খবর ৭১ঃ শ্রীলংকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ উগ্রপন্থী সিংহলি বৌদ্ধরা আবারো মসজিদ ও মুসলিম মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় কমপক্ষে পাঁচ জন লোক আহত হয়েছেন।
সোমবার গভীর রাতে পূর্বাঞ্চলীয় শহর অ্যামপারায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার দেশটির পুলিশ এই তথ্য জানিয়েছে।
গত বছর থেকে এই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে নতুনকরে উত্তেজনা বাড়তে শুরু করে। দেশটির উগ্রপন্থী বৌদ্ধদের অভিযোগ, মুসলিমরা সেখানকার অন্য ধর্মের মানুষদের জোরপূর্বক ইসলামে ধর্মান্তরিত করছে এবং বৌদ্ধ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলো ধ্বংস করছে। তবে, তাদের এই অভিযোগ সম্পূর্ণই ভিত্তিহীন বলে সেখানকার মুসলিমরা জানিয়েছেন।
পুলিশের মুখপাত্র রুয়ান গুনাসেকারা বলেন, সোমবার গভীর রাতে উগ্র সিংহলি বৌদ্ধ জনতা পূর্বাঞ্চলীয় শহর অ্যামপারার একটি মসজিদ, চারটি দোকান এবং বেশ কয়েকটি যানবাহনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কাউ গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে গুনাশেখারা জানান।
শ্রীলঙ্কার মুসলিম কাউন্সিল (এমসিএসএল) এই আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছ। একই সঙ্গে ঘটনার একটি নিরপেক্ষ তদন্ত করতে এবং অপরাধীদের গ্রেপ্তারের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠনটি।
কাউন্সিলের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ধর্মীয় বিশ্বাস, বর্ণ বা জাতি নির্বিশেষে সকল নাগরিকের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা সরকারের একমাত্র দায়িত্ব।’
এতে আরো বলা হয়, ‘উগ্রদের এই ধরনের সহিংসতা দিনের পর দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং মুসলিম ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।’
গত বছর দেশটির চরমপন্থী বৌদ্ধরা মুসলিম মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং মসজিদসমূহ অগ্নিসংযোগসহ মুসলমানদের উপর ২০টিরও বেশি হামলা চালায়। কূটনীতিকরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে এসব সহিংসতার তীব্র নিন্দা করেছিল এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার ও ধর্মের স্বাধীনতা বজায় রাখার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল।
ওই সময় দেশটির প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা এবং প্রধানমন্ত্রী রণিল বিক্রমাসিংয়ে সংখ্যালঘুদের রক্ষা করার অঙ্গীকার করেছিলেন, কিন্তু মুসলমানদের বিরুদ্ধে আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে।
শ্রীলংকার মোট ২১ মিলিয়ন জনসংখ্যার মধ্যে মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় ৯ শতাংশ। বৌদ্ধরা প্রায় ৭০ শতাংশ এবং হিন্দু প্রায় ১৩ শতাংশ।
সূত্র: ভয়েজ অব আমেরিকা
খবর ৭১/ইঃ