পাইকগাছার শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যের বই বিক্রি করেন ওজনে

0
739

শেখ দীন মাহমুদ,পাইকগাছা(খুলনা):
পাইকগাছার কপিলমুনির ভৈরবঘাটা-রামচন্দ্র নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সূজিত কুমার দাশের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে ব্যাপক দূর্নীতি-অনিয়ম ও শিক্ষার্থীদের জন্য সরবরাহকৃত বিনামূল্যের বই খোলা বাজারে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তদন্ত পূর্বক তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের খুলনা বিভাগীয় উপ-পরিচালক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে জানাগেছে,উপজেলার কপিলমুনির ভৈরবঘাটা-রামচন্দ্র নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুজিত কুমার দাশ ১৯৯১ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে সেখানে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বে থেকে বিভিন্ন সময় ব্যাপক দূর্নীতি ও অনিয়মের সাথে জড়িত রয়েছেন। তিনি ২০১৪-১৫,২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে সরকারের স্লিপ প্রকল্পের প্রতি বছর ৪০ হাজার টাকা করে বরাদ্দের মোট ১ লাখ ২০ হাজার টাকা, ২০১৪-১৫ ও ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ক্ষুদ্র মেরামত বাবদ ৩০ হাজার টাকা করে মোট ৬০ হাজার টাকা,২০১৫-১৬ অর্থ বছরে রুটিন মেরামত বাবদ ৯ হাজার টাকা,২০১৪-১৫,২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে প্রাক প্রাথমিকের বরাদ্দের ৫ হাজার টাকা করে মোট ১৫ হাজার টাকা উত্তোলন করলেও কোন প্রকার উন্নয়ন করেননি।
এছাড়া তার এক ছোট ভাইয়ের স্ত্রী সুনীতা দাশ একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। বিভিন্ন সময় তারা স্কুলে না এসেও নিয়মিত হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। গত ২১ জানুয়ারী প্রধান শিক্ষক সুজিত দাশের মা মারা যাওয়ায় ঐ দিন থেকে তিনি ও তার ভাইয়ের স্ত্রী সুনীতা গত ৪ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ১৫ দিন স্কুলে না এসেও নিয়মিত হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেছেন। এমনকি কোন কোন দিন অনীতা স্কুলে না আসলেও সুজিত তার স্বাক্ষর করেন হাজিরা খাতায়।
এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগে আরো জানাযায়,প্রধান শিক্ষক সুজি দাশ প্রতি বছর শিক্ষার্থীদের মধ্যে সরকারি বরাদ্দের পুরনো বই বছর শেষে পুনরায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে তা খোলা বাজারে ওজনে বিক্রি করে দেন। অভিযোগ রয়েছে,তিনি শিক্ষার্থীদের সাময়িক পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন ও সংরক্ষণ না করে তাও খোলা বাজারে কেজি দরে বিক্রি করে থাকেন।
অভিভাবকদের অভিযোগ,বিভিন্ন সাময়িক পরীক্ষায় চারু ও কারু কলা পরীক্ষা না নিয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫/১০ টাকা করে চাঁদা নিয়ে সমুদয় টাকা আতœসাৎ করে থাকেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে স্কুলটিতে গেলে কথা হয় প্রধান শিক্ষকের সাথে। এসময় তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান,বিষয়টি তারা মিটিয়ে নিয়েছেন। এছাড়া বরাদ্দের টাকায় তিনি এপর্যন্ত শ্রেণী কক্ষের সাজ-স্বজ্জা বিশেষ করে বিভিন্ন কবি-সাহিত্যিক ও মনিষীদের ছবি টানিয়েছেন,দেওয়াল লিখন,পরিচালনা পরিষদ ও প্রধান শিক্ষকদের জন্য দু’টি পৃথক বোর্ডসহ একটি টিউবঅয়েল স্থাপন করেছেন। এছাড়া বরাদ্দের টাকায় তিনি কিছু শিক্ষা উপকরণ ক্রয় করেছেন বলে একটি প্লাষ্টিকের বস্তা দেখিয়ে বলেন সব কিছু এর মধ্যে রয়েছে।
সর্বশেষ এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষক সুজিত দাশের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্তপূর্বক শাস্তির দাবি জানিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

খবর ৭১/ এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here