শরিফুল ইসলাম, দেলদুয়ার(টাঙ্গাইল) :
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে থানায় অভিযোগ দেয়ার পর শিশু নির্যাতনের ঘটনা জরিমানয় মিটালেন ইউপি চেয়ারম্যান। প্রায় ১ বছর আগে উপজেলার পাথরাইল ইউনিয়নের নরুন্দা গ্রামে শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার দেলদুয়ার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। এ খবর জানার পর পাথরাইল ইউপি চেয়ারম্যান মো.হানিফুজ্জামান লিটন মীমাংসার ভার নেন। বুধবার বিকালে তিনি উভয় পক্ষকে ডেকে অভিযুক্তকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও চড় থাপ্পর দিয়ে মীমাংসা দেন।
জানা যায়, বছর খানেক আগে উপজেলার পাথরাইল ইউনিয়নের নরুন্দা গ্রামের রিক্সা চালক আব্দুল হাদীর ৭ বছরের ছেলে লাবিবকে ওই গ্রামের প্রতিবেশি আব্দুর রহিম মিয়ার বখাটে ছেলে মেহেদী হাসান (২০) চকোলেট দেয়ার লোভ দেখিয়ে লিচু বাগানে নিয়ে একাধিক সময়ে মুখগহবরে যৌন নির্যাতন চালায়। ফলে কিছুদিন যেতে না যেতেই শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ নিয়ে ওই সময় বেশ কয়েকবার সালিশী বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই নির্যাতিত পরিবারটি সামাজিক ন্যায্য বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এর মধ্যে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে শিশুটিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো রোগ নির্ণয় করতে পারেননি চিকিৎসকরা । সর্বশেষ ঢাকার শিশু হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে পরীক্ষা নিরীক্ষায় মরণ ব্যাধি ক্যান্সার ধরা পড়ে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়ে ওই পরিবারটি। গত ১১ জানুয়ারি বখাটে মেহেদী হাসানকে অভিযুক্ত করে দেলদুয়ার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন শিশু লাবিবের পিতা আব্দুল হাদী। কিন্তু স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মীমাংসার উদ্যোগ নেয়ায় মামলা নেয়নি থানা পুলিশ। বুধবার বিকালে চেয়ারম্যান উভয় পক্ষকে নিয়ে সালিশী বৈঠকে বসেন। সেখানে অভিযুক্ত মেহেদী হাসানকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে ও চড় থাপ্পর দিয়ে সালিশের মীমাংসা দেয়া হয়।
মোবাইল ফোনে বিচার প্রার্থী আব্দুল হাদীর বক্তব্য চাইলে তার কলেজ পড়–য়া ছেলে রাকিবুল হাসান ফোন ধরে বলেন, সালিশী বৈঠকে বখাটে মেহেদী হাসানকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে ও চড় থাপ্পর দিয়ে মীমাংসা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন থানায় দেয়া অভিযোগ প্রত্যাহারের পর জরিমানার ২০ হাজার টাকা দেয়া হবে।
জানতে চাইলে পাথরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হানিফুজ্জামান লিটন বলেন, উভয় পক্ষকে নিয়ে সালিশী বৈঠক বসে অভিযুক্তকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও শারিরীক শাস্তি দিয়ে মীমাংসা করা হয়েছে।
দেলদুয়ার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম জানান, এরকম একটি অভিযোগ নিয়ে এক ব্যক্তি থানায় এসেছিল। কিন্তু এক বছর আগের ঘটনা বিধায় মামলা হয়নি। শুনেছি স্থানীয় চেয়ারম্যান উভয় পক্ষকে নিয়ে সালিশী বৈঠকের মাধ্যমে মীমাংসা করেছেন।
খবর ৭১/ ই: