এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটের ৯ উপজেলায় তরমুজ ক্ষেতে সবুজ সোনায় স্বপ্ন হাতছানি। এবার তরমুজের বাম্পার ফলনে চাষিদের মুখে খুশির ঝিলিক। মৌসুমের শুরু থেকেই অনুকূল আবহাওয়া এবং রোগবালাইয়ের প্রকোপ না থাকায় এবার তরমুজরে বাম্পার ফলন হয়েছে। ভাল মূল্য পাওয়ায় বিগত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে লাভের প্রতিক্ষায় কৃষকরা। তবে পরিবহন সিন্ডিকেটের কারণে তাদের এ খুশী হচ্ছে ঘুরেবালি হচ্ছে।
এদিকে চাষের উপযোগী জমি কমে যাওয়ায় তরমুজ চাষের জন্য বিখ্যাত মোল্লাহাট উপজেলার গাংনী ইউনিয়নের অনেক কৃষক পার করছে বেকার সময়। এ বছর জমির পরিমাণে তরমুজের আবাদ কম হলেও বিগত বছরের চেয়ে ফলনে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে দাবি তরমুজ চাষীদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, তরমুজ চাষীরা ক্ষেত থেকে তরমুজ বাজারজাত করার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কোন কোন ক্ষেতে তরমুজ তুলে স্তুপ করা হচ্ছে। আবার কোন ক্ষেত থেকে তরমুজ ট্রাক অথবা ট্রলিতে বোঝাই করা হচ্ছে। প্রতিদিন ঢাকাগামী লঞ্চ, ট্রলার, কার্গো, ট্রাক যোগে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এসব তরমুজ বাজারজাত করা হচ্ছে।
মোল্লাহাট উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় এ বছর মাত্র ১’শ ৩৫ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করেছে। এছাড়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ সরকারের বেশ কিছু উন্নয়ন কাজ চলমান থাকা ও কৃষকরা বরো আবাধের উপর ঝুঁকে পড়ায় তরমুজ চাষের জমি অনেকটই কমে গেছে। এখনো পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এখানকার ক্ষেতের তরমুজ ভালো রয়েছে। মৌসুমের বাকি সময়টা ভালভাবে কাটিয়ে উঠতে পারলে বিগত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে লাভের মুখ দেখবেন ওইসব কৃষকরা।
তবে গত বছর এ উপজেলার ১২’শ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ করেছিল। চাষীরা ফলনও পেয়েছিল ভাল বলে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
তরমুজ চাষী শেখ ফিরোজ আহমেদ এ বছর ২ একর জমিতে তরমুজের আবাদ করেছেন। সব মিলিয়ে তার চাষে খরচ হয়েছে ৭৫ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে ৫০ শতাংশ জমির তরমুজ ক্ষেত থেকে উত্তোলন করে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। বাকি দেড় একর জমির তরমুজ এখনো ক্ষেতে রয়েছে। কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে অবশিষ্ট তরমুজ বাজারজাত করে ৫ লক্ষ টাকা আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলার ৩নং গাংনী ইউনিয়নের তরমুজ চাষী আয়েব আলী জানান, বিরূপ আবহাওয়ার শিকার না হলে বিগত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে লাভবান হবেন।
মোল্লাহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, এ বছর তরমুজ ক্ষেতে পানি সেচের কোন প্রকার অসুবিধা ছিল না। ক্ষেতের যে কোন সমস্যা দেখা-শোনার জন্য আমাদের মাঠ কর্মীরা কাজ করেছেন। চলতি মৌসুমে শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রত্যেক চাষী গত দুই/তিন বছরের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবে। তবে সরকারের বেশ কিছু উন্নয়ন কাজ চলমান থাকায় এ বছর তরমুজ চাষীদের সংখ্যা কমে গেছে বলে তিনি জানান।