জহিরুল ইসলাম মৃধা,সোনারগাঁও(নারায়ণগঞ্জ)প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকা বলেন, কমিউনিটি পুলিশের সদস্যরাই মাদকের সঙ্গে জড়িত। কমিউনিটি পুলিশ সঠিকভাবে কাজ করলে মাদক নির্মূল হবে তাহলে পুলিশের আর কোনো সোর্সের প্রয়োজন হয়না। সকলকে সচেতন হয়ে প্রতিটি সমাজ থেকে মাদক নির্মূল করতে হবে। সোর্সরা নিজেদের এসপি, ডিসি, আইজিপি মনে করেন। মাদকের নিয়ন্ত্রন করে সোর্স। থানার ভাবমূর্তি নষ্ট হয় তদবিরকারীদের জন্য। তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার সোনারগাঁও থানার আয়োজনে ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
সাংসদ আরো বলেন, মোগরাপাড়া চৌরাস্তা সিএনজি ষ্ট্যান্ড করে যানজট নিরশন করা হবে। চালকদেরও আইন মেনে চলতে হবে। আগামী শনিবারের মধ্যে আমান গ্রুপের তাদের গাড়ী চলাচলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তা না হলে আগামী রোববার থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
অনুষ্ঠানে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ-অ ল) সাজিদুর রহমান, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আক্তার।
বক্তব্য রাখেন, বারদী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জহিরুল হক, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান আহম্মেদ মোল্লা বাদশা, বৈদ্যোরবাজার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সুরাইয়া বেগম, পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোর্শেদা বেগম, মানবাধিকার নেত্রী জাহানারা বেগম প্রমুখ।
সভায় মানবাধিকার নেত্রী জাহানারা বেগম বলেন, সোনারগাঁ থানা পুলিশ মাদক ব্যবসায়ীদের যে তালিকা তৈয়ারী করেছে তার মধ্যে ভাল মানুষের নামও রয়েছে।
সনমান্দী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য লুৎফা বেগম বলেন, মারুবদী গ্রামের পাশের বিলে তাবু টানিয়ে প্রকাশ্যে মাদক সেবন ও বিক্রি হচ্ছে।
শম্ভুপুরা এলাকার বাসিন্দা মনির হোসেন বলেন, তার এলাকায় প্রকাশ্যে চলছে ইয়াবা সেবন ও বিক্রি। পুলিশ আটক করার পর আবার উৎকোচ নিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে।
পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোর্শেদা বেগম বলেন, তাদের এলাকায় প্রতিনিয়ত চুরির ঘটনা ঘটছে।
মাহাবুবুল ইসলাম সুমন বলেন, পুলিশ সাদা পোশাকে সোর্সের মাধ্যমে মাদক ব্যবসায়ীদের আটক করে। সোর্সরাই ইয়াবা পকেটে ঢুকিয়ে দিয়ে আটক করিয়ে কিছুক্ষন পরে ছাড়িয়ে নেয়।
ফরিদ হোসেন বলেন, মোগরাপাড়া চৌরাস্থায় প্রতিনিয়ত যানজট লেগেই থাকে। এ যানজটে আটকা পরে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
জামপুর এলাকার বাসিন্দা দেওয়ান কামাল বলেন, জামপুরের জুগিপাড়া ও বশিরগাঁও গ্রামের অধিকাংশ পরিবার মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও সনমান্দী ইউনিয়নের বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম খোকন বলেন, থানা যেন অপরাধীদের অভয়য়াশ্রম না হয়। সাধারন মানুষ প্রভাবশালীদের দ্বারা নির্যাতিত হয়ে থানায় এসে যেন আবারো নির্যাতিত না হয়।
পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য রুনা বেগম বলেন, শুধু পুরুষ নয় নারীরাও মাদকের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েছে।
বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সুরাইয়া বেগম বলেন, তার এলাকায় সন্ধ্যার পর পর এক দল যুবক পেয়ারা বাগানে ইয়াবা সেবন করে। পরে রাতের বেলা তারা চুরি, ছিনতাই করে বেড়ায়।
সিএনজি মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক আলা উদ্দিন বলেন, মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় সিএনজি ষ্ট্যান্ড না থাকায় প্রতিনিয়ত এখানে যানজট লেগে আছে।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম বলেন, সোনারগাঁ থানায় গত ৭ মাসে মাদকের বিরুদ্ধে ৩৭২টি মামলা হয়েছে। ২৭ হাজার পিছ ইয়াবা, ১৩৪ কেজি গাজাঁ, ১৪৭২ বোতল ফেন্সিডিল, ৩০২ ক্যান বিয়ার, ৩টি পিস্তল এবং ৪৬৮ জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মাদকের ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈয়ারী করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে মাদক বিরোধী সভা করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ-অ ল) সাজিদুর রহমান বলেন, মাদক এখন জাতীয় সমস্যা। আপনারা মাদক ব্যবসায়ীর তালিকা দেন গোপনে আমরা তথ্যকারীর নাম প্রকাশ করবোনা। যারা মাদকের সঙ্গে জড়িত নয় তাদের নাম তালিকায় আসলে সংশোধন করা হবে। সাধারন মানুষ হয়রানীর স্বীকার হবেনা। মাদক নিয়ন্ত্রনে পুলিশের পাশাপাশি সকল পেশাজিবীকে স্বোচ্চার হতে হবে।
এছাড়াও ওপেন হাউস ডে সভায় বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা সদস্য, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন। এসময় উপজেলার মাদক নিয়ন্ত্রন, যানজট সমস্যাসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
খবর৭১/এস: