খবর৭১: এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসে ব্যবহার করা ৩০০টি মোবাইল ও টেলিফোন নম্বর শনাক্ত করে তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এসব নম্বর যারা ব্যবহার করতেন তাদের মধ্যে মেডিক্যাল কলেজ ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ছাড়াও আছেন অভিভাবকরা।
রবিবার সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ সংক্রান্ত তথ্য যাচাই-বাছাই কমিটর প্রথম সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।
সভায় জানানো হয়, এরই মধ্যে শনাক্ত হওয়া নম্বরগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে আর এদেরকে ধরতে অভিযানও শুরু হয়েছে।।
কমিটির প্রধান এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব আলমগীর সভায় সভাপতিত্ব করেন।
প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে তদন্ত করতে গত ৪ ফেব্রুয়ারি এই গঠন করা হয়। পরদিন থেকে কাজ শুরু করে তারা।
গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এসএসপি পরীক্ষার প্রতিটি বিষয়েই পরীক্ষা শুরুর আগেই প্রশ্ন এসেছে সামাজিক মাধ্যমে।
পরীক্ষা শুরুর ২৪ মিনিট থেকে দেড় ঘণ্টা আগে প্রশ্নগুলো আপ করা হয় ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে।
যারা সামাজিক মাধ্যমে প্রশ্ন আপ করেছে, তারা রীতিমতো মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে যোগাযোগের আহ্বান জানিয়ে আসছে। এমনকি তাদেরকে কিছু করা যাবে না বলেও সামাজিক মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ দিয়ে আসছিল তারা।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি তদন্ত কমিটি গঠনের পাশাপাশি প্রশান ফাঁসকারীদের ধরতে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পরীক্ষার্থী, ব্যাংকার, অভিভাবকসহ গ্রেপ্তার হয়েছে ৩০ জনের বেশি।
পুলিশ ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার ১৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছে, প্রশ্ন পরীক্ষার হলে নেয়ার সময় ছবি তুলে সেগুলো তাদের কাছে পাঠানো হতো।
তবে যারা এই কাজটি করে আসছেন, তাদেরকে এখনও শনাক্ত বা গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে এ কাজেও দ্রুত সাফল্যের আশা করছে তারা।
সচিবালয়ে সভা শেষে আলমগীর বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে যে অভিযোগ এসেছে, সেগুলো নিয়ে কাজ করা। এ পর্যন্ত তিনশ মোবাইল ও টেলিফোন নম্বর চিহ্নিত করে তা ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। এই নম্বরধারীদের অধিকাংশই শিক্ষার্থী যারা মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং বা কম্পিউটার সায়েন্সের মতো বিষয়ে পড়ালেখা করছেন। অনেক অভিভাবকের নম্বরও রয়েছে এই তালিকায়।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত ওই নম্বরগুলোর মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নম্বরও রয়েছে। তারা আবার খোঁজ নিচ্ছেন, কেন তাদের নম্বর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
মো. আলমগীর জানান, এরই মধ্যে শনাক্ত হওয়া নম্বরের ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযানে নেমেছে।
‘টেলিফোন নম্বর যাদের পাওয়া যাবে, তাদের সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাবলিক পরীক্ষা আইন ও সাইবার অপরাধ আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পরীক্ষা বাতিলের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হচ্ছে-এমন প্রশ্নে আলমগীর বলেন, ‘দেখা যাচ্ছে, পরীক্ষার মাত্র ৫-১০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীরা প্রশ্নপত্র পাচ্ছে। ওই প্রশ্ন পেয়ে তো বেশি প্রভাব পড়ার সুযোগ নেই। আবার দেখা গেছে, বেশ আগে ফাঁস হলেও পাঁচ বা ১০ হাজার ছেলেমেয়ে এসব প্রশ্ন পেয়েছে। কিন্তু পরীক্ষা দিয়েছে ২০ লাখের বেশি। এমন বিষয়গুলো হিসাব-নিকাশ করব। তারপর সুপারিশ করা হবে। কর্তৃপক্ষ (মন্ত্রণালয়) সিদ্ধান্ত নেবে।’
আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ সংক্রান্ত তথ্য যাচাই-বাছাই কমিটির দ্বিতীয় সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান আলমগীর।
খবর৭১/জি: