্থা করি।’
এসময় মেহেদী হাসান সানী ও ফাহিম লিমন তাদের ওপর হামলা করার জন্য বারবার সামনে আসে। কিন্তু ঘটনাস্থলে সাংবাদিকরা উপস্থিত থাকায় তারা চলে যান।
খবর৭১/এস: