সুন্দরবনে ৪০মন কাঁকড়াসহ ১৪ জেলে আটক ২২মন কাঁকড়া লাপাত্তা

0
291

এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, সুন্দরবন থেকে ফিরে : সুন্দরবনের মরাপশুরের ভদ্রাখাল এলাকা থেকে একটি ট্রলার বোঝাই ৪০ মন কাকড়াসহ ১৪ জেলেকে আটক করেছে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা। শনিবার গভীর রাতে বন বিভাগের ষ্মাটটিম ও কোষ্টগার্ড যৌথ বাহিনী ট্রলারসহ এগুলো আটক করে। অন্যদিকে আটক কাকড়া চাদঁপাই রেঞ্জ অফিস থেকে প্রায় ২২ মন কাকড়া বন বিভাগের সহায়তায় গোপনে বিক্রি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ থেকে ৫টি ঝুড়িসহ সাড়ে ৫মন কাকড়া স্থানীয় এক ডিপো থেকে উদ্ধার করেছে বন রক্ষিরা। আটক জেলেদের জেল হাজতে পাঠানো হবে বলে জানায় রেঞ্জ কর্মকর্তা।

চাদঁপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ শাহিন কবির বলেন, কিছু অসাধু জেলেরা বন বিভাগ থেকে মাছের পারমিট নিয়ে গোপনে কাকড়া পারিবহন করছে। যা আমাদের ষ্মাটটিম অভিযান চালিয়ে এর আগে বেশ কয়েকবার ট্রলার আটক করে সিওআর করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। কিন্ত তার পরেও এসব জেলেরা বনরক্ষিদের চোখ ফাকি দিয়ে তারা তাদের এ অবৈধ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। শনিবার রাতে গোপন সংবাদের সুত্রধরে স্মাটটিম ও কোষ্টগার্ডের যৌথ বাহিনী বনের মরাপশুর ভদ্রাখালে অভিযান চালায়।

অবৈধ ভাবে এফ বি আলিফ নামের একটি ট্রলারে কাকড়া বোঝাই করে যাওয়ার সময় তাদের আটক করা হয়। তারা হচ্ছে, মৃত মোজাহের শেখে’র ছেলে রেজাউল শেখ (৩৮),ধিরাজ রায়ের ছেলে দিপংকর রায়(৩০),মহান্দ মন্ডলের ছেলে মনজিৎ মন্ডল (২৯), ধলা গাজীর ছেলে তাইজুত গাজী (৩২), সাইফুল শেখ’র ছেলে শাকিল শেখ (২৫), জাহাঙ্গীর গাজীর ছেলে রুবেল গাজী (২৩), দলিল উদ্দিন শেখের ছেলে শহর আলী শেখ (৫৪), কাশেম মোল্লার ছেলে শাহজালাল মোল্লা (২০), সমসের মল্লিকের ছেলে তোফাজ্জেল মল্লিক (৫৫), মহসিন শেখের ছেলে ইমরান শেখ (২২) জাকির ষেখের ছেলে রবিউল শেখ (১৮) সহ ১৪ জন জেলেকে আটক করা হয়। আটককৃত জেলেদের বাড়ী মংলা,রামপাল ও দাকোপ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।

অপরদিকে, আটক করা কাকড়াসহ ট্রলার শনিবার রাতে চাদঁপাই ষ্টেশনে আনা হয় কিন্ত ওখানে সকল জেলেদের নামিয়ে দিয়ে বন রক্ষিদের পাহারায় রাখে ষ্মাটটিমের ইনচার্জ মোঃ শাহাদৎ হোসেন ও ষ্টেশন কর্মকর্তা মোঃ কামরুল আহসান। ভোর রাতে আটককৃত ৪০মন কাকড়া থেকে প্রায় ২২ মন কাকড়া লাপাত্তা হয়ে যায়। কিন্ত বিষয়টি জানা জানি হলে রবিবার সকালে জয়মনির চাদঁপাই অফিস সংলগ্ন এলাকার জব্বার শেখে’র ছেলে কাকড়া ব্যাবসায়ী খোকন শেখ এর ডিপো থেকে ৪টি ঝুড়ি ও ১টি প্লাষ্টিকের ড্রাম ভর্তি সাড়ে ৬মন কাকড়া উদ্ধার করে বন রক্ষিরা।

এবিষয় ষ্মাটটিমের ইনচার্জ মোঃ শাহদৎ হোসেন জানায়, কোষ্টগার্ডসহ আটক করা কাকড়া ষ্টেশন কর্মকর্তাকে বুঝিয়ে দিয়ে রাত দেড়টার দিকে কর্মস্থলে চলে যাই কিন্ত পরবর্তিতে কি হয়েছে তা জানা নাই।
চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ শাহিন কবির জানায়, আটক জেলেদের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা দায়েরের পর জেল হাজতে পাঠানো হবে। তবে অফিস থেকে চুরি যাওয়া কাকড়ার বিষয় খোজ খবর নেয়া হচ্ছে। তবে তার কোন সদস্য জড়িত থাকলে ব্যাবস্থা নেয়া হবে। অফিস থেকে চুরি হয়ে যাওয়া কাকড়ার বিষয় রেঞ্জ কর্মকর্তাকে খোজ খবর নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কেউ জড়িত থাকলে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

এব্যাপারে ষ্টেশন কর্মকর্তা কামরুল আহসান জানায়, মিডিয়া কর্মিদের সাথে কথা না বলতে রেঞ্জ কর্মকর্তার নির্দেশ রয়েছে, যা বলার তিনিই বলবেন। কাকড়া জেলে মোঃ শাকিল শেখ জানায়, তারা দুই জন ট্রলারে ডিউটিরত অবস্থায় ছিলেন। পরে রাত আনুমানিক ৪টার দিকে ষ্মাটটিমের সদস্যরা তাদের ট্রলার থেকে নামিয়ে দিয়ে অন্য লোকদের পাহাড়ায় রেখেছে। স্থানীয় বাসিন্দা মন্টু হাওলাদার জানায়, ট্রলার থেকে জেলেদের নামিয়ে দিয়ে বন বিভাগের সদস্যদের সহায়তায়ই কাকড়া ট্রলার থেকে টমটম (ইঞ্জিন চালিত) ভর্তি করে অন্যাত্র পাঠিয়ে দেয় যা সকালে কিছু উদ্ধার করা হয়েছে।
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here