উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:
নড়াইলে যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে এসিড নিক্ষেপের দায়ে স্বামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ৭৫ হাজার টাকা জরিমানার রায় দিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সানা মোহাম্মদ মারুফ হোসেন। যাবজ্জীবন দ-প্রাপ্ত ইমদাদুল হক সাগর (৩০) লোহাগড়া উপজেলার পাঁচুড়িয়া গ্রামের আয়ুব হোসেন শেখের ছেলে। এ মামলার অপর ৩ আসামি বেকসুর খালাস পেয়েছেন। জনাকীর্ণ আদালতে বিচারক এই রায় ঘোষণা করেন। মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৯ সালে রেজিস্ট্রি কাবিন মূলে পাঁচুড়িয়া গ্রামের হাবিবুর রহমান শেখের মেয়ে হেলেনা খানমের সঙ্গে একই গ্রামের আয়ুব হোসেন শেখের ছেলে ইমদাদুল হক সাগরের বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামী ইমদাদুল তার স্ত্রী হেলেনা ও তার পিতার কাছে যৌতুক হিসেবে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। হেলেনা ও তার পিতা হাবিবুর যৌতুকের টাকা দিতে ব্যর্থ হলে ২০১২ সালের ১০ জুন সকালের দিকে স্বামী ইমদাদুল স্ত্রীকে লক্ষ্য করে এসিড নিক্ষেপ করে। এতে স্ত্রী হেলেনার মুখমন্ডল ঝলসে যায়। এ ঘটনায় হেলেনার পিতা হাবিবুর রহমান বাদি হয়ে ইমদাদুল হক সাগর, সাগরের পিতা আয়ুব হোসেন শেখ, আয়ুবের স্ত্রী রোকেয়া বেগম এবং মেয়ে সুমী খানমকে আসামি করে লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামি ৪ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশীট প্রদান করেন। মামলার স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্যগ্রহণ ও শুনানী শেষে বিচারক আসামি ইমদাদুল হক সাগরকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। বাকি ৩ আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়। রায় ঘোষণার সময় সাজাপ্রাপ্ত ইমদাদুল হক সাগর ও খালাসপ্রাপ্তরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এদিকে স্ত্রীর ওপর এসিড নিক্ষেপের ঘটনাকে নিন্দনীয় আখ্যা দিয়ে নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের পক্ষ থেকে এক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৬-মাচ) বিবৃতিতে ক্লাবটির সভাপতি উজ্জ্বল রায় ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ হিমেল মোল্যা বলেন, বাংলাদেশ সরকার নারী নির্যাতন ও যৌতুকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেও এর তীব্রতা এখনও বাংলাদেশে প্রকট আকার ধারণ করেছে। কাজেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরও বেশি কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করলে অচিরেই এ অপরাধ বিলুপ্ত হবে বলেও তাঁরা মনে করেন।
খবর ৭১/ ই: