খবর ৭১: বিজ্ঞানীরা প্রাণীদের মোটা দাগে দুই ভাগে ভাগ করেছেন। একদল উদ্ভিদভোজী আর একদল মাংসভোজী। সাধারণত প্রাণীরা মাংসাশী হয়ে থাকে। কিন্তু প্রাণিজগতে এমন কিছু উদ্ভিদ রয়েছে যারা মাংস খেয়েই জীবন ধারণ করে থাকে। তবে এই ধরনের মাংসাশী উদ্ভিদরা চাইলেই প্রাণীদের মতো চলাফেরা করে শিকার করতে পারে না। শিকারকে নাগালের মধ্যে পেতে নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করতে হয় তাদের।
মূলত বিভিন্ন প্রজাতির কীটপতঙ্গকে লোভ দেখিয়ে কাছে এনে শিকার করে থাকে এরা। এখন পর্যন্ত এই ধরনের যেসব শিকারি মাংসাশী উদ্ভিদের কথা জানা গেছে তার মধ্যে অন্যতম ‘সানডিউ (Sundews, or the Drosera) বা সূর্য শিশির গাছ’। আরেকটি পোকা শিকার গাছ কলসি উদ্ভিদ (The Pitcher Plant)। কলসি উদ্ভিদের কলসি উজ্জ্বল লাল রঙের মধুর মতো মিষ্টি রসে পূর্ণ থাকে। পতঙ্গরা এই মধুর লোভে কলসির উপরে এসে বসেই পিছলে ভেতরে পড়ে যায়। সাথে সাথে কলসির মুখ বন্ধ করে ফেলে এরা। এরপর সেই মধুই পতঙ্গকে খাবারে পরিণত করে।
এই কলসি গাছের মতোই শিকার ধরতে ওস্তাদ ‘সূর্য শিশির’ গাছ। সূর্য শিশির গাছের পাতায় চুলের মতো কর্ষিকা থাকে। কর্ষিকার মাথায় থাকা আঠা চকচকে শিশির বিন্দুর মতো মনে হয়। এই শিশির বিন্দু দেখলেই তার প্রতি আকৃষ্ট হয় পতঙ্গ। এরপর সেই আঠালো কর্ষিকা দিয়ে দ্রুত আটকে ফেলে পতঙ্গদের। চাইলেও আর সেই জাল থেকে বের হতে পারে না পতঙ্গ। এরপর কর্ষিকা গুটিয়ে পতঙ্গকে পাতার মধ্যে নিয়ে যায়। আর পাতা থেকে নিঃসৃত এক ধরনের রস পতঙ্গকে খাবারে পরিণত করে। মাংসাশী উদ্ভিদের মধ্যে আরেকটি শিকার উদ্ভিদ হলো ভেনাস ফ্লাইট্র্যাপ (Venus Flytrap)। পতঙ্গকে ধরতে এরাও চমত্কার ফাঁদ তৈরি করে।
এতদিন জানা ছিল সূর্য শিশিররা তাদের প্রতি আকৃষ্ট পতঙ্গকেই শিকার করে। তবে এবার জাপানের একদল বিজ্ঞানী জানিয়েছেন আশেপাশের গাছে বসা পতঙ্গকেও নিজেদের শিকারে পরিণত করে সূর্য শিশির। তাদের এই অতিমাত্রার লোভের কারণে বিপদে পড়ে আশেপাশের গাছগুলো। কারণ পরাগায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে পতঙ্গরা।-ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক