নড়াইলে চলন্তিকা যুব সোসাইটির ৫০ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় অফিস সিলগালা,

0
314

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: নড়াইলে চলন্তিকা যুব সোসাইটির ৫০ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় অফিস সিলগালা, গ্রাহকদের অভিযোগ কর্মীদের পালাতে সহায়তা করেছে পুলিশ নড়াইল থেকে ৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে উধাও হয়ে গেছে চলন্তিকা যুব সোসাইটি। বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় নড়াইলের কালিয়া পৌরসভা সদরে চলন্তিকা যুব সোসাইটির অফিসটি গ্রাহকরা ঘেরাও করেন। সূত্র জানিয়েছে, কালিয়া উপজেলা, কালিয়া পৌরসভা, বড়দিয়া, মহাজন ও গাজিরহাট শাখার গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় আট হাজার। গ্রাহকরা বলেন তাদের নিকট থেকে দিনে, মাসিক, বাৎসরিক হিসেবে টাকা আদায় করা হত। গ্রাহকদের ৬ বছরে দ্বিগুণ টাকা প্রদান করার প্রতিশ্রুতি দেয় চলন্তিকা যুব সোসাইটি (রেজি নং কে/১১০/০৪)। এতো বেশি লাভের আশায় গ্রাহকরা এ দিকে ঝুঁকে পড়েন। আমানতকারীদের মধ্যে কালিয়া উপজেলার গুরুদাশ স্বর্ণকারের ১৫ লক্ষ, রামনগর গ্রামের অঞ্জলীর ১ লক্ষ, শালবরাত গ্রামের গীতা ঢালীর ৫০ হাজার, উত্তম কুমারের ৫০ হাজার, বিলবাউচ গ্রামের শহীদ মোল্যার দেড় লক্ষ, বড়কালিয়া গ্রামের পেন্টুর আড়াই লক্ষ, খোকনের আড়াই লক্ষ, শান্তির ৭০ হাজার, মিতার ৭৫ হাজার, ঝন্টু বর্মনের ৩০ হাজার, কামাল সেখ, মকিদ চৌধুরী, নার্গিস বেগম, শাহিনুর, জামেলা বেগম, মধুসূদন দাশ, তপন চক্রবর্তী-এমন রয়েছেন অন্তত ৮ হাজার। এসব গ্রাহকের লগ্নিকৃত টাকার পরিমাণ ৫০ কোটি টাকা হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকাল থেকে সোসাইটির অফিস তালাবদ্ধ দেখতে পান। কর্মকর্তাদের সাথে কোন গ্রাহক ফোনেও যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। একপর্যায়ে তারা বিভিন্ন সূত্রে জানতে পারেন বাগেরহাট থেকে ওই সোসাইটির কর্মকর্তারা একইভাবে গা ঢাকা দিয়েছেন। নড়াইলের কালিয়ার গ্রাহকরা পর্যায়ক্রমে একত্রিত হয়ে হতে থাকেন। তখন শত শত আমানতকারী কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। খবর পেয়ে সেখানে উপস্থিত হন কালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হুদা। তিনি কালিয়া, বড়দিয়া ও মহাজন শাখার এজিএম মিলন কুমার দাশ ও দিলিপ কুমার সাহাকে ফোন দেন। কিন্তু তাদের ফোনে সংযোগ পাননি। মিলন কুমার দাসের বাড়িতে আমানতকারীরা ঘেরাও করেন। তাদের ফোনে শত চেষ্টা করা হলেও তা সব সময় বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। ইউএনও পুলিশের সহযোগিতায় কালিয়া চলন্তিকা যুব সোসাইটি ভবন সিলগালা করে দেন। একটি সূত্র জানায়, গত মাস আগে ওই অফিসের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাগজ পত্র পোড়ানো হয়েছে। এ ব্যাপারে কালিয়া অগ্রণী ব্যাংকের প্রিন্সিপ্যাল অফিসার বুলবুল হোসেন নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায় ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ হিমেল মোল্যার নিকট অভিযোগ করে জানান, চলন্তিকা যুব সোসাইটির নামে সিডি ০২০০০০৩৭৩০৩২৭ নং একাউন্ট আছে। তিনি জানান এ বছরে ওই একাউন্টে কোন টাকা লেনদেন হয়নি। গত বছরে ১০/১২ লক্ষ টাকা মাত্র লেনদেন হয়েছে। তবে গেল বছরের ২১ ডিসেম্বর ৫ লক্ষ টাকা অনলাইনের মাধ্যমে উত্তোলন করা হয়েছে। এখন ওই একাউন্টে মাত্র ১০ হাজার টাকা রয়েছে। এদিকে কর্মীদের পালাতে কালিয়া থানা পুলিশ সহযোগিতা করেছে বলে অভিযোগ একাধিক গ্রাহকের। তারা বলছেন, পুলিশ তাদেরকে নিরাপত্তা দেওয়ার নাম করে লোকচক্ষুর অন্তরালে নিয়ে উৎকোচের বিনিময়ে পালাতে সহায়তা করেছে। তবে এ ব্যাপারে কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শমসের আলীর সাথে বারবার সাংবাদিকরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। উল্লেখ্য উক্ত ওসি শমসের আলীর বিরুদ্ধে একাধিকবার বিভিন্ন অপকর্মের সংবাদ প্রকাশিত হলেও টনক নড়েনি উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার। এ বিষয়ে কালিয়া পুলিশের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পুলিশ সুপারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।

খবর ৭১/ ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here