উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:
নড়াইল সদর থানাধীন কামাল প্রতাপ গ্রামের বিস্তৃর্ণ ফসলী মাঠ (বিল)’র মধ্যে সিদ্দিক আহম্মেদ মল্লিক’র মাছের ঘের পাড়ে ঘুমিয়ে আছে, সরেজমিনে গিয়ে লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রাত দেড়টার দিকে সাদা পোষাকে থানা পুলিশ উপজেলার আমাদা গ্রামে আসামী গ্রেফতার অভিযানে যায়। পুলিশ জানতে পারে আসামীরা পার্শ্ববর্তী নড়াইল সদর থানা ধীন কামাল প্রতাপ গ্রামের বিস্তৃর্ণ ফসলী মাঠ (বিল)’র মধ্যে সিদ্দিক আহম্মেদ মল্লিক’র মাছের ঘের পাড়ে ঘুমিয়ে আছে। পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় ৮জন আসামীকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকৃতদের দু’জনকে হাতকড়া পরালেও বাকী ছয়জনকে মুক্ত রেখে কোন অজানা উদ্দেশ্যে দীর্ঘক্ষণ ওই স্থানে অপেক্ষো করতে থাকেন পুলিশ নড়াইলের লোহাগড়া থানা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামী ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। রোববার (২৫ মার্চ) রাত দেড়টার দিকে নড়াইল সদর উপজেলার কামাল প্রতাপ গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় চার পুলিশ কর্তকর্তা আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত এসআই গোবিন্দ আকর্ষন, এএসআই আনিসুজ্জামান, কাজী বাবুল ও খান বাবুল হাসানকে লোহাগড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশের অপেক্ষাজনিত আসামী পক্ষদ্বয়ের পরিকল্পনার সুযোগ সৃষ্টি হয়ে মসজিদ মাইক থেকে ঘোষণা করা হয় গ্রামে ডাকাত পড়েছে। এ ঘোষণায় এলাকার লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে পুলিশের ওপর ঝাপিয়ে পড়লে ধৃত আসামীরা কৌশলে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এ সময় তিনটি গুলির শব্দও শুনেছেন বলে জানান স্থানীয়রা। হামলায় লোহাগড়া থানার এসআই গোবিন্দ আকর্ষন, এএসআই আনিসুজ্জামান, কাজী বাবুল ও খান বাবুল হাসান গুরুতর আহত হয়ে লোহাগড়া হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। লোহাগড়া হাসপাতালের চিকিৎসক মোহাইমিন জিসান বলেন, সোমবার ভোরে আহত অবস্থায় চারজন পুলিশ অফিসারকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। এ দিকে একই দিন সোমবার দুপুর পৌনে দু’টায় লোহাগড়া হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়,রোগী ভর্তি কিতাবে আছে, রোগী নাই। কর্তব্যরত সেবিকা জানান তিনারা (পুলিশ) সময় মত শুধু রোগী সেবা নিতে আসেন, হাসপাতাল বেডে থাকেন না। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, উপজেলার লক্ষীপাশা ইউনিয়নের আমাদা গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আবুল কাশেম খান ও আলী আহম্মেদ খান সমর্থিত লোকজনদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলে আসছে। পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকায় ওই গ্রামসহ আশেপাশের গ্রামের লোকজন আশস্ত হতে পারছেন না। ফলে গত ২৪ মার্চ ভোরে পুলিশের উপস্থিতিতে অন্তত ১৫টি বাড়িঘর ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। ওই সময় কয়েকটি হাত বোমা বিস্ফোরণ ও কয়েক রাউন্ড গুলি হয়েছে বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। গত ১০ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যায় দুইপক্ষের সংঘর্ষে অন্তত পাঁচটি বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ তখন ১৪ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছোঁড়ে। এছাড়া গত দুই মাসে আমাদা গ্রামে দু’পক্ষের মধ্যে চারবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বাড়িঘর ভাংচুরসহ কয়েকজনকে কুপিয়ে গুরুত্বর আহত করা হয়। থানার অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে জানান, চারজন পুলিশ অফিসারকে আহত করে আসামী ছিনতাই করা হয়েছে। তবে হাতকড়াসহ আসামী পালানোর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন পুলিশ আত্মরক্ষার্থে শর্টগানের চার রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষন করেছে। এ ঘটনায় সোমবার (২৬মার্চ) থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ বিষয়ে নড়াইল পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম, নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে জানান, আমাদা গ্রামের হামিদ মল্লিক মসজিদের মাইকে এই অপপ্রচার করেন। এ সময় আসামি পক্ষের লোকজন পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে চার কর্মকর্তাকে আহত করে গ্রেফতার হওয়া চার আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় পুলিশ শটগানের চার রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে আত্মরক্ষা করে। থানায় মামলা আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে ।
খবর ৭১/ ই: