খবর ৭১:কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে গৃহকর্তীর নির্যাতনে গুরুতর অসুস্থ কাজের মেয়ে ১১ বছরের শিশু ফরিদা। তিন দিন ধরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সে।
জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের ডাকনির পাড় গ্রামের দিনমজুর জামাল উদ্দিনের মেয়ে ফরিদাকে (৬) বাড়িতে কাজের জন্য নিয়ে আসেন পৌরসভার ঠুটাপাইকর গ্রামের শিক্ষক দম্পতি ফুলবাড়ী মহিলা কলেজের প্রভাষক হাবিবুল হক জামিল ও উত্তর সুখাতী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তহমিনা বেগম। এরপর থেকে কাজে সামান্য পরিমান ত্রুটি হলেই প্রায়ই তার কপালে জুটত বকুনি ও চর থাপ্পর।
সময়ের সাথে শিশুটি বড় হতে থাকলে তার ওপর নির্যাতনের মাত্রাও বাড়তে থাকে। ধীরে ধীরে তা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছালে সম্প্রতি মেয়েটি দিনমজুর বাবার বাড়িতে ফিরে গিয়ে বিষয়টি জানায়। গৃহকর্তী তহমিনার বাবার বাড়ি ও শিশুটির বাড়ি একই গ্রামে হওয়ায় কয়েকদিন পরে ওই শিক্ষক দম্পতি শিশুটির বাবা-মাকে বুঝিয়ে শিশুটিকে পুনরায় তাদের বাড়িতে নিয়ে আসে।
প্রথম কয়েকদিন ভালো ব্যবহার করলেও পরবর্তীতে ফের শুরু হয় শারীরিক নির্যাতন। শুক্রবার বিকালে গৃহকর্তী তহমিনা বেগম সামান্য কারণে ১১ বছরের শিশু ফরিদাকে প্রচণ্ড মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয়। ক্ষতস্থান থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণে সন্ধ্যায় অবস্থার অবনতি ঘটলে শিক্ষক দম্পতি মৃতপ্রায় শিশুটিকে নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে পাঠায়। অবস্থা আশংকাজনক দেখে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতাল থেকে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে শিশুটিকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালের শিশু বিভাগের ১৮নং ওয়ার্ডে ভর্তি করে রেখে পালিয়ে যায় ওই দম্পতি। এখন পর্যন্ত তারা পলাতক রয়েছে।
এদিকে শিশুটির মৃত্যুর খবর শুনে তার বাবা জামাল উদ্দিনসহ পরিবারের লোকজন নাগেশ্বরী থানায় গিয়ে মৌখিক অভিযোগ করে।
নাগেশ্বরী থানার ওসি জাকির উল ইসলাম বলেন, রাতেই পৌরসভার ঠুটাপাইকর গ্রামে ওই শিক্ষক দম্পতির বাড়িতে গিয়ে জানা যায় নির্যাতনের শিকার শিশুটি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। তবে এসময় বাড়িতে ওই শিক্ষক দম্পতি ছিলেন না। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ থানায় মামলা দায়ের করেনি।
রোববার শিশুটির বাবা জামাল উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শনিবার তার জ্ঞান ফিরেছে। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে জানিয়েছেন এখন সে আশংকামুক্ত।
খবর ৭১/ এস: