খবর৭১: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় কারাগারে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অন্য কোনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর খবর সত্য নয় বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। এর মধ্যে ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লায় বাসে পেট্রল বোমা হামলার ঘটনায় করা মামলায় খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে খবর প্রকাশ হয়েছে সোমবার। এর বাইরে ২০০৭ ও ২০০৮ সালে করা দুটি মামলায় তাকে কারাগারে হাজির করার আদেশ এসেছে।
এ ছাড়াও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিকৃত তথ্য দেয়ার অভিযোগে নড়াইলে করা একটি মামলায় এবং ১৫ আগস্ট ভুয়া জন্মদিন পালনের অভিযোগে ঢাকায় করা আরও একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপসন বেগম খালেদা জিয়ার নামে যেসব মামলার ওয়ারেন্ট আছে সেসব মামলায় তাকে এখনো আটক দেখানো হয়নি বা দেখানো হবেও না। কয়েকদিন ধরে যেটা গণমাধ্যমে প্রচার হচ্ছে এটা ভুল ইনফরমেশন ছিল।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া শুধুমাত্র জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় জেল হেফাজতে রয়েছেন। উনি আদালত কর্তৃক যে মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন সেই মামলায় তিনি কারাবন্দী আছেন। এছাড়া অন্য কোন মামলায় তাকে শোন এ্যারেস্ট দেখানে হয়নি। বা এ ধরনের কোন কিছু আমলে আনা হয়নি।’
‘তার নামে আরও দুটি মামলায রয়েছে, সেগুলোতে তিনি যথাসময়ে আদালতে যাবেন এখানে আমাদের করার কিছু নেই। আর দুটি মামলায় জামিনে আছেন। আর তার নামে যেসব মামলা আছে যেমন শাহবাগ থানার একটি ও বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি মামলায় আগামী চলতি মাসের ১৮ তারিখে হাজিরা দিতে যাবেন।’
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন তিনি (খালেদা জিয়া) ওইসব মামলায় সময় মত যদি কোর্টে হাজিরা দেন, তখন কোর্টই সিদ্ধান্ত নেবে কোন মামলা তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।’
খালেদা জিয়ার কারাবাস দীর্ঘায়িত করতে সরকার চেষ্টা করছে-বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে এক প্রশ্নে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘সরকার অতি উৎসাহী হয়ে কোন কিছুই করছে না বরং আদালত যেভাবে নির্দেশনা দেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা সরকার তার বাইরে যাননি, যাবেনও না। আমরা শুধু আদালতের সিদ্ধান্ত ইমপ্লিমেন্ট করছি।’
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির মানববন্ধনে বাধা না দেয়া সরকারের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন কি না-এমন প্রশ্নও ছিল মন্ত্রীর কাছে। তিনি বলেন, ‘দেখুন সরকার আগেও কখনো অতি উৎসাহী হয়ে কিছু করেনি, এখনও করছে না। তারা যে পর্যন্ত যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করে এবং কোন খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি না করে ততক্ষণ পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোন অ্যাকশন নেয় না।’
‘আপনারা দেখেছেন পুলিশের কাছ থেকে রাইফেল ছিনিয়ে নিয়ে পুলিশকে মারা হয়েছে, প্রিজনভ্যান ভাঙা হয়েছে, সেখান থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। আমরা ভিডিও ফুটেজ দেখে যাদেরকে চিহ্নিত করতে পেরেছি তাদেরকে গ্রেপ্তার করেছি। তার বাইরে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।’
খালেদা জিয়াকে সুযোগ সুবিধা ছাড়া পরিত্যক্ত কারাগারে রাখা বা পায়ে সমস্যা থাকলেও দোতলায় রাখার বিষয়ে বিএনপির অভিযোগের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন এটা তার সামাজিক মর্যাদার বিবেচনায় করা হয়েছে। তাকে দীর্ঘ পথ দূরে কাশিমপুর কিংবা কেরানিগঞ্জ নিয়ে গেলে সেখান থেকে আনা নেওয়া সমস্যা তৈরি হবে।’
‘সেখানে অনেক বেশি কয়েদি থাকায় তার জন্য সমস্যা তৈরি হবে। এজন্য তার সামাজিক মর্যাদা বিবেচনা করেই তাকে এখানে রাখা হয়েছে।’
খবর৭১/এস: