খবর৭১: বাংলাদেশ এখন ওষুধ-রপ্তানিনির্ভর দেশ। কারণ বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় ওষুধের মাত্র তিন শতাংশ আমদানি করে। অথচ প্রয়োজনীয় ওষুধের ৮০ শতাংশই আমদানি করতে হতো বছর কয়েক আগে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ওষুধই বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্যের একটি হতে পারবে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের একশটিরও বেশি দেশে বছরে প্রায় সাতশ’ কোটি টাকার ওষুধ রপ্তানি করছে। আমদানির পরিমাণ একেবারে কমে প্রায় শূন্যের কোটায় নিয়ে আসায় কোটি কোটি ডলার সাশ্রয় হচ্ছে।
পাট চা চামড়া কিংবা হিমায়িত মৎস্যখাতে দেশের রপ্তানি আয় কমলেও বাংলাদেশের ওষুধ বিশ্ববাজারে বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। ইউরোপ, জাপান, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি ওষুধের বেশ বড় বাজার গড়ে উঠেছে।
সূত্র জানায়, জীবনরক্ষাকারী প্রায় সকল ওষুধই দেশীয় কোম্পানিগুলো তৈরি করছে। দেশের খ্যাতনামা বিভিন্ন কোম্পানি কেবল দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদাই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ওষুধের বেশ বড় একটি বাজার গড়ে তুলেছে।
বাংলাদেশে বর্তমানে সর্বমোট ২৬৯টি অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ প্রস্তুতকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব কারখানায় বছরে ২৪ হাজার ব্র্যান্ডের বিভিন্ন ধরনের ওষুধ উৎপাদন হচ্ছে। বাংলাদেশে বর্তমানে বছরে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার ওষুধ ও ওষুধ তৈরির কাঁচামাল তৈরি হচ্ছে।
ওষুধ প্রশাসন সূত্র জানায়, কারখানাগুলোর মধ্যে বেশ কিছু কারখানা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হয়েছে। বিশেষ করে স্কয়ার, বেক্সিমকো, গ্লাক্সো, রেনেটা, ইনসেপটা, হেলথ কেয়ার, এসকেএফ, সেনডোজসহ বিভিন্ন কারখানা আন্তর্জাতিক মানের ওষুধ উৎপাদন করে।
এই ধরনের বিশ্বমানের ৪২টি ওষুধ কারখানায় উৎপাদিত কোটি কোটি টাকার ওষুধ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ছাড়াও জাপান, কোরিয়া, আফ্রিকা, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশসহ বিশ্বের একশটিরও বেশি দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে প্রায় সাতশ’ কোটি টাকার ওষুধ রপ্তানি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।
দেশীয় ওষুধের মান বাজার সম্প্রসারণে বেশ বড় ভূমিকা রাখছে বলে উল্লেখ করে খ্যাতনামা ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান স্কয়ার গ্রুপের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড আন্তর্জাতিক মানের ওষুধ উৎপাদন করে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্কয়ারের ওষুধের বেশ বড় একটি বাজার গড়ে উঠেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, কেবল স্কয়ারই নয়, দেশের আরো বিভিন্ন কোম্পানির মানসম্পন্ন ওষুধের বড় বাজার হচ্ছে ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। তিনি বলেন, সরকারি কিছু পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই খাত দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হয়ে উঠতে পারে।
খবর৭১/এস;