উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:
দেশব্যাপী মাদকের ভয়াবহ বিস্তার রোধে পহেলা মার্চ ২০১৮ থেকে একযোগে সারাদেশে তথ্য অভিযান শুরু হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় মাননীয় জেলা প্রশাসক মোঃ এমদাদুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে জেলা তথ্য কর্মকর্তা মোঃ মেহেদী হাসান এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কর্তৃক গণসচেতনতামূলক শিক্ষাঙ্গন কর্মসূচি ও ধর্মপ্রতিষ্ঠানে প্রচারণামূলক সা¤প্রতিক কর্মকাÐের ভূঁয়সী প্রশংসা করেন। বৃহস্পতিবার (১লা মার্চ) এ বিষয়ে তারা সকল প্রকার সহযোগিতারও আশ্বাস প্রদান করেন। এছাড়াও ধর্মীয় অনুশাসনই সামাজিক স্থিরতার অন্যতম নিয়ামক। তাই ধর্মপ্রতিষ্ঠানভিত্তিক প্রচারণাকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে নগরীর “নড়াইল আশরাফুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানা” মসজিদে আছরের নামাজের পর উপস্থিত মুসল্লীগণকে ইসলামে মাদকদ্রব্য গ্রহণের নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে বয়ান প্রদান করা হয়। মাদ্রাসা ও এতিমখানার মোহতামীম জনাব হাফেজ মাওলানা এনামুল হাসান নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়েছে নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায় ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ হিমেল মোল্যা, দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার নড়াইল প্রতিনিধি মো.শাহীদুল ইসলাম শাহী, নড়াইল জেলা সাংবাদিক ইউনিটির সাধারন সম্পাদক মোঃ জিয়াউর রহমান জামী, বাংলা নিউজ ২৪.কম ও চ্যানেল নাইন-এর নড়াইল জেলা প্রতিনিধি ইমরান হোসেন, যায়, দৈনিক ভোরের বাংলা পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর শেখ, একই পত্রিকার বার্তা সম্পাদক মোঃ হাবিবুর রহমান শাওন, নড়াইল প্রতিদিনের কন্ঠের বুলু দাস, তুহিনসহ নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সকল সদস্য বৃন্দ, ক্লাবটির সভাপতি উজ্জ্বল রায় ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ হিমেল মোল্যা এবং জেলা কার্যালয়ের ইন্সপেক্টর জনাব বিদ্যুৎ বিহারী নাথ এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এ বিষয়ে ইন্সপেক্টর জনাব বিদ্যুৎ বিহারী নাথ বলেন, সকল ধর্মেই মাদকদ্রব্যকে হারাম করা হয়েছে। যেমন, পবিত্র কুরআনের সুরা মায়েদাহ ৯০-৯১-তে পরিস্কার বলা হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারক শরসমূহ শয়তানের কার্য বৈ কিছু নয়। অতএব এগুলো থেকে বেঁচে থাক, যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও। শয়তান তো চায়, মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মাঝে শত্রুতা ও বিদ্বেষ স ারিত করে দিতে এবং আল্লাহ্-এর স্মরণ ও ছালাত থেকে তোমাদেরকে বিরত রাখতে। অতএব তোমরা এখন কি নিবৃত্ত হবে?’। হিন্দু ধর্মের প্রধান ধর্ম গ্রন্থ বেদে মদ্যপান থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। যেমন ঋকবেদে ১০।৩৪।১৩ শ্লোকে বলা হয়েছে “মদ পান করার পর মদের নেশা পানকারির হৃদয়ে স্থান লাভের জন্য লড়াই শুরু করে”। অর্থাৎ মদ পান করার ফলে মদের নেশা মানুষের মন দখল করে নেয় ফলে সে ভালো-খারাপ, পাপ-পুন্য সব কিছুই ভুলে যায়। পবিত্র বাইবেলে মাদকদ্রব্য সেবনে লিপ্তকারীদেরকে দোজখের আগুনের ছুঁড়ে ফেলার কথা বলা হয়েছেঃ “ঈর্ষা, হত্যা, মাদকে উন্মত্ততা, আমোদ-প্রমোদ ইত্যাদিতে যারা যোগ দিবে- যেরূপ আমি পূর্বে তোমাদেরকে বলেছি, তারা ঈশ্বরের স্বর্গালোক থেকে বহিষ্কৃত হবে।” গ্যালাসিয়ান ৫:২১ । তাই মদের নেশা যাতে মনে স্থান করতে না পারে তার জন্য মদ থেকে দূরে থাকতে হবে। অতঃপর, ইসলামের রীতি অনুসারে মাদকবিরোধী শপথ পাঠ করানো হয় এবং জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়, নড়াইলের পক্ষ থেকে “নড়াইল আশরাফুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানা” এর মোহতামীম জনাব হাফেজ মাওলানা এনামুল হাসান এর হাতে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহারের কুফল সম্বলিত বাধাই পোস্টার ও স্মারক মগ উপহার হিসেবে তুলে দেয়া হয়। এদিকে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের এরূপ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে ক্লাবটির পক্ষ থেকে এক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। বিবৃতিতে যৌথভাবে ক্লাবটির সভাপতি উজ্জ্বল রায় ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ হিমেল মোল্যা বলেন, ইন্সপেক্টর জনাব বিদ্যুৎ বিহারী নাথের উদ্যোগে নড়াইল জেলায় মাদকসেবীরা ও ব্যবসায়ীরা বিলুপ্তির পথে। আমরা আশা করি এরূপ অভিযান অব্যাহত থাকলে অচিরেই নড়াইল জেলাকে মাদকমুক্ত জেলা হিসেবে ঘোষণা করা সম্ভব হবে।
খবর৭১/এস: