জগন্নাথপুরে হাপাতি হাওরের রাস্তাটি মেঘাখালী নদী গর্ভে ধ্বসে যাওয়ায় যাতায়াতে দুর্ভোগে কৃষকরা

0
356

মো: হুমায়ুন কবির জগন্নাথপুর:
জগন্নাথপুর উপজেলার মীরপুর ইউনিয়নের হাপাতির হাওরে ধান রোপন ও কেঁটে আনার কৃষকদের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটি মেঘাখালী নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে বিলীন হতে চলেছে। ফলে হাওর থেকে ধান কেঁটে গরুর গাড়িসহ অন্যান্য বাহন দিয়ে বাড়িতে আসা নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শ্রীরামসী গ্রামের কৃষকসহ জমির মালিকরা। কৃষকরা হাওরের যাতায়াতের রাস্তাটি নদী ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষাসহ সংস্কারে ইউনিয়ন পরিষদে যোগাযোগ করলেও সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে চলতি বোরো মৌসুমে হাওরে ফলনকৃত ১শ ৬০ মেট্রিকটন ধান কেঁটে বাড়িতে আনতে কৃষকরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। হাপাতির হাওর থেকে ধান কেঁটে মাড়াই দিয়ে ট্রলি গাড়ি, গরুর গাড়িসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ধান বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য মীরপুর ইউনিয়নের শ্রীরামসী গ্রামের জমির মালিক, কৃষক ও বর্গাচাষীরা স্বেচ্ছা শ্রমে মাটি কেঁটে শ্রীরামসী গ্রামের মূল সড়ক থেকে হাপাতির হাওর পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তা নির্মান করা হয়। হাওরের রাস্তাটি নির্মিত হওয়ার পর সরকারি ভাবে কিছু মাটি ভরাটের কাজ করা হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। হাওরের নির্মিত রাস্তাটি মেঘাখালী নদীর পাড় ঘেষে হওয়ায় প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নদীর প্রবল সোতে নদীর পাড়ের মাটি ধ্বসে গিয়ে রাস্তাটি নদী গর্ভে বিলীন হতে চলেছে। ক্রমান্বয়ে হাওরের রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে নদী ভাঁঙ্গনের কবলে পড়ে ধ্বসের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, গত বছরের আগাম বন্যায় নদীর প্রবল সোতে হাওরের রাস্তাটির বিশাল অংশ জুড়ে ধ্বসের সৃষ্টি হলে শ্রীরামসী গ্রামের হাওরের জমির মালিকরা তাদের নিজ উদ্যোগে রাস্তাটি নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষায় ধ্বসে যাওয়া রাস্তার অংশে বাঁশ দ্বারা প্যালাসাইটিং দিয়ে রক্ষার চেষ্টা করেন। পানি নামার সাথে সাথে রাস্তার একই স্থানে বিশাল এলাকাজুড়ে পুনরায় রাস্তাটি ধ্বসে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। কৃষকরা জানান, হাপাতি হাওরের ধান কেঁটে বাড়িতে নিয়ে আসার একমাত্র রাস্তাটি নদী গর্ভে ধ্বসে যাওয়ায় হাওর থেকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ধান বাড়িতে নিয়ে আসার বিকল্প কোন রাস্তা নেই। কৃষকরা আরো জানান, ধান কাঁটার এখনও ১মাস সময় রয়েছে, এ সময়ের মধ্যে বাঁশের প্যালাসাইটিং দ্বারা সরকারি ব্যবস্থাপনায় ধ্বসে যাওয়া রাস্তার অংশে মাটি ভরাটের কাজ করা হলে ট্রলিগাড়ি, গরুর গাড়ি অথবা অন্য যে কোন বাহন দিয়ে হাওর থেকে বাড়িতে ধান নিয়ে আসা সম্ভব হবে। শ্রীরামসী গ্রামের বাসিন্দা কমর উদ্দিন, তফজ্জুল আলী, দুদু মিয়া, সিরাজ আলী, আব্দুস সালাম জানান, হাপাতি হাওরে কৃষকদের যাতায়াত ও ধান নিয়ে আসার সুবিধার্থে মেঘাখালী নদীর পাড় ঘেষে রাস্তাটি তৈরী করা হয়। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নদীর প্রবল সোতে রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় শ্রীরামসী গ্রামের লোকজন স্বেচ্ছা শ্রমে রাস্তাটির মাটি ভরাটের কাজ করে থাকেন। গত বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটির বিশাল এলাকাজুড়ে মাটি ধ্বসে নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় চলতি বোরো মৌসুমে হাওরের ধান কেঁটে মাড়াই শেষে বাড়িতে নিয়ে আসার বিকল্প রাস্তা না থাকায় চরম উদ্বিগ্ন রয়েছেন হাওরের জমির মালিক, কৃষক ও বর্গাচাষীরা। তারা আরো জানান, জরুরী ভিত্তিতে সরকারি ব্যবস্থাপনায় রাস্তাটি নদী ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা সহ রাস্তার ধ্বসে যাওয়া অংশে মাটি ভরাটের কাজ করা হলে হাওরের ধান কেঁটে বাড়িতে নিয়ে আসা সম্ভব হবে। মীরপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য শাহাব উদ্দিন জানান, ইউনিয়ন পরিষদের পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় হাপাতি হাওরের ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তাটি সংস্কার কাজের কোন ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হচ্ছেনা। রাস্তাটি পুন:সংস্কার ও নদী ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষায় উর্দ্বতন কর্তপক্ষকে জানানো হয়েছে।

খবর ৭১/ এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here