খবর৭১:মোঃ অালী হাসান: জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন ও বাঙালির সর্ববৃহৎ ঐতিহ্যবাহী উৎসব
পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে জয়পুরহাটের কালাইয়ে বিভিন্ন তাঁত-পল্লী এখন সরগরম হয়ে উঠেছে। সময় যত ঘনিয়ে আসছে তাঁত-শ্রমিকেরা কর্মচাঞ্চল্য, কর্মব্যস্ততা আর খট-খটে শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে উপজেলা বিভিন্ন তাঁত-
পল্লীতে। কোমর বেঁধে খাওয়া দাওয়া ঠিকমত না করে, ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তারা।
তাঁতিরা সাধ্যমতে তাঁত বস্ত্র উৎপাদন করে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার হাট-বাজারে খুচরা ও পাইকারি কাপড়ের দোকানে তাঁত বস্ত্র বিক্রি করছেন।
উপজেলার তাঁত-পল্লীতে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগামী শনিবার বাংলা নববর্ষ ও বাঙালি জাতীর সর্ব বৃহৎ ঐতিহ্যবাহী
উৎসব বৈশাখী-মেলার উপলক্ষে উপজেলার মাত্রাই, পুনট, হাজীপাড়া, আঁওড়া, দুরুনঞ্জ, নওয়ানা, মাধায়, ধাপ, খরফা, বফলগাড়ী,জালাইগাড়ী, জগডুম্বর, শিকটা, ঘাটুরিয়া ও হাজীপুরসহ বিভিন্ন
গ্রামের প্রায় ৬ থেকে ৭ হাজার তাঁত-শ্রমিকেরা কর্মব্যস্ততা ও কর্মচাঞ্চল্য হয়ে উঠেছে। হস্তচালিত তাঁত ও পাওয়ারলুমের
মাধ্যমে নারী, পুরুষ ও শিশুরা দিন রাত সমান ভাবে অক্লান্ত পরিশ্রম করে নানা বাহারি ধরণের শাড়ি, লুঙি ও গামছা তৈরি করছেন। আবার অনেকেই সুতা রং, বিভিন্ন ডিজিটাল ডিজাইন তৈরি, সুতা পারি, চরকা কাটা, কাপড় ভাঁজ করা, মোড়ক জাত করা, লেবেলিং করে দেশের জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে কাপড় পৌঁছে দেওয়া এবং কাপড় বিক্রিসহ নানা কাজে তারা মহাব্যস্ত সময় পার করছেন।
কালাই উপজেলার বফলগাড়ী গ্রামের তাঁত-শ্রমিক আব্দুল জোব্বার, পারুল আক্তার, রবিউল হাসান ও শেফলী বেগম
বলেন, সারা বছর তাঁতবস্ত্র চাহিদা থাকলেও আসন্ন বাংলা নববর্ষকে সামনে রেখে আমাদের তাঁত-পল্লীতে তাঁত-শ্রমিকেরা কর্মচাঞ্চল্য ও কর্মব্যস্ততা হয়ে উঠেছে। পহেলা বৈশাখী মেলার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার পাইকারি ব্যাবসায়ীরা আমাদের কাছ থেকে তাঁতের তৈরি শাড়ি, লুঙ্গি ও গামছা
কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। গত বছরের তুলনায় এবার তাঁত বস্ত্রের চাহিদা অনেক বেশি। বর্তমান পাইকারি বাজারে তাঁতের তৈরি বড়দের শাড়ি আকার ও মান ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা থেকে ৫৬০ টাকা, তাঁতের তৈরি ছোটদের শাড়ি আকার ও মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা থেকে ৩৪০ টাকা। আকার ও তাঁতের তৈরি বড়দের লুঙি মান
ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা থেকে ২৪০ টাকা, তাঁতের তৈরি ছোটদের লুঙি মান ভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা থেকে ১৭০
টাকা এবং তাঁতের তৈরি গামছা আকার ও মান ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা থেকে ৭৫ টাকা। আমাদের এই সব তাঁতবস্ত্রগুলো নিজ এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলাতে বিক্রির জন্য
পাঠানো হচ্ছে বলে তারা জানান।
খবর৭১/জি: