মোঃ জহির রায়হান-সিরাজগঞ্জঃ
প্রেমের মরা জলে ডোবে না- গানের লাইনটি অবশেষে সত্যি করে তাড়াশে দুই তরুন তরুনী গ্রাম ছাড়া। আট বছর প্রেমের সমপর্কের পর বিয়ে করে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার এক নব দম্পতি গ্রাম ছাড়া হয়েছেন। একই কারণে ওই ছেলের পরিবারও গ্রাম ছেড়েছেন।
পুলিশ ও মেয়ের পরিবারের দায়ের করা অপহরণ মামলা এবং অব্যাহত হুমকি-ধমকির কারণে গত ১৫ দিন ধরে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তাড়াশের বারুহাস ইউনিয়নের বিনসাড়া গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে ঢাকার একটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মতিউর রহমান দুর্জয়ের (২২) সঙ্গে মনোহরপুর গ্রামের রওশন আলী সরকারের মেয়ে বগুড়া ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির শিক্ষার্থী রিতা সরকারের (২১) গত ৮ বছর ধরে প্রেমের সম্পক চলে আসছিল। গত ৭ জানুয়ারি ওই যুগল বাড়ির কাউকে না জানিয়ে বিয়ে করেন।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, গত ১৩ জানুয়ারি রাত ১১টার দিকে পুলিশ দুর্জয়ের বাড়ি গিয়ে তার পরিবারের কাছে রিতা সরকারকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য চাপ দেয়। সেই সঙ্গে দুর্জয়ের বাবাকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
পরের দিন দেন-দরবার করে টাকার বিনিময়ে স্থানীয় মাতবর হাফিজ খানের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়। এরপর থেকে পুলিশ মাঝে মধ্যে দুর্জয়দের বাড়ি গিয়ে তার মা-বাবাসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের গালাগাল করে রিতা সরকারকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। একপর্যায়ে ওই পরিবারের সদস্যরা নিরুপায় হয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
শনিবার দুপুরে বর মতিউর রহমান দুর্জয় ও কনে রিতা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, “আমরা দুইজনেই প্রাপ্তবয়স্ক। আমরা উভয়ে ভয়ভীতি বা কারও দ্বারা প্ররোচিত না হয়ে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পকের টানে বিয়ে করেছি”।
রিতা সরকার বলেন, “আমাদের সম্পকের কথা আমার পরিবারকে অবহিত করলেও তারা জোরপূর্বক অন্যত্র বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। সে কারণেই আমরা নিজেরাই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিই”।
মামলার বাদী রিপন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,” মতিউর রহমান দুর্জয়ের স্বজনদের কোনো হুমকি-ধমকি দেয়া হয়নি। তবে বিষয়টি আপস-মীমাংসার জন্য একাধিকবার তাদের বাড়িতে যাওয়া হয়েছিল”।
এ ব্যাপারে তাড়াশ থানা পুলিশের এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন পুলিশের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রিতা সরকারের ভাই রিপন সরকার বাদী হয়ে গত ১৮ জানুয়ারি মতিউর রহমান দুর্জয় ও তার বাবা ইউনুস আলীসহ চারজনকে আসামি করে অপহরণ মামলা করেছেন। মামলার কারণেই আসামিদের গ্রেফতার করতে অভিযান চালানো হয়েছে। এখানে হুমকি-ধমকি দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
খবর ৭১/ ই: