লোহাগড়া(নড়াইল)প্রতিনিধি:
নড়াইলের লোহাগড়া পৌরসভার মেয়র যুবলীগ সভাপতি মোঃ আশরাফুল আলম ও পৌরসভার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র, অপপ্রচারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার(২০ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় লক্ষীপাশা খেয়াঘাটস্থ যুবলীগ কার্যালয়ে পৌরসভা ও সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে এসব কর্মসূচী পালিত হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি পৌরসভাসহ মেয়র ও লোহাগড়া উপজেলা যুবলীগ সভাপতি মোঃ আশরাফুল আলমকে জড়িয়ে কুরুচিপূর্ণ ও মিথ্যা,বানোয়াট তথ্য প্রচার করছে এলাকার চিহ্নিত টাউটসহ বিশেষ মহল। এরই প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে যুবলীগ কার্যালয়ে পৌরসভার আয়োজনে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পৌর মেয়র মোঃ আশরাফুল আলম অভিযোগ করেন, লোহাগড়া পৌরসভা থেকে লক্ষীপাশা চৌরাস্তা ট্যাম্পু স্ট্যান্ড, কুন্দশী সি এন্ড বি ট্যাম্পু স্ট্যান্ড, জয়পুর ট্যাম্পু স্ট্যান্ড, লোহাগড়া ট্যাম্পু স্ট্যান্ড এ পৌরসভার লাখ লাখ টাকা ব্যায়ে পার্কিং প্লেস নির্মিত হয়েছে বিধায় ওই সমস্ত পার্কিং প্লেসের রক্ষনাবেক্ষনের সুবিধার্থে ইজারার মাধ্যমে পৌর রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিয়মতান্ত্রিকভাবে টোল আদায় করা হচ্ছে। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলকভাবে হীন স্বার্থচরিতার্থ করার জন্য কতিপয় টাউট অপপ্রচারে নেমেছে।
পৌর মেয়র আরো অভিযোগ করেন, গোপীনাথপুর গ্রামের মৃত নুর মোহাম্মদ খানের ছেলে শাহাজাহান খান সাজু ওরফে চিটার সাজু ভুয়ামি করে একটি স্কুল থেকে অষ্টম শ্রেণির সার্টিফিকেট নিয়ে সাবেক বি,ডি আর(বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) এ ভর্তি হয়। শৃংখলাভঙ্গ, রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ড, প্রতারণা, অবৈধব্যবসা পরিচালনাসহ বিবিধ অভিযোগে প্রতারক সাজুকে চাকুরীরত অবস্থায় তিন মাসের বেশি সময় জেলবাস করতে হয়। এমনকি জেলবাসের পর পেনশনের টাকা না দিয়েই বি,ডি,আর কর্তপক্ষ তাকে চাকুরিচ্যুত করে। শুধুমাত্র চাকুরিকালীন নিজের জমানো প্রায় তিন লাখ টাকা ছাড়া কিছুই পায়নি সাজু। পৈত্রিক সূত্রে তিন,চার শতক জমি পেয়েছে । কিন্তু প্রতারক সাজু এখন কোটি কোটি টাকার মালিক। তার নামে-বেনামে কোটি টাকার জমা জমি।
চাকুরিচ্যুতির পর ধুরন্দর সাজু ঢাকার র্যাক গ্রুপ(র্যাক মাল্টিপারপাস কোম্পান্নি) নামে একটি ভুয়া কোম্পান্নির পরিচালক বনে যান। সাজু লোহাগড়া, সাভার, বাগেরহাট, ঝিনাইদহ,মাদারিপুর সহ বিভিন্ন জেলায় র্যাক গ্রুপের অফিস খুলে বসে। এসব অফিসের মাধ্যমে প্রলোভন দেখিয়ে কথিত ডিপিএস, আমানত, লভ্যাংশপ্রদান সহ বিভিন্ন কৌশলে গ্রাহকদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় । সারাদেশে যখন হায়হায় কোম্পান্নির কার্যক্রম নিয়ে তোলপাড়-ধড়পাকড় শুরু হয় তখন সাজু ও তার সহযোগিতা রাতারাতি র্যাক এর অফিস বন্ধ করে পালিয়ে যায়। নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার গোপীনাথপুর, কুন্দসী, মোচড়া সহ বিভিন্ন গ্রামের ১৭৫ পরিবারের কাছ থেকে চিটারি করে সাজু প্রলোভন দেখিয়ে কোটি টাকা আত্মসাত করেছে। প্রতারক সাজু লোহাগড়ার ডাক্তার সৌমেনসহ আরো ৫/৬জন ডাক্তারের কাছ থেকে ডি,পি,এস এর নামে মাসে ৫ হাজার টাকা করে নিতো। প্রতিজন ডাক্তার প্রায় দেড়,দুই লাখ টাকা করে পাবেন। ডাক্তার সৌমেন যখন টাকা ফেরত চাইলেন তখন সাজু নিজে বাঁচতে পাওনাদার ডাক্তার সৌমেনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ করে।
জেলা প্রশাসক সহ লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার,পুলিশ সুপার এর নিকট বিচার চেয়ে ভুক্তভোগীরা আবেদন করেছিলেন। তৎকালীন লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সেলিম রেজা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তের জন্য সাজুকে প্রথম ০২/০৯/২০১৫, দ্বিতীয় ১৫/১১/২০১৫, তৃতীয় ২৯/১১/২০১৫ তারিখে তিন দফায় নোটিশ করেন। সাজু নোটিশের জবাব দেয়নি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার টাকা আত্মসাতের অভিযোগের সত্যতা পেয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গোপন প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। প্রতিবেদনের কথা জেনে যাওয়ায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সেলিম রেজার বিরুদ্ধে অপপ্রচজার চালায় সে।
পৌর মেয়র আরো জানান, চিটার সাজুর বিরুদ্ধে ঢাকা জজ আদালতে একাধিক প্রতারণা মামলা চলছে। সাজুর কাছে অবৈধ অস্ত্র রয়েছে শুনেছি। মাঝে মধ্যে কক্সবাজার সহ ভারতে যান । ইয়াবার ব্যবসা পরিচালনা করে। বিএনপি- জামায়াত পরিবারের সদস্য সাজু বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে নানা অপতৎপরতা চালাচ্ছে । পরে যুবলীগ,ছাত্রলীগ ও সচেতন নাগরিক সমাজ টাউট সাজুর গ্রেফতার দাবি করে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। সংবাদ সম্মেলনে দলীয় নেতা-কর্মী,সমর্থক,সুধীজনরা উপস্থিত ছিলেন।