বাগেরহাট প্রতিনিধি:
বাগেরহাটের ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও সেচ্ছাচারিতার অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়েছে। রোববার সরেজমিনে তদন্তে আসেন জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিচালক প্রশিক্ষন সাজ্জাদ হোসাইন। এদিন বাগেরহাটের ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজির সম্মেলন কক্ষে প্রায় সাড়ে চার ঘন্টা শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের কাছ লিখিত ও মোখিক তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেন। আজ সোমবারও তদন্ত টিমের কর্মকর্তা সরেজমিনে তদন্ত ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করবেন বলে জানান শিক্ষকরা।
এদিকে আগামী ২৮ ফেব্রয়ারি প্রথম ও তৃতীয় পর্বের পরিপুরক পরিক্ষা হবার কথা রয়েছে। তবে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা হতাশার মধ্যে রয়েছে। তারা ক্যাম্পাসের আশপাশের বিভিন্ন স্থানে আশ্রায় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বাগেরহাটের ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলতি প্রায় ৫০ জেলার শিক্ষার্থীরা অধ্যানরত রয়েছে।
ইনস্টিটিউটের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান বাপ্পী ও শরিফুল ইসলামসহ শিক্ষার্থীরা বলেন, তদন্ত টিমের প্রধানের কাছে আমরা অধ্যক্ষ সারের নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির তথ্য তুলে ধরেছি এবং লিখিত দিয়েছি। আমরা আশাবাদি তদন্তে প্রতিষ্ঠানের নানা অনিয়মের কারনে প্রতিষ্ঠানের প্রধানের বিরুদ্বে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
তারা আরও বলেন, হোস্টেলে নিম্নমানের খাবার সরবরাহ, হোস্টেল কক্ষ শিক্ষার্থীদের না দিয়ে বাইরের লোকের কাছে ভাড়া দেওয়া, টাকার বিনিময়ে শিক্ষার্থী ভর্তি, সরকারি এক লাখ ৮৪ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে গ্যাসের বিল জন্য জোর পূর্বক টাকা আদায়, হলের পরিচ্ছন্ন কর্মী নিয়োগ না দিয়েও কাগুজে লোক দেখিয়ে মাসে মাসে টাকা উত্তোলনসহ প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরা হয়।
ইনস্টিটিউটের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী উম্মে কুলসুম ও রাজিউল হাসান বলেন, যোক্তিক আন্দোলন করার পর ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষনা করেছে। কিন্তু আগামী ২৮ ফেব্রæয়ারি প্রথম ও তৃতীয় পর্বের পরিপুরক পরিক্ষা হবার কথা রয়েছে। যদি পরিক্ষা না হয় তাহলে শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়বে।
নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. সিরাজুল ইসলামের অপসারণ ও নতুন অধ্যক্ষ পদায়নের দাবিতে সব ধরণের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। সদর উপজেলার চিতলী বৈটপুর এলাকায় অবস্থিত আইএমটি বাগেরহাটে প্রায় দুই বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে আছেন সিরাজুল ইসলাম। অধ্যক্ষের অনিয়ম-দুর্নীতির ১৮টি অভিযোগ তুলে ধরে গত ১২ ফেরুয়ারি মন্ত্রনালয়ে একটি অবহিতকরণ পত্র পাঠায় শিক্ষক-কর্মচারীরা।
এঘটনায় ১৫ ফেব্রয়ারি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো। পরে সংশ্লিষ্ট দপ্তর জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিচালক প্রশিক্ষন সাজ্জাদ হোসাইনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তবে তদন্ত কমিটির প্রধানকে এবিষয়ে একাধিকবার যোগায়োগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মুঠোফোন রিসিভ করেননি।
বাগেরহাট ইন্সটিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি’র ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের করা অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
খবর৭১/এস: