খবর ৭১: কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজধানীর কুড়িল-বিশ্বরোড, বসুন্ধরা গেট, নর্দা-প্রগতি সরণির সামনে শিক্ষার্থীদের অবরোধ আজকের মতো স্থগিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা দেয়া হয়। এরপর বিকেল ৫টায় যান চলাচলের জন্য রাস্তা খুলে দেয়া হয়।
বাড্ডা জোনের সিনিয়র অ্যাসিস্টেন্ট কমিশনার আশরাফুল করিম জাগো নিউজকে বলেন, শিক্ষার্থীরা তাদের অবরোধ আজকের মতো তুলে নিয়েছেন।
মঙ্গলবার বেলা ১২টা থেকে এই এলাকা অবরোধ করে বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। কোটা সংস্কারের আগ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।
এ আন্দোলনে যোগ দেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ ও ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অবরোধের মুখে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে হাজার হাজার মানুষ আটকা পড়ে।
মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে প্রথমে বসুন্ধরা গেট সংলগ্ন রাস্তা অবরোধ করে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে আশপাশের আরও কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাদের সঙ্গে যোগ দেন।
বিক্ষোভকারীরা রাস্তার দুই দিকেই আড়াআড়িভাবে দুটি বাস রেখে যান চলাচল বন্ধ রাখেন। সেই সঙ্গে রাস্তার ওপর অবস্থান নেন কয়েকশ শিক্ষার্থী। তারা কোটা সংস্কার চেয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিচ্ছিলেন।
শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করায় বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রগতি সরণি দিয়ে যান চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
গাজীপুরে অসুস্থ মেয়েকে দেখতে যাবেন বলে যাত্রাবাড়ী থেকে সকালে রওনা দেন মো. সাখাওয়াত হোসেন। নতুন বাজার পর্যন্ত ভালোভাবে আসতে পারলেও নর্দা পৌঁছাতেই শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। ফলে আটকে যায় তাকে বহনকারী বাসটি।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মেয়ে অসুস্থ। তাই তাকে দেখতে স্ত্রীসহ গাজীপুর যাচ্ছিলাম। কিন্তু এখানে এসে আটকে গেছি। সমনে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আবার যাত্রাবাড়ী ফিরে যাব তারও উপায় নেই। কারণ যাত্রাবাড়ী যাওয়ারও কোনো বাস নেই।
ব্যবসায়িক কাজে উত্তরা যাওয়া পথে আটকা পড়েন জামিল উদ্দিন। তিনি বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নতুনবাজার পার হয়েই যানজটে পড়ি। প্রায় এক ঘণ্টা বাস একটুও সমনে যায়নি। তাই বাধ্য হয়ে পায়ে হেঁটে যাচ্ছি। কুড়িল পার হয়ে যদি কোনো গাড়ি পাওয়া যায় এ আশায়।
অপরদিকে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে রামপুরা-বাড্ডা রুটে নামা ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরাও তাদের আন্দোলন স্থগিত করেছেন। মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে তারা আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে কোটাব্যবস্থা সংস্কারে কোনো সমাধান না হলে আবারও আন্দোলনে যাবেন বলে হুমকি দিয়েছেন তারা।