খবর৭১:মুকুরুল ইসলাম মিন্টু চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছায় পবিত্র মাহে রমজানের ঠিক আগ মুহুর্তে সবজির দাম পাগলা ঘোড়ার মত ছুটতে শুরু করেছে। মাত্র এক দিনের ব্যবধানে প্রতিটি সবজি ৫ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত কেজিতে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজারে প্রতিটি সবজির যথেষ্ঠ পরিমান যোগান থাকা সত্তেও দাম বেড়ে যাওয়ায় মহা বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। মাহে রমজানকে পুজি করে ব্যবসায়ীরা প্রতিটি পন্যের দাম বৃদ্ধি করেছেন বলে অভিযোগ। দাম বৃদ্ধির ফলে এ জনপদের নিন্ম ও নিন্মমধ্যবৃত্ত শ্রেনীর মানুষের অবস্থা অত্যান্ত নাজুক। বর্তমান বাজার দরের পরিবর্তন না ঘটলে রমজানে সাধরণ মানুষের অনেক কষ্টেই দিন পার করতে হবে বলে মনে করছেন অনেকে।
সূত্র জানায়, সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র মাহে রমজান। সারা বিশ্বের মুসলমানদের মতই এদেশের ধর্মপ্রান মুসল্লীরা মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করে সিয়াম সাধনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রতি বছর রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপন্যের দাম বেড়ে যাওয়া এ জনপদের মানুষের কাছে নতুন কিছু না। কিন্তু এ বছর রমজান শুরুর ঠিক একদিন আগে হঠাৎ করে চৌগাছার প্রতিটি বাজারে সবজির দাম হুহু করে বেড়ে গেছে। হঠাৎ করে প্রতিটি পন্যের দাম বেড়ে যাওয়াতে ক্রেতাদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় বাজার করতে আসা অনেকেই দাম বৃদ্ধির জন্য বাজার মনিটরিং এর অভাব বলে মন্তব্য করেন। গতকাল চৌগাছার প্রধান কাঁচা তরকারির বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে বাজারে সবজির যথেষ্ঠ যোগান রয়েছে কিন্তু দাম হাকা হচ্ছে আকাশ ছোয়া। ১ কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। অথচ আগের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার একই বেগুনের দাম ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। এ ছাড়া পটল ৩০ থেকে দাম বেড়ে হয়েছে ৫০ টাকা, সারোকচু ৩৫ থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৫ টাকা। অনুরুপ ভাবে বর্তমানে এক কেজি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা, ১ কেজি কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা, পিয়াজ ৫৫ টাকা, প্রতিকেজি রশুন ৬৫ টাকা, কচুরলতি ৪০ টাকা, বরবটি ২০ টাকা, শশা ৪০ টাকা, ভেন্ডি ৩৫ টাকা, পুইশাক ১০ টাকা আটি, কচাকলা এক কেজি ৩০ টাকা, আলু ২০ টাকা, ঝিঙে ৩০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৩০ টাকা, নজনে এক কেজি ৯০ টাকা, ডাটা ১ আটি ১০ টাকা, পেঁপে এক কেজি ৩৫ টাকা, কুশি ২৫ টাকা, উচ্চে ১ কেজি ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজরে প্রতিটি সবজির যথেষ্ঠ যোগান থাকলেও হঠাৎ করে দাম বৃদ্ধিতে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়ে সকল শ্রেনী পেশার মানুষের মাঝে। আশ্বার্য বিষয় হচ্ছে একই পন্য চৌগাছার প্রধান পাইকারী বাজারে অনেক কম মুল্যেই বিক্রি হতে দেখা গেছে। বাজারের আড়ৎ ঘুরে দেখা গেছে খুচরা বাজারের সাথে প্রতিটি পন্যের দামের অনেক তফাত রয়েছে। আড়তে একজন কৃষক তার ক্ষেতে উৎপাদিত ১ কেজি বেগুন বিক্রি করছে ৪০ টাকায়। একই বেগুন হাত ঘুরে মাত্র ৫শ গজ দুরে যেয়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। মধ্যসত্তভোগীদের দৌরত্বে ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন কৃষক ও সাধারণ মানুষ। রমজানকে সামনে রেখে এক শ্রেনীর ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার লোভে বাজারে হঠাৎ করেই প্রণ্যের দাম বৃদ্ধি করেছেন বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন। প্যাকেট হাতে বাজার করতে আসা হাসান মাহমুদ, আব্দুর রশিদ, বেলাল হোসেন, সোবাহন আলী, নাজমুল ইসলাম বলেন, কৃষকের উৎপাদিত পন্য তারা কাংখিত দাম পাচ্ছেনা, অথচ ওই কৃষকের আপনজনদের বাজার থেকে চড়া দাম দিয়ে সবজি কিনতে হচ্ছে। দুদিন আগেও সব কিছুর দাম ছিল সকলের নাগালের মধ্যে। আর এক দিনের ব্যবধানে তা কয়েক গুন বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা রমজানে বাজার মনিটারিং করে প্রতিটি পন্য সামগ্রী জন সাধারনের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার জোর দাবি জানিয়েছেন।
খবর৭১/জি: