শমরিতা থেকে ঢামেকে হাত হারানো রাজীব

0
466

খবর৭১: রাজধানীর কারওয়ান বাজারে দুই বাসের চাপায় হাত হারানো সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীব হোসেনকে (২১) শমরিতা হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে অর্থোপেডিকস বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা এখনও আশঙ্কামুক্ত নয় বল সংশ্লিষ্ট ডাক্তারা জানিয়েছেন।

বুধবার (০৪ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে স্বজনরা রাজীবকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

আহত রাজীবের খালা খাদিজা বেগম ব্জানান, ঘটনার পর রাজীব চিকিৎসাধীন ছিলো পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল। একদিনেই সোয়া লাখ টাকার উপরে খরচ হয়ে গেছে।

তিনি আরো জানান, ১০ বছর আগে বাবা-মা’হারা রাজীব খুবই কষ্টে নিজের লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছিলো। তার পক্ষে শমরিতা হাসপাতালের খরচ চালানো অসম্ভব। তাই তাকে ঢামেক হাসপাতালে আনা হয়।

ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়া জানান, জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা রাজিবের আগের চিকিৎসার কাগজপত্র দেখে তাকে ভর্তি করেন ।

এদিকে রাজীব হোসেনের হাত বিচ্ছিন্ন করে নেয়া সেই দুই বেপরোয়া বাসের চালককে গ্রেফতার করেছে শাহবাগ থানা পুলিশ। এ দু’জন হলেন ওয়াহিদ ও খোরশেদ।

মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরের দিক থেকে ফার্মগেটমুখী একটি দ্বিতল বিআরটিসি বাস সার্ক ফোয়ারার কাছে পান্থকুঞ্জের পাশে সিগনালে থেমে ছিলো। সে বাসের পেছনের ফটকে দাঁড়িয়ে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন রাজীব। খানিকবাদেই একই দিক থেকে আসা স্বজন পরিবহন নামের একটি বাস দ্রুতগতিতে এসে দ্বিতল বাসের বাঁ পাশের ফাঁক দিয়ে ঢুকে সামনে যাওয়ার (ওভারটেক) চেষ্টা করে।

দুই গাড়ি তখন ধাক্কা দিতে গেলে চাপে পড়ে ডান হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ফটকে দাঁড়ানো রাজীবের। হাতটি দ্বিতল বাসের সঙ্গে ঝুলছিলোও তখন। তাৎক্ষণিকভাবে রাজীবকে পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে নেওয়া হলেও হাতটি আর জোড়া দেওয়া যায়নি। মঙ্গলবারই রাজীবের অস্ত্রোপচার করা হয়।

এ বিষয়ে এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বুধবার হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ রাজীবকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। একইসঙ্গে তার চিকিৎসা ব্যয় বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের মালিকদের বহন করতে নির্দেশ দেন।

রাজীব হোসেন মহাখালীর সরকারি তিতুমীর কলেজের ম্যাজমেন্টের ৩য় বর্ষের ছাত্র। থাকেন যাত্রাবাড়ীর মিরহাজীরবাগের একটি মেসে। তিন ভায়ের মধ্যে রাজিব সবার বড়। অপর দুই ভাই মেহেদী হাসান ও আবদুল্লাহ দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী এলাকায় একটি মাদরাসায় পড়াশুনা করছে।
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here