খবর৭১: ধর্ষণের শিকার নারীদের নাম-পরিচয় প্রকাশ না করে লজ্জা না দেয়ার পক্ষে অভিমত দিয়েছেন আদালত। এক্ষেত্রে ধর্ষিতা মারা গেলেও তার প্রতি সম্মান দেখাতে বলা হয়েছে।
ভারতের সুপ্রিমকোর্ট এক শুনানিতে বিচারপতি মদন বি লোকুর ও বিচারপতি দীপক গুপ্তার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ অভিমত দেন।
শুনানিতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ যৌন নিগ্রহে নির্যাতিতার পরিচয় প্রকাশের বিষয়ে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২২৮-এ ধারার কথা আদালতের নজরে আনেন।
এর পর আদালত জম্মু ও কাশ্মীরের কাঠুয়ায় ধর্ষণের পর হত্যার শিকার আট বছরের মুসলিম বালিকাসহ ধর্ষিতাদের নাম-ঠিকানা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশের বিষয়ে অভিমত দেন।
আদালত বলেন, মৃতের মর্যাদার কথাটাও ভাবুন। তাদের নাম, পরিচিতি প্রকাশ না করেও মিডিয়ায় রিপোর্ট করা যায়। মৃতেরও সম্মান রাখতে হয়।
এ সময় আদালত প্রশ্ন রাখেন, অভিভাবকের সম্মতি নিয়েও কী করে ধর্ষিতার পরিচয় প্রকাশ করা যায়?
বাবা-মা সায় দিলেও কেন নাবালিকা ও মানসিকভাবে অসুস্থ ধর্ষিতার পরিচয় প্রকাশ করা হবে, এমন প্রশ্ন তুলে আদালত বলেন, কারও মানসিক স্থিতি না থাকলেও গোপনীয়তার অধিকার থাকে। আজ যে নাবালিকা, কাল সে সাবালিকা হবে। কেন তাকে কলঙ্ক মাথায় নিয়ে বাঁচতে হবে?
অ্যামিকাস কিউরির (আদালতের বন্ধু) ভূমিকায় থাকা জয়সিংহ বলেন, সুপ্রিমকোর্টের ২২৮-এ ধারার ব্যাখ্যা অত্যন্ত প্রয়োজন। এ ধরনের ঘটনায় সংবাদ প্রকাশের ওপর পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা থাকা উচিত বলে তিনি অভিমত দেন। তিনি বলেন, শীর্ষ আদালতকে মিডিয়ার স্বাধীনতা ও ধর্ষিতার অধিকারের মধ্যে একটা ভারসাম্য রাখতে হবে।
বেঞ্চ শুনানির সময় বিষয়টির ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে বলে অভিমত জানিয়ে প্রশ্ন করে, যেক্ষেত্রে নিগৃহীতার মৃত্যু হয়েছে, সেখানেও বা কেন তার নাম প্রকাশ করা হবে। এ বিষয়ে ৮ মে পরবর্তী শুনানি হবে।
প্রসঙ্গত দিল্লি হাইকোর্ট গত সপ্তাহে ১২টি সংবাদ প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেন, কাঠুয়ায় ধর্ষিতার নামধাম বিস্তারিত প্রকাশ করায় তার পরিবারকে মাথাপিছু ১০ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। পরে প্রতিষ্ঠানগুলো আদালতে ক্ষমা চায়।
খবর৭১/জি: