নড়াইলে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বরখাস্ত

0
799

হুমায়ূন কবীর রিন্টু , নড়াইল থেকেঃ নড়াইলের শেখহাটি পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (আইসি) উপ-পরিদর্শক আব্দুল করিমকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। নারী কেলেঙ্কারীর অভিযোগে তাকে বরখাস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলার পর তা প্রত্যাখ্যান করে এসআই করিম। প্রতারণার শিকার ওই নারীর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ সুপারের নির্দেশে অতিসম্প্রতি এসআই করিমের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়।এ ঘটনায় নড়াইলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

লিখিত অভিযোগে জানা যায়, নারীলোভী এসআই আব্দুল করিম কালিয়া থানায় কর্মরত থাকাকালীন সময়ে থানা সংলগ্ন চাদঁপুর গ্রামের সুইটি বেগম (২৭) নামে এক গৃহবধূর সঙ্গে প্রেমজ সম্পর্ক গড়ে তোলে। তার পিতার নাম কওসার। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নানাভাবে প্ররোচিত করে তার স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করে। এরপর তাকে বিয়ের কথা বলে নানা ছলচাতুরীর এক পর্যায় দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এভাবে দিনের পর দিন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই গৃহবধূর নিজ বাড়িতে বিভিন্ন সময় অবস্থান করে সহবাস করতো। একপর্যায়ে সে মহিলার গর্ভে সন্তান আসে। তখন মহিলা তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে সম্পন্ন করার কথা বললে তিনি সামাজিকভাবে ইজ্জ¦ত হারানোর ভয় দেখিয়ে এড়িয়ে যান। এরপর এসআই করিম গত ১৪ মার্চ সু-কৌশলে তাকে নড়াইলের কালিয়া উপজেলাধীন চাঁচুড়ী বাজারের পল্লী চিকিৎসক রজিবুল ইসলাম মিটুর নিকট নিয়ে গর্ভপাত ঘটানোর প্রস্তাব দেয়। এতে ওই মহিলা রাজি না হলে বিয়ে না করার হুমকি দেয়। এরপর চিকিৎসক রজিবুল ইসলাম মিটুর সঙ্গে কু-পরামর্শক্রমে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য ওই মহিলার অসম্মতিতে গর্ভপাত ঘটানোর একটি ইনজেকশন দেয়। এছাড়া বাড়ীতে সেবনের জন্য ৫টি ট্যাবলেট দেয়। ইনজেকশন দেওয়াতেই ওইদিনগত ভোররাতে প্রায় ২ মাসের গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে গর্ভপাত ঘটে। পরবর্তীতে ধূর্ত ওই পুলিশ কর্মকর্তা বিয়ে করবে বলে তাকে আজকাল করে ঘোরাতে থাকে। নিজের স্বার্থ হাসিল করে প্রেমিক পুলিশ কর্মকর্তা পরবর্তীতে বিয়ে করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। পরে ভুক্তভোগী নারী নড়াইল পুলিশ সুপার ও সংশ্লিষ্ট দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে এসআই করিমের শাস্তির দাবি করেন। এর প্রেক্ষিতে প্রাথমিকভাবে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় এসআই করিমকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এসআই করিম ২০১৪ সালের ২৬মার্চ কালিয়া থানায় যোগদান করে। এরপর বেপরোয়া জীবনযাপন শুরু করে। তিনি ২০১৭ সালের ২৯এপ্রিল কালিয়া থানা থেকে বদলী হয়ে নড়াইল সদর উপজেলার শেখহাটি ক্যাম্পে যোগদান করেন। তার বিপি নং-৭৬৯৫০০৮৫৫১। তার স্ত্রীর তাকে ত্যাগ করে চলে যান। কালিয়া উপজেলার চাঁচুড়ী এলাকার মক্ষীরাণী খ্যাত এক মহিলার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলার পাশাপাশি মহিলাদেরকে ফাঁদে ফেলে সর্বনাশ করার অভিযোগ এসআই করিমের বিরুদ্ধে রয়েছে। এ ব্যাপারে অভিযোগকারী নারী বলেন,‘ করিমের মত প্রতারক,দুশ্চরিত্রের অধিকারী ও জঘন্য প্রকৃতির লোক পুলিশ বিভাগে থাকা উচিৎ নয়। তার প্রেমের ছলনায় স্বামী-সন্তান,সংসার ও ইজ্জত-সম্মান সব হারিয়ে এখন নিঃস্ব। তিনি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।’
এ প্রসঙ্গে নড়াইলের পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম জানান,‘প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় এসআই করিমকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শেষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here